খুলনায় ৭ই মার্চের ভাষণের স্বীকৃতি স্মরণে আনন্দ শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত

প্রকাশঃ ২০১৭-১১-২৫ - ১৩:৩০

তথ্যবিবরণী : জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এঁর ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ ইউনেস্কোর ‘মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড ইন্টারন্যাশনাল রেজিস্টার’ এ অন্তর্ভুক্তি উপলক্ষে আজ ২৫ নভেম্বর সারাদেশের ন্যায় বিভাগীয় শহর খুলনাতে বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার সাথে নগরীর শিববাড়ী মোড় থেকে শহীদ হাদিস পার্ক পর্যন্ত ‘আনন্দ শোভাযাত্রা’ বের করা হয়। অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে ছিল আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, রচনা ও কুইজ প্রতিযোগিতা এবং সন্ধ্যায় শহীদ হাদিস পার্ক, শিববাড়ী মোড়, গল্লামারী মোড় ও জাতিসংঘ শিশুপার্ক-এ বড় পর্দায় ‘ ওরা ১১ জন’ চলচ্চিত্র প্রদর্শন।

খুলনা জেলা প্রশাসনের আয়োজনে এ আনন্দ শোভাযাত্রায় সংসদ সদস্য তালুকদার আবদুল খালেক ও মুহাম্মদ মিজানুর রহমান, খুলনা বিভাগীয় প্রশাসন, ডিআইজি অফিস, খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ, জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারী, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মী, খুলনার অন্যান্য বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী, জনপ্রতিনিধি, মুক্তিযোদ্ধা, সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব, বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারী, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার বিপুল সংখ্যক মানুষ অংশগ্রহণ করে। শোভাযাত্রার সম্মুখভাগে ছিল বিভিন্ন ব্যান্ড পার্টির সুসজ্জিত বাদক দল। এ সময় তাদের হাতে ছিল স্ব-স্ব দপ্তর এবং প্রতিষ্ঠানের ব্যানার, ফেস্টুন ও প্লাকার্ড।

শোভাযাত্রা শেষে সকাল ১১টায় শহীদ হাদিস পার্কে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সংসদ সদস্য তালুকদার আবদুল খালেক। খুলনা বিভাগীয় কমিশনার লোকমান হোসেন মিয়া’র সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্য মুহাম্মদ মিজানুর রহমান, খুলনা রেঞ্চ ডিআইজি দিদার আহম্মেদ, পুলিশ কমিশনার মোঃ হুমায়ুন কবীর পিপিএম, কাস্টমস কমিশনার মারগুব আহমেদ, র‌্যাব-৬ এর সিইও খন্দকার রফিকুল ইসলাম, পুলিশ সুপার মোঃ নিজামুল হক মোল্লা , বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ খুলনা মহানগর ইউনিট কমান্ডার অধ্যাপক আলমগীর কবির। স্বাগত বক্তৃতা করেন খুলনা জেলা প্রশাসক মোঃ আমিন উল আহসান।

প্রধান অতিথির বক্তৃতায় সংসদ সদস্য তালুকদার আবদুল খালেক বলেন, বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ ছিল নিপীড়িত মানুষের ন্যায্য অধিকার আদায়ের দলিল। তাঁর ১৮ মিনিটের অলিখিত এই ভাষণ যত মানুষকে উজ্জীবিত করে একত্রিত করেছিল তেমনটি পৃথিবীর ইতিহাসে আর ঘটেনি। বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণেই ছিল স্বাধীনতার স্পষ্ট ডাক। আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি প্রমান করে এই ভাষণ যুগ যুগ ধরে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মকে উদ্বুদ্ধ করবে। এই ভাষণকে পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে নতুন প্রজন্মের কাছে ছড়িয়ে দেয়ার জন্য তিনি আহবান জানান।

মুহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, বঙ্গবন্ধু যদি সেদিন এই ভাষণ না দিতেন তাহলে বাংলাদেশের সৃষ্টি হতো না। দীর্ঘদিন যাবৎ এই ভাষণ বাংলাদেশে প্রচার করতে দেয়া হয়নি। কিন্তÍ আজকের এই আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির ফলে সবাই এখন বুঝতে পেরেছেন ৭ মার্চের ভাষণের তাৎপর্য কতটা সুদূর প্রসারী।

বিভাগীয় কমিশনার বলেন, বঙ্গবন্ধু ছিলেন বাঙালীর রাখাল রাজা। তাঁর জন্ম না হলে বাংলাদেশের জন্ম হতো না। তাঁর ভাষণের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আমাদের জন্য এক অসামান্য অর্জন। এ অর্জনকে নতুন প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে।

পরে এ উপলক্ষ্যে আয়োজিত বিভিন্ন প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। এরপরে একই স্থানে পরিবেশিত হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।