খুলনা : খুলনা সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনের মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিনে বিভিন্ন দলের মেয়র ও কাউন্সিলর, সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থীরা খুলনা আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে তাদের মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন পর্যন্ত এ সিটিতে নির্বাচনে লড়তে ৫ মেয়র প্রার্থী ও ২৩৭জন কাউন্সিলর প্রার্থী মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. ইউনুচ আলী।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত প্রার্থীরা তাদের নেতা-কর্মী সমর্থকদের নিয়ে নগরীর নূরনগরে অবস্থিত নির্বাচন কমিশনের কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেন। এসময় নির্বাচন অফিসকে ঘিরে উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়। দলের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের পদচারণায় মুখর ছিল গোটা বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় এলাকা। দুপুরের পর আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেক ও বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু পৃথকভাবে মনোনয়নপত্র জমা দেন। এসময়ে তারা দুজনই জয়ের ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
দুপুর ২টা ২০ মিনিটে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী, খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাবেক মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে সময় মেয়র পদে তাঁর মনোনয়নপত্র জমা দেন। এ সময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা এস এম কামাল হোসেন, নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি কাজি আমিনুল হক, শেখ হায়দার আলী, মল্লিক আবিদ হোসেন কবির, প্রধানমন্ত্রীর চাচাতো ভাই শেখ সোহেল, দৌলতপুর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ সৈয়দ আলী, সদর থানা সভাপতি সাইফুল ইসলাম, খালিশপুর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি একেএম সানাউল্লাহ নান্নু, সোনাডাঙ্গা থানা সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বুলু বিশ্বাস, আ’লীগ নেত্রী এ্যাড. সুলতানা রহমান শিল্পী, নগর যুবলীগের আহবায়ক সরদার আনিসুর রহমান পপলুসহ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ।
মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পরে তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়ায় সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন তালুকদার আব্দুল খালেক। এসময় তিনি বলেন, গত পাঁচ বছরে খুলনা নগরীর দৃশ্যমান কোন উন্নয়ন হয়নি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে আমি প্রার্থী হয়েছি। আমি বিজয়ী হলে অসমাপ্ত কাজ বাস্তবায়ন করবো।
অপরদিকে বিকাল ৩টা ৪০ মিনিটে দলীয় নেতা-কর্মী সমর্থকদের নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেন বিএনপি’র মেয়র প্রার্থী নগর বিএনপি’র সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম মঞ্জু। এ সময় তাঁর সাথে উপস্থিত ছিলেন. সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দা নার্গিস আলী, কাজী সেকেন্দার আলী ডালিম, নগর বিএনপি’র সহ-সভাপতি সেকেন্দার জাফরউল্লাহ খান সাচ্চু, যুগ্ম সম্পাদক অধ্যক্ষ তারিকুল ইসলাম, ফকরুল ইসলাম, আসাদুজ্জামান মুরাদ, মহিলা দলের নেত্রী রেহানা বেগমসহ ২০ দলীয় জোটের নেতা-কর্মীরা।
মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পরে তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়ায় সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন নজরুল ইসলাম মঞ্জু। এসময় তিনি বলেন, আমি নির্বাচিত হলে খুলনাকে গ্রীন এন্ড ক্লিন সিটিতে রূপান্তরিত করবো। আমি কথা ফুলঝড়ি দিচ্ছি না। যা করবো তা সকলেই দেখতে পারবে। খুলনা সিটিতে বিজয়ের মধ্য দিয়ে চেয়ারপারসনের মুক্তি আন্দোলন আরো বেগবান হবে বলে তিনি জানান।
এর আগে বেলা পৌনে ১টার দিকে দলের নেতা-কর্মীদের নিয়ে মেয়র পদে ইসলামী আন্দোলনের নগর সভাপতি অধ্যক্ষ মাওঃ মুজ্জাম্মিল হক ও বিকেল ৩টা ২৩ মিনিটে জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী এস এম মুশফিকুর রহমান মনোনয়নপত্র জমা দেন। তার আগে গত বুধবার মেয়র পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন সিপিবি’র নেতা মিজানুর রহমান বাবু।
এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের তথ্যানুযায়ী ৩১টি সাধারণ ওয়ার্ড ও ১০টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে মোট ২৩৭ কাউন্সিলর প্রার্থী মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। এদের মধ্যে ১নং ওয়ার্ডে ৯ জন, ২নং ওয়ার্ডে ৬ জন, ৩নং ওয়ার্ডে ৪ জন, ৪নং ওয়ার্ডে ৭ জন, ৫নং ওয়ার্ডে ৭ জন, ৬নং ওয়ার্ডে ৭ জন, ৭নং ওয়ার্ডে ৫ জন, ৮নং ওয়ার্ডে ৩ জন, ৯নং ওয়ার্ডে ৬ জন, ১০নং ওয়ার্ডে ৬ জন, ১১নং ওয়ার্ডে ৮জন, ১২নং ওয়ার্ডে ৭ জন, ১৩নং ওয়ার্ডে ২ জন, ১৪নং ওয়ার্ডে ৮ জন, ১৫নং ওয়ার্ডে ৫ জন, ১৬নং ওয়ার্ডে ৭ জন, ১৭নং ওয়ার্ডে ৩ জন, ১৮নং ওয়ার্ডে ৭ জন, ১৯নং ওয়ার্ডে ৬ জন, ২০নং ওয়ার্ডে ৬ জন, ২১নং ওয়ার্ডে ৪ জন, ২২নং ওয়ার্ডে ৭ জন, ২৩নং ওয়ার্ডে ৭ জন, ২৪নং ওয়ার্ডে ৭ জন, ২৫নং ওয়ার্ডে ৫ জন, ২৬নং ওয়ার্ডে ৬ জন, ২৭নং ওয়ার্ডে ৬ জন, ২৮নং ওয়ার্ডে ৩ জন, ২৯নং ওয়ার্ডে ৩ জন, ৩০নং ওয়ার্ডে ৫ জন, ৩১নং ওয়ার্ডে ১৫ জন প্রার্থী মনোনয়ন দাখিল করেছেন।
সংরক্ষিত ওয়ার্ডের মধ্যে ১নং ওয়ার্ডে ৩ জন, ২নং ওয়ার্ডে ২ জন, ৩নং ওয়ার্ডে ৭ জন, ৪নং ওয়ার্ডে ৪ জন, ৫নং ওয়ার্ডে ৩ জন, ৬নং ওয়ার্ডে ৪ জন, ৭নং ওয়ার্ডে ৩ জন, ৮নং ওয়ার্ডে ৬ জন, ৯নং ওয়ার্ডে ৮ জন ও ১০নং ওয়ার্ডে ৮ জন প্রার্থী মনোনয়ন দাখিল করেছেন।