আ’লীগ ও বিএনপি’র মেয়র প্রার্থী নিয়ে ধোঁয়াশা
খুলনা : জাতীয় নির্বাচনের আগে সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জয় চায় আওয়ামী লীগ। সেজন্য একটু আগেভাগেই প্রস্তুতি শুরু করেছেন ক্ষমতাসীনরা। অপরদিকে দলীয় প্রধানকে কারাগারে রেখে এখনই নির্বাচনে যেতে চাইছে না বিএনপি। প্রেক্ষাপট বুঝে সিটি নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে এখন পর্যন্ত বিএনপির সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়নি।
আগামী ৩১ মার্চ খুলনা সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করা হবে। ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন। সে হিসেবে আগামী রমজানের আগে মে প্রথম সপ্তাহের পর অনুষ্ঠিত হতে পারে কেসিসি নির্বাচন। নির্বাচনী ঘিরে খুলনা সিটিতে জনগনের মধ্যে আলোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে এখন শুধুই মেয়র প্রার্থী নিয়ে। কারা হচ্ছেন বড় দুই দলের মেয়র প্রার্থী তা নিয়ে আগ্রহের কমতি নেই ভোটারদের মাঝে। যদিও প্রধান দু’টি রাজনৈতিক দল আ’লীগ ও বিএনপি কেসিসি’র প্রার্থী চূড়ান্ত করতে পারেনি। তবে একক প্রার্থী ঘোষণা করেছে জাতীয় পার্টি ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।
খুলনা সিটিতে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী এখনও চূড়ান্ত হয়নি। সাবেক মেয়র, বাগেরহাট-৩ (রামপাল-মংলা) আসনের সংসদ সদস্য তালুকদার আব্দুল খালেক কিংবা প্রধানমন্ত্রীর চাচাতো ভাই শেখ সালাউদ্দিন জুয়েল এ সিটির সম্ভাব্য প্রার্থী। নৌকা প্রতীক নিয়ে মেয়র নির্বাচনের আশায় প্রচার শুরু করেছেন খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি, খুলনা চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি ও খুলনার প্রথম মেয়র কাজী আমিনুল হক, খুলনা সদর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. সাইফুল ইসলাম এবং মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক ও জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট সরদার আনিসুর রহমান পপলু।
দলীয় সূত্র জানায়, সংসদ সদস্য তালুকদার আব্দুল খালেক এখন পর্যন্ত সিটি নির্বাচন করতে আগ্রহী নন। সেক্ষেত্রে নতুন করে আলোচনায় এসেছে পাট ব্যবসায়ী শেখ সৈয়দ আলী’র নাম। তবে প্রধানমন্ত্রীর চাচাতো ভাই শেখ সালাউদ্দিন জুয়েল ও কাজি আমিনুল হকও রয়েছেন দলের ভাবনায়। শেষ পর্যন্ত খুলনা সিটিতে কে হচ্ছেন আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী তা নিয়ে ধোঁয়াশা যেন কাটছে না। তবে দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার সাথে আগামী সপ্তাহে বৈঠকের মাধ্যমে প্রার্থী চূড়ান্ত হতে পারে বলে একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।
এদিকে ২০১৩ সালের ১৫ জুন সর্বশেষ কেসিসি নির্বাচনে নগর বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান মনি এক লাখ ৮০ হাজার ৯৩ ভোট পেয়ে মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আ’লীগ সমর্থিত তালুকদার আব্দুল খালেক এমপি পেয়েছিলেন এক লাখ ১৯ হাজার ৪২২ ভোট। বিএনপি থেকে এবারও তার মনোনয়ন পাওয়ার বিষয়ে ধারণা পাওয়া গেছে। যদি এবারের নির্বাচনে মেয়র পদে লড়তে চান জেলা বিএনপি সভাপতি এ্যাড. শফিকুল ইসলাম মনা। সেক্ষেত্রে দলের মধ্যে ঠান্ডা লড়াইয়ে উত্তীর্ণ হয়েই কেসিসিতে দলীয় মনোনয়ন পেতে হবে বর্তমান সিটি মেয়রকে। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মাওলানা মুজাম্মিল হককে এবং জাতীয় পার্টি এস এম মুশফিকুর রহমানকে মেয়র প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেছে অনেক আগেই।
এ বিষয়ে নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মিজানুর রহমান মিজান জানান, খুলনা সিটি কর্পোরেশনের আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী নিয়ে এখনও স্পষ্ট কোন ঘোষণা আসেনি। তবে আগামী সপ্তাহেই প্রার্থী চূড়ান্ত হতে পারে। দল যাকে মনোনয়ন দেবে তার পক্ষেই খুলনার আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে।
বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও নগর শাখার সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, আমাদের ভাবনায় এখন শুধুই চেয়ারপারসনকে কারামুক্ত করা। সরকার বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে প্রহসণের নির্বাচনের চেষ্টা করছে। আমরা এখন পর্যন্ত নির্বাচনের অংশগ্রহণের বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত নেইনি।