ইউনিক ডেস্ক : নগরীর খুলনা সদর ও খালিশপুর থানা এলাকা হতে গত তিন মাসের ব্যবধানে এক বৃদ্ধা এবং এক কলেজ ছাত্রী নিখোঁজ হয়েছেন। কোথায়, কেমন আছেন তারা? তারা কি সুস্থ আছেন? এসব দুশ্চিন্তাময় প্রশ্ন ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যদের কুঁড়ে-কুঁড়ে খাচ্ছে।
গত ১৯ ডিসেম্বর দুপুরে সরকারি পলিটেকনিক কলেজের শিক্ষার্থী মারিয়া মাহাবুব (২২) ইউনিফর্ম পরে বাড়ি থেকে বের হন। তিনি খালিশপুর নেভী চেকপোষ্টের বিপরীতে রেল লাইন হালদার পাড়া এলাকার জনৈক মাহাবুব মল্লিকের মেয়ে। তিনি বিকেল সাড়ে পাঁচটায় কলেজের এক নং গেটের পাশর্^বর্তী একটি বাসায় মোহনা নামের একজনকে প্রাইভেট পড়াতে যান। সন্ধ্যা সাতটার দিকে বাড়ি ফেরার সময় রেললাইনের পাশে একদল বখাটে ছেলে তার গতি রোধ করে কথা বলে। ঘটনাটি সেখানকার কয়েকজন ব্যবসায়ী ওই ছাত্রীর পরিবারের সদস্যদের জানান। ২২ ডিসেম্বর একটি মোবাইল ফোন থেকে বাদিকে হুমকি দেয়া হয়। বিপ্লব নামের স্থানীয় এক চটপটি দোকানদার ওই ছাত্রীর অভিভাবকদের জানান- মারিয়াকে আল-আমিন মহল্লার মাইকেল মন্ডলের ভাড়াটিয়া বৃষ্টির সাথে কথা বলতে দেখা গেছে। বৃষ্টির সাথে যোগাযোগ করা হলে তার সহযোগী হৃদয় দুশ্চিন্তাগ্রস্ত স্বজনদের জীবন নাশের হুমকি দেয়। ভিকটিমের মা সুলতানা বেগম মুঠোফোনে এ তথ্য জানান।
অন্যদিকে, পুলিশ বলছে- রেললাইনের পাশে বখাটেদের গতিরোধ এবং জীবন নাশের হুমকি সম্পর্কে নিখোঁজ কলেজ ছাত্রীর পরিবারের সদস্যরা কিছুই জানান নি। ঘটনার দিন তিনি কলেজে গিয়েছিলেন কিনা? এ প্রশ্নেরও সুনিশ্চিত উত্তর মেলেনি। ঘটনার পর ভুক্তভোগীর পিতা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছিলেন। এস আই অমিত অভিযোগের অনুসন্ধানকালে কোনো কুল-কিনারা করতে পারেননি। এরপর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি নথিভুক্ত হয়।
সূত্র জানান, ঘটনার দিন শাকিল নামে এক যুবকের সাথে ভিকটিম কথা বলেছিলেন। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ জানতে পারে-মারিয়া কারো সাথে কথা বলার জন্য শাকিলের ফোনটি চেয়েছিলেন। কিন্তু তার কাছে ফোন না থাকায় ওই ছাত্রী সেখান থেকে বিদায় নিয়ে বৈকালী এলাকার দিকে চলে যান।
জিডির তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মোঃ আব্দুল হালিম বলেন, মারিয়া বাসায় যে মোবাইল ফোনটি রেখে গেছেন, সেটি ঘেটে তেমন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে, তিনি নিখোঁজ হওয়ার পর ২২ ডিসেম্বর একটি মোবাইল নাম্বার থেকে ফোন করে বিয়ের প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল বলে তিনি তথ্য পেয়েছেন। সেই নাম্বারটির মালিকের সন্ধান চলছে। বিয়ের প্রস্তাব করা ব্যক্তির সূত্র ধরে ভিকটিমকে উদ্ধারের সর্বাত্মক চেষ্টা করা হচ্ছে।
গত ২০২২ সালের ১৭ অক্টোবর সকালে ৬৫ বছর বয়সী বিলকিস বেগম পশ্চিম টুটপাড়া এলঅকায় এক নিকট আত্মীয়ের বাসায় নাস্তা করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এরমধ্যে একটি ফোন পেয়ে তিনি তড়ি-ঘড়ি করে সখান থেকে বেরিয়ে পড়েন। বিভিন্ন স্থানে খোঁজা-খুঁজির এক পর্যায়ে ২০ অক্টোবর ভিকটিমের ছেলে এসএম রেজা খুলনা সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।
পুলিশ ও নিখোঁজ নারীর স্বজনদের কাছ থেকে জানা গেছে, জিডি করার পাঁচ দিন পর খালিশপুরের পৌরসভা মাঠে গরুর গোবর কুড়াতে যেয়ে জনৈক নারী একটি ভ্যানিটি ব্যাগ পান। ওই ব্যাগে ভিকটিমের মোবাইল ফোনটি ছিল। ফোনে সর্বশেষ কলটি এসেছিল-জাহিদুল ইসলাম পিয়াস নামের একজনের মোবাইল থেকে। পুলিশ ওই দুই জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে গুরুত্বপূর্ণ কোনো ক্লু খুঁজে পাননি। পিয়াস জিজ্ঞাসাবাদে বলেছিল- বিলকিস বেগমের কাছে তার খালা টাকা পান। পাওনা টাকার তাগাদা দেবার জন্য তিনি ফোন করেছিলেন।
জিডির তদন্ত কর্মকর্তা এসআই সাইদুর রহমান বলেন, নিখোঁজ বিলকিস বেগমের বোনের বাড়ী ভারতে। তিনি কাউকে কিছু না বলে সেখানে চলে গেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।