খুলনা : খুলনায় দৈনিক আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ ও এক হাজার কোটি টাকার মানহানি মামলা দায়ের করা হয়েছে। সোমবার নগরীর ১৬ নম্বর ওয়ার্ড যুব মহিলা লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট নাজিয়া আহমেদ বর্ণা বাদী বিজ্ঞ নালিশী মামলার আমলী আদালত ‘ক’ অঞ্চল খুলনায় (দন্ডবিধির ১২৩(ক), ১২৪(ক), ৫০১, ৫০২, ৫০৫ ধারায়) এ মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় ঘটনার দিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত অজ্ঞাত ব্যক্তিদেরকেও আসামি করা হয়েছে। এতে খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির নবনির্বাচিত সভাপতি কাজী আবু শাহীনসহ ছয়জন আইনজীবীকে স্বাক্ষী হিসেবে রাখা হয়েছে। আদালতের বিজ্ঞ বিচারক মো. আমিরুল ইসলাম বাদি পক্ষের বক্তব্য শুনে মামলাটি আমলে নিয়ে খুলনা সদর থানার ওসিকে তদন্তপুর্বক আইনী ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, মামলার ১ নং আসামী মাহমুদুর রহমান গত ১ ডিসেম্বর ঢাকাস্থ জাতীয় প্রেসক্লাবে ঐ দিনের যে কোন সময় বাংলাদেশ ডেমোক্রেটিক কাউন্সিল (বিডিসি) কর্তৃক আয়োজিত ‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে গণ মাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে শত শত মানুষের সামনে এবং ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকদের সামনে বলেন- ‘বাংলাদেশ স্বাধীন রাষ্ট্র নয় শুধুমাত্র ভূ-খন্ড আর জনগণ থাকলেই স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হয় না, বাংলাদেশ এখন ভারতের কলোনী, শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও গণমাধ্যমকে হত্যা করেছে, কবর দিয়েছে, প্রেস ক্লাবে শেখ মুজিবের ম্যুরাল থাকতে পারে? পারে না? বর্তমান সরকার অবৈধ সরকার, দিল্লীর তাবেদার সরকার। একটি রাষ্ট্রের চারটি স্তম্ভ থাকে, ১) পার্লামেন্ট, ২) জুডিসিয়ারী, ৩) এক্সিকিউটিভ ৪) গণমাধ্যম। উক্ত চারটি স্তম্ভেরই কবর রচনা করেছে বর্তমান ফ্যাসিস্ট সরকার। বর্তমানে বাংলাদেশ নামের কোন রাষ্ট্রের অস্তিত্ব নাই। বাংলাদেশকে আর যাই বলা যাক রাষ্ট্র বলা যাবে না। জমি থাকতে পারে, জনগণ থাকতে পারে সার্বভৌমত্ব নাই।’
আসামী বলেন, শেখ মুজিবুর রহমানের নাতনী, শাসক শ্রেণির পরিবারের সদস্য টিউলিপ সিদ্দিকী যিনি লন্ডনে থাকে ইংল্যান্ডের পার্লামেন্টের সদস্য। তিনিও গণমাধ্যম ও গণতন্ত্রকে হত্যার মানসিকতা থেকে মুক্তি পাননি। কারণ তিনি শেখ মুজিবেরই জীন বহন করেন। সুতরাং ভিডিওগুলো দেখে নিশ্চিত হওয়া যায় আসামী উল্লেখিত মিথ্যা বক্তব্য প্রকাশ করে ভুল, মিথ্যা, ভিত্তিহীন, বানোয়াট, উদ্দেশ্যে প্রনোদিত, উস্কানী ও ষড়যন্ত্রমূলক এবং স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ নিয়ে এবং বাংলাদেশের অস্তিত্ব নিয়ে কটুক্তি ও রাষ্ট্রদ্রোহীতার অপরাধের প্রমাণ পাওয়া যায়।
আসামি সকল নীতি নৈতিকতা ও শ্রদ্ধাবোধ ভুলে গিয়ে জাতির জনক বাংলাদেশের স্থাপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তার কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা বর্তমান সরকারও বঙ্গবন্ধুর নাতনী টিউলিপ সিদ্দিকীকে নিয়ে কটুক্তি করে মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করে এবং স্বাধীন বাংলাদেশের অস্তিত্বে অবিশ্বাস করে ও আঘাত করে সমগ্র বাঙ্গালী জাতির বিরুদ্ধে, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে চরম অবজ্ঞা, রাষ্ট্রদ্রোহ মূলক ঔদ্ধত্য প্রদর্শন করে মানসম্মানে আঘাত করে স্বাধীন বার্সভৌম রাষ্ট্রকে ১নং আসামি অস্থিতিশীল করেছেন এবং আসামি তার মাসনে উপস্থিত সাংবাদিক ও তার অনুসারীদের সরকার ও রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রামের হুমকি ও সংগ্রামে অংশ গ্রহণের জন্য উস্কানী প্রদান করেছেন। যা রাষ্ট্রদ্রোহিতার সামিল। এ ধরনের কুরুচিপূর্ন বক্তব্য উপস্থাপনের ফলে বঙ্গবন্ধুর পরিবার তথা প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং বাদীর রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সুনাম ও সম্মানহানি হয়েছে। যাতে বাদির মানহানি হয়েছে। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ ও আওয়ামী লীগ এর সাথে বাদীর মানসম্মান জড়িত। যাতে বাদির অনির্নীয় মানহানি হয়েছে। প্রাথমিকভাবে আর্থিক মান দন্ডে বাদির আনুমানিক এক হাজার কোটি টাকার সম্মান ক্ষুন্ন হয়েছে। স্বাক্ষীগণ ঘটনা সম্পর্কে সম্পূর্ণ অবগত আছে। বিস্তারিত সাক্ষী প্রমাণ দিয়া বাদি অত্র মোকদ্দমা প্রদান করতে সক্ষম হবে বলে মামলার এজহারে উল্লেখ করা হয়েছে।
যা দেশের সকল ইলেক্ট্রনিক্স ও প্রিন্ট মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়েছে। তাছাড়া স্যোসাল মিডিয়ায় তার বক্তব্য দেখে ও শুনে বাদি এডভোকেট নাজিয়া আহমেদ (বর্না) এ মামলা দায়ের করেন। মামলার বাদি পক্ষে ফাইলিং আইনজীবী খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও মহানগর যুবলীগের আহবায়ক এডভোকেট সরদার আনিছুর রহমান পপলু।