খুলনা : প্রায় ১৯ দিন নিখোঁজ থাকার পর খুলনা জেলা বিএনপির সহ-ধর্মবিষয়ক সম্পাদক মো. নজরুল ইসলাম মোড়লকে (৪৫) কক্সবাজারের রামু উপজেলা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার ভোরের দিকে উপজেলার খুনিয়াপালং ইউনিয়নের তুলাবাগান এলাকা থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আফরুজুল হক টুটুল বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, গত ১৮ মার্চ খুলনা জেলা বিএনপির ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম নিখোঁজ হয়েছেন দাবি করে তার স্ত্রী তানজিলা বেগম সেখানকার থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। সে সূত্র ধরে মোবাইল ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে রামুর তুলাবাগান এলাকার সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালক আনোয়ার হোসেনের বাড়ি থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নজরুল স্বেচ্ছায় আত্মগোপনে থাকার কথা স্বীকার করেছেন। কিন্তু কী কারণে তিনি আত্মগোপন করেন, সে ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে খুলনায় হস্তান্তর করা হবে বলেও জানান আফরুজুল হক টুটুল।
রামু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিয়াকত আলী বলেন, নজরুলকে প্রথমে রামু থানায় হাজির করা হয়। স্বেচ্ছায় নিখোঁজ থাকা এ বিএনপি নেতাকে বেলা ১১টার দিকে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে যে ব্যক্তির বাড়ি থেকে নজরুলকে উদ্ধার করা হয়েছে, তার সঙ্গে বিএনপির এ নেতার কী সম্পর্ক বা তার ব্যাপারে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, এসব বিষয়ে কিছুই বলতে চাননি পুলিশ কর্মকর্তারা। এদিকে, রামুতে উদ্ধারের পর নজরুলকে সেখান থেকে আনতে রওয়ানা হয়েছে খুলনার ডুমুরিয়া থানা পুলিশের একটি দল।
ডুমুরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিল হোসেন জানান, নজরুল ইসলাম কক্সবাজারের রামুতে রয়েছেন এমন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশের একটি দল তাকে আনার জন্য রওনা দিয়েছে।
নজরুল ইসলামের ছেলে ওহেদুজ্জামান বাবলা বলেন, বাবা জীবিত রয়েছেন এবং তিনি রামুতে অবস্থান করছেন বলে ওসি আমাদের জানিয়েছেন। আমরা এখন তার ফিরে আসার অপেক্ষায় আছি।
গত ১৭ মার্চ বিকেলে নজরুল ডুমুরিয়ার মাগুরঘোনা ইউনিয়নের বেতাগ্রামের বাড়ি থেকে আঠারো মাইল বাজারে যান। সেখান থেকে একটি মোটরসাইকেল ভাড়া করে তিনি যশোরের কেশবপুরের মঙ্গলকোট এলাকায় ডাক্তার দেখাতে যান। সন্ধ্যায় স্থানীয়রা ডুমুরিয়ার আটালিয়া এলাকায় একটি ভাড়া করা মোটরসাইকেল, চাবি ও টুপি পড়ে থাকতে দেখেন। মোটরসাইকেলের মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা যায়, ওই মোটরসাইকেলটি নজরুল ভাড়া নিয়েছিলেন। নজরুলের সন্ধানে পরিবারের পক্ষ থেকে তার মোবাইল ফোনে কল দিলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়। সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজ করেও নজরুলের সন্ধান না পাওয়ায় তার স্ত্রী তানজিলা বেগম ডুমুিরয়া থানায় ওই জিডি করেন।
পরিবার ও বিএনপির নেতাকর্মীদের অভিযোগ ছিলো, তাকে গুম করা হয়েছে, যার সঙ্গে জড়িত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তবে এমন অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি করে পুলিশ নিখোঁজের সন্ধানে অভিযান চালায়।