বি এম রাকিব হাসান, খুলনা : খুলনা ওয়াসায় ২০টি নলকূপ স্থাপনের জন্য সোয়া ৫ কোটি টাকার নিন্মমানের পাইপ ও ফিল্টার ক্রয়ের অভিযোগ উঠেছে। সরবরাহকৃত ফিল্টার পাইপ এসএস হওয়া সত্ত্বেও মুখের দিকে মরিচা ধরেছে। যা সূতি কাপড় দিয়ে ঘষে উঠিয়ে ফেলা হচ্ছে। এমনকি ওই পাইপের বডিতে উৎপাদনকারী ভারতীয় জনশন কোম্পানির খোদাই করা কোন লোগোও দেখা যায়নি। শুধুমাত্র প্রিন্ট করা একটি কাগজ পাইপের মুখে সাঁটা রয়েছে। নির্দিষ্ট মানের মালামাল না দেয়ায় ওয়াসার বাতিল করা টেন্ডার সেন্ট্রাল প্রকিউরমেন্ট টেকনিক্যাল ইউনিট (সিপিটিইউ)-র আদেশে সরবরাহ নেয়ার অভিযোগ উঠেছে পকল্প পরিচালকের বিরুদ্ধে। আপিল করে পুনঃটেন্ডারের সুযোগ থাকলেও রহস্যজনক কারণে সেটি করা হয়নি। খুলনা ওয়াসার দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, নগরবাসীর পানির চাহিদা মেটাতে ওয়াসা অন্তর্বরতীকালীন এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে উৎপাদক নলকূপ বসানোর কাজ চলছে। ইতোমধ্যে ৩টির কাজ শেষ হয়েছে। এ সব নলকূপের জন্য ৫ কোটি ১১ লাখ টাকার মালামাল ক্রয় করা হয়েছে। সরবরাহ করেছে যশোরের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কারিমা কনসাইনমেন্ট। তারা ৬ ইঞ্চি জিআই পাইপ ৪ হাজার ২শ’ মিটার, ১৬ ইঞ্চি হাউজিং (এমএস) পাইপ ১ হাজার ২২০ মিটার ও ৬ ইঞ্চি এসএস ফিল্টার ৬শ’ মিটার সরবরাহ করে। যার মূল্য জিআই পাইপ প্রতি মিটার ৫ হাজার ৯শ’ টাকা হিসেবে ২ কোটি ৪৭ লাখ টাকা, হাউজিং পাইপ প্রতি ইঞ্চি ১২ হাজার ৭শ’ ২৫ টাকা হিসেবে ১ কোটি ৫৫ লাখ টাকা ও ফিল্টার প্রতি মিটার সাড়ে ১১ হাজার টাকা হিসেবে ৬৯ লাখ টাকা বিল গ্রহণ করেছে। একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে, টেন্ডারে কারিমা কনসাইনমেন্ট লোয়েস্ট হলেও তারা যে নমুনা সরবরাহ করে তা টেন্ডারের নির্দিষ্ট গুণগত মানের না হওয়ায় ওয়াসা কর্তৃপক্ষ বাতিল করে পুনঃটেন্ডারের উদ্যোগ নেয়। এ সময় কারিমা কনসাইনমেন্ট সেন্ট্রাল প্রকিউরমেন্ট টেকনিক্যাল ইউনিট-সিপিটিইউ’র কাছে টেন্ডার বহাল রাখার আবেদন করে। সেখানে তারা নির্দিষ্ট গুণগত মানের মাল সরবরাহ করবে মর্মে মুচলেকা দেয়। এ প্রেক্ষিতে সিপিটিইউ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেওয়া যায় মর্মে ওয়াসাকে আদেশ দেয়। তবে এ বিষয়ে আপিল করার সুযোগ আছে বলে ওয়াসাকে জানায় সিপিটিইউ। কিন্তু আপিল না করে সরাসরি কার্যাদেশ দেয় ওয়াসা কর্তৃপক্ষ। কার্যাদেশ পাওয়ার পর ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান যে হাউজিং পাইপ সরবরাহ করেছে তা এপিআই (মার্কিন মানের)- স্ট্যান্ডার্ড হওয়ার কথা; কিন্তু উৎপাদনকারী ভারতীয় উৎকর্ষ কোম্পানি ওই মানের পাইপ তৈরিই করে না বলে সূত্র জানিয়েছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সরবরাহ করা পাইপের নমুনায় সমস্যা ছিল বলেই টেন্ডার বাতিল করা হয় বলে জানান, ওয়াসার উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) প্রকৌশলী কামাল উদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, আপিল করার যে সুযোগ ছিল তা কেন গ্রহণ করা হয়নি তা তার জানা নেই।