খুলনা-কলকাতা রুটে বন্ধন এক্সপ্রেসের আনুষ্ঠানিক যাত্রা আজ 

প্রকাশঃ ২০১৭-১১-০৯ - ০০:৫৪

বেনাপোলে হবে ইমিগ্রেশন কাস্টমসের কাজ : ১৬ নভেম্বর থেকে চলাচল শুরু

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের আড়াই কোটি মানুষের ৫২ বছরের অপেক্ষার অবসান

খুলনা : খুলনা-কলকাতা রুটে বহুপ্রতীক্ষিত ট্রেন বন্ধন এক্সপ্রেস চলাচল শুরু হচ্ছে ১৬ নভেম্বর। অবসান হচ্ছে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের আড়াই কোটি মানুষের ৫২ বছরের অপেক্ষার প্রহর। শুরুতে ইমিগ্রেশন খুলনা প্রান্তিক ও কলকাতায় সারার কথা থাকলেও সেটা হচ্ছে না সহসাই। বেনাপোলেই হবে ইমিগ্রেশন-কাস্টমসের কাজ। বন্ধন না হলেও ঢাকা-কলকাতা মৈত্রী এক্সপ্রেসের ইমিগ্রেশন-কাস্টমস প্রান্তিক স্টেশন ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট এবং কলকাতা স্টেশনে (চিৎপুর) সারার বিষয়টি মোটামুটি নিশ্চিত। বাংলাদেশ রেলওয়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দু’জন কর্মকর্তা বুধবার দুপুরে এ তথ্য জানান। তারা বলেন, আমরা সব কিছু গুছিয়ে উঠতে পারিনি। তবে শুরুতেই বন্ধন থাকছে পুরো শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। সাড়ে ৫ ঘণ্টায় দুই বাংলার মানুষ নিজ নিজ গন্তব্যে পৌঁছাবেন। বগি স্বল্পতার কারণে দ্বিতীয় মৈত্রী রেল ‘বন্ধন’ এক্সপ্রেসে থাকছে পুরো ভারতীয় রেল কোচ। এরই মধ্যে ‘বন্ধন’ এক্সপ্রেসের ভাড়া ও সময় চূড়ান্ত করা হয়েছে। বন্ধন এক্সপ্রেসের পরীক্ষামূলক কোচটি কলকাতা থেকে আসবে আজ বৃহস্পতিবার সকালে। ঢাকা থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও দিলি¬ থেকে  ভারতের  প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এদিন ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কলকাতা থেকে আসা এর উদ্বোধন করবেন। আজ ‘বন্ধন’ এক্সপ্রেসে আসবেন ভারতীয় রেলের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তারা। খুলনায় পৌঁছে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে সন্ধ্যায় তারা ফিরবেন কলকাতায়। একই রেলে বাংলাদেশ থেকেও কয়েকজন কর্মকর্তা কলকাতা যাবেন। খুলনা-কলকাতা ১৭৫ কিলোমিটার এ রেলপথের যাত্রী ভাড়া নির্ধারণ করা  হয়েছে কেবিন ১ হাজার ৩১১ টাকা। সঙ্গে ভ্যাট ১৮৯ টাকা,  ট্রাভেল ট্যাক্স ৫০০ টাকাসহ মোট ভাড়ার ২ হাজার টাকা। এসি চেয়ারকোচের ভাড়া ধরা হয়েছে ৮৭৪ টাকা। সঙ্গে যোগ হবে ভ্যাট ১২৬টাকা ও ট্রাভেল ট্যাক্স ৫০০ টাকা। দু’দেশের স্থলপথের যাত্রীদের কাছ থেকে বাংলাদেশ ৫০০ টাকা ট্রাভেল নিলেও ভারত কোনো ট্রাভেল ট্যাক্স আরোপ করেনি। ভারতীয় নাগরিকদেরও বাংলাদেশ থেকে ফেরার পথে ট্রাভেল ট্যাক্স দিতে হয়। ১৬ নভেম্বর বাংলাদেশ সময় সকাল সাতটা ৪০ মিনিটে (ভারতীয় সময় সকাল সাতটা ১০ মিনিট) কলকাতা  (চিৎপুর) উদ্দেশে যাত্রা করবে পশ্চিমবঙ্গের পেট্রাপোলে পৌঁছাবে স্থানীয় সময় সকাল ৮টা ৫৫ মিনিটে। ভারতীয় রেলের বৈদ্যুতিক ইঞ্জিন বদল করে বাংলাদেশের ডিজেলচালিত রেল ইঞ্জিন ১০টি কোচ নিয়ে বেনাপোলে পৌঁছাবে সকাল ৯টা ২০ মিনিটে। বেনাপোলে ইমিগ্রেশন-কাস্টমস সেরে সকাল ১০টা ২০ মিনিটে ছেড়ে খুলনায় গিয়ে পৌঁছাবে দুপুর ১২টায়। এদিনই খুলনা থেকে যাত্রী নিয়ে বন্ধন কলকাতার উদ্দেশ্যে যাত্রা করবে দুপুর ১টা ২০ মিনিটে। বেনাপোল পৌঁছাবে দুপুর ২টা ৫০ মিনিটে। ইমিগ্রেশন-কাস্টমস সেরে পেট্রাপোলে পৌঁছাবে স্থানীয় সময় ৪টা ২০ মিনিটে। এরপর কলকাতা স্টেশনে পৌঁছাবে ৬টা ১০ মিনিটে। দু’দেশের মানুষের সম্পর্ক উন্নয়নের লক্ষ্যে ২০০৮ সালের পয়লা বৈশাখ (১৪ এপ্রিল) থেকে ঢাকা-কলকাতা রুটে প্রথম মৈত্রী এক্সপ্রেস চালু করা হয়। যা এখন আশাতীত লাভের মুখ দেখাচ্ছে উভয় দেশের রেলকে। ঢাকা কলকাতা মৈত্রী এক্সপ্রেস থেকেও খুলনা-কলকাতা বন্ধন এক্সপ্রেস-বেশি জনপ্রিয় হয়ে উঠবে বলে আশা। কেননা দু’দেশের মানুষের মধ্যে সবচেয়ে বেশি চলাচল করেন এই বেনাপোল-হরিদাসপুর সীমান্ত দিয়ে। প্রায় প্রতিদিন ১০ হাজারেরও বেশি লোক বেনাপোল-হরিদাসপুর হয়ে ভারতে যাচ্ছেন। গত ৭ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদী এই ট্রেনের পরীক্ষামূলক উদ্বোধন করেন। দ্বিতীয় মৈত্রী এক্সপ্রেস নামে এই ট্রেন সার্ভিস চালুর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে রেল যোগাযোগ বৃদ্ধিসহ আন্তর্জাতিক ট্রান্স-এশিয়ান রেলরুটে অন্তর্ভুক্ত হবে বাংলাদেশ। এতে রেলপথে পণ্য আমদানি-রপ্তানির সুবিধাসহ যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বৃদ্ধি পাবে।