খুলনায় দুই ফার্মেসীতে সরকারি ওষুধ : দু’জনের বিরুদ্ধে মামলা

প্রকাশঃ ২০১৯-০৩-২০ - ১৭:৪৭

কামরুল হোসেন মনি : নগরীতে দুই ফার্মেসীতে সরকারি বিক্রয় নিষিদ্ধ বিনামূল্যের ওষুধ উদ্ধারের ঘটনায় দুই ফার্মেসী মালিকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। খুমেক হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার আতাউর রহমান বাদী হয়ে খুলনা সদর থানায় এ মামলাটি দায়ের করেন। মামলার আসামিরা হচ্ছে পিতৃমাতৃ মেডিকেল হল মালিক ভজ হরি চন্দন গাইন ও হেরাজ মার্কেটে বেলী ড্রাগ হাউজ এর মালিক মাসুদুর রহমান ডালু।
খুমেক হাসপাতালের সূত্রে জানা যায়, গত ৪ মার্চ খুমেক হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ এটিএম মঞ্জুর মোর্শেদ অভিনব পন্থায় এক রোগীকে নিয়ে অভিযান চালিয়ে পিতৃমাতৃ মেডিকেল হলের মালিক ও কোয়াক ডাক্তার পরিচয়দানকারী চন্দন গাইনের কাছ থেকে বিভিন্ন প্রকারের সরকারি ওষুধ জব্দ করেন। পরবর্তীতে তার স্বীকারোক্তিতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়ে নগরীর হেরাজ মার্কেটে মেসার্স বেলী ড্রাগ হাউজ এ অভিযান চালিয়ে সরকারি বিক্রিয় নিষিদ্ধ ইনজেকশন ও ট্যাবলেট জব্দ করা হয়। অভিযানের সময় দোকানের মালিক মাসুদুর রহমান ডালু পলাতক ছিলেন। জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ জাকির হোসেন এ অভিযান পরিচালনা করেন।
জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ জাকির হোসেন বলেন, চন্দন গাইনের স্বীকারোক্তিতে নগরীর হেরাজ মার্কেটে বেলী ড্রাগ হাউজে অভিযানে আসি। কিন্তু মালিক মাসুদুর রহমান ডালু পলাতক থাকায় মার্কেটের কমিটিকে সাথে নিয়ে তার দোকান তল্লাশি চালানো হয়। এ সময় সরকারি বিক্রয় নিষিদ্ধ কিটিরোলাক ইনজেকশন ১২০টি ও কার্ডন (৫০) ২শ পিস ট্যাবলেট জব্দ করা হয়েছে। মালিক পলাতক থাকার কারণে দোকানটিকে সীলগালা করে রাখা হয়েছে।
চন্দন গাইন বলেন, ৬ মাস ধরে নগরীর হেরাজ মার্কেট বেলী ড্রাগ হাউজ থেকে সরকারি বিক্রি নিষিদ্ধ ওষুধ কিনে এনে তা তিনি রোগীদের কাছে বিক্রি করছেন। ওই দোকান থেকে গড়ে সরকারি এন্টিবায়েটিক ওষুধগুলো এক পিস ১০ টাকা দরে কিনে আনেন। রোগীদের কাছে তা ২০ টাকায় বিক্রি করছেন। তিনি সরকারি ওষুধগুলো প্রতি মাসে হেরাজ মার্কেট থেকে কিনে এনে ব্যবসা করছেন।
জানা গেছে, খুলনার বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালগুলোতে সরকারি বিক্রয় নিষিদ্ধ ওষুধগুলো চুরি করে হাসপাতালের কতিয়পয় কর্মচারী কর্মকর্তার মাধ্যমে তা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে হেরাজ মার্কেটে বিক্রি হচ্ছে। এর আগে আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতাল থেকে লাখ টাকার ওষুধসহ হাসপাতালের ফার্মাসিস্টসহ দুইজনকে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ। তারা ওই সময় স্বীকার করেছিলেন ওই সব সরকারি ওষুধ তারা নগরীর হেরাজ মার্কেটের কতিপয় দোকানে বিক্রি করে আসছেন। একাধিকবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নগরীর হেরাজ মার্কেটে অভিযান চালিয়ে সরকারি বিক্রি নিষিদ্ধ ওষুধ, ফিজিসিয়ান স্যাম্পল ওষুধ ও ভেজাল ওষুধ আটক করেন। এ সময় মূল হোতারা থাকে ধরাছোঁয়ার বাইরে। একের পর এক অভিযানের পরেও থেমে নেই হেরাজ মার্কেটে ভেজাল ও সরকারি বিক্রয় নিষিদ্ধ ওষুধ ক্রয়-বিক্রয় সিন্ডিকেট সদস্যরা।