খুলনা কৃষি অঞ্চলে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৮৭৬ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ বেশী

প্রকাশঃ ২০২৩-০৩-৩০ - ১২:৫৮

জিকেবিএসপি’র  উদ্ভাবনী প্রযুক্তি ব্যবহার, উৎপাদন ৩২৯৭৮ মেট্রিকটন

ইউনিক ডেস্ক : খুলনা কৃষি অঞ্চলে সরিষার বাম্পার ফলনে কৃষকের স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। সরকারে দেয়া প্রণোদনা কাজে লাগিয়ে কৃষক অগ্রহী হয়ে আবাদ করেছেন। সরিষার বীজে ৪০-৪৪ শতাংশ তেল থাকে। আগামী ৩ বছরের মধ্যে তেল জাতীয় শস্য উৎপাদন ৪০ শতাংশ বৃদ্দির লক্ষ্যে সরকার কাজ করছেন। এই অঞ্চলে জমি আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৪৩৭০ হেক্টর। আবাদ করা হয়েছে ২৬২৪৬ হেক্টর। বেশী আবাদ করা হয়েছে ১৮৭৬ হেক্টর বেশী। ইতো মধ্যে শতভাগ কর্তন শেষ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলন বাম্পার হয়েছে। সরকার চাষিদের প্রণোদনা দেয়ায় পতিত জমিতেও আবাদ করা হয়েছে। মৃত্তিকা সম্পাদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট’র জিকেবিএসপি প্রকল্প থেকে সাতক্ষীরার দেবহাটা, খুলনার ডুমুরিয়ার চুকনগর ও গোপালগঞ্জের মোকসেদপুর এলাকায় একবিঘা করে ২০টি প্লটে ২০ বিঘা জমিতে সরিষার চাষ করা হয়েছে। এই প্রকল্প থেকে কৃষকদের বিনা মূল্যে বীজ ও সার দেয়া হয়েছে।

সূত্র জানিয়েছে, ২০২২-২৩ বছরে খুলনা জেলায় আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৯৭০ হেক্টর। আবাদ করা হয়েছে ১৬৬৫ হেক্টর জমি। উৎপাদন হয়েছে ১৮৯০ মেট্রিকটন। প্রতি হেক্টরে উৎপাদন হয়েছে ১.১৪ মেট্রিকটন। বাগেরহাট জেলায় আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১২০০ হেক্টর।  আবাদ করা হয়েছে ১৩৩৬ হেক্টর জমি। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা হয়েছে ১৫৫০ মেট্রিকটন। প্রতি হেক্টরে উৎপাদন হয়েছে ১.২৪ মেট্রিকটন। সাতক্ষীরা জেলায় আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৩০০০ হেক্টর। আবাদ করা হয়েছে ১৪০৩০ হেক্টর জমি। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা হয়েছে ১৮০৪০ মেট্রিকটন। প্রতি হেক্টরে উৎপাদন হয়েছে ১.৩০ মেট্রিকটন এবং নড়াইল জেলায় আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৯২০০ হেক্টর। আবাদ করা হয়েছে ৯২১৫ হেক্টর জমি। উৎপাদন হয়েছে ১১৪৯৪ মেট্রিকটন। প্রতি হেক্টরে উৎপাদন হয়েছে ১.২৫ মেট্রিকটন।

গত বছর খুলনা কৃষি অঞ্চলের ৪ জেলার মধ্যে খুলনা জেলায় আবাদকরা হয়েছিল ৮০৫ হেক্টর। উৎপাদন হয়েছে ৯৬০ মেট্রিকটন। বাগেরহাট জেলায় আবাদ করা হয়েছে  ১০৫৭ হেক্টর। উৎপাদন হয়েছিল ১২৬৯ ১৫৬০ মেট্রিকটন। সাতক্ষীরা জেলায় আবাদ করা হয়েছিল ১২১০৫ হেক্টর। উৎপাদন হয়েছে  ১৬,১০০ মেট্রিকটন এবং নড়াইল জেলায় আবাদ করা হয়েছে ৭০৮০ হেক্টর জমি। উৎপাদন হয়েছে ৮১৪২ মেট্রিকটন। কৃষকদের প্রণোদনা হিসেবে সার ও সরিষার বীজ দেয়া হয়েছে।

এবছর অধিক ফলনশীল বারি-১৪, বারি-৯, বিনা ৯-১০,সরিষা- ১৫, সোনালী সরিষা (এসএস) স্থানীয় টরি-৭ জাতের সরিষা আবাদ করেছেন কৃষক। শীতের রিক্ততায় হলুদ রং লেগেছে। প্রাণের সস্পন্দন নিয়ে আসে সরিষার ফুল। অনেকে হলুদের রাজ্যে হারিয়ে যাচ্ছে প্রকৃতির মাঝে। প্রকৃতি সেজেছে নানান রংয়ে। ফুলের সৌন্দর্যে মুগ্ধ করছে সরিষার ক্ষেত। অনেক ক্ষেতে মধু সংগ্রহ করার জন্য বাক্স দেয়া হয়েছে। এতে দু’দিক থেকে অর্থনীতি ভাবে লাভবান হওয়া যায়।

গোপালগঞ্জ-খুলনা- বাগেরহাট -সাতক্ষীরা-পিরোজপুর জিকেবিএসপি প্রকল্প পরিচালক অমরেন্দ্রনাথ বিশ^াস বলেন, সরিষা চাষ করে কৃষক লাভবান হচ্ছেন। ভালো দামে বিক্রি করা হয়েছে। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে বাইরেও বিক্রি করছেন। কৃষক অর্থনৈতিক ভাবে ঘুরে দাড়িয়েছেন। প্রধান মন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী কোন জমি পতিত রাখা যাবেনা। সে মোতাবেক কৃষকদের ফসল ফলাতে উৎসাহ প্রদান করা হয়েছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের খুলনা অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক মোহন কুমার ঘোষ বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলন ভালো হয়েছে। লক্ষ্যমাত্র পূরণ হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর আবাদ ও উৎপাদন বেশী হয়েছে। কৃষকদের প্রণোদনা দেয়া হয়েছে। কৃষি কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ে তদারকি করছেন। সুষম সার ব্যবহার করা। মাঠ পর্যায়ে সঠিক তদারকি এবং পরামর্শ দেয়া হয়েছে। কোন জমি পতিত না রাখার জন্য কৃষকদরে অনুরোধ জানিয়েছেন।