খোশ আমদেদ মাহে রমজান

প্রকাশঃ ২০২৩-০৩-২৫ - ১০:৫৪

ইউনিক ডেস্ক : হিজরি সনের নবম মাসের নাম রমজান। পুরো মাসজুড়ে সিয়াম সাধনা মুসলমানদের জন্য অবশ্যকর্তব্য। রোজা ফার্সি ও উর্দু শব্দ। আরবি ভাষার রমজ ধাতু থেকে রোজা শব্দটির উৎপত্তি। রমজ বলতে মূলত জ্বালিয়ে দেওয়া বোঝানো হয়। আভিধানিক অর্থের বাইরে রোজা পাপকাজ ভস্মীভূত করার উপায়।

রোজার আরবি শব্দ সাওম। এর আভিধানিক অর্থ বিরত থাকা। ইবাদতের নিয়মে সুবহে সাদিক থেকে শুরু করে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়ে পানাহার ও কোনো পাপকার্য থেকে বিরত থাকাই সিয়াম সাধনা। পবিত্র কোরআন শরীফের সুরা বাকারার ১৮৫ নাম্বার আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন,  রমজান মাস, এ মাসেই মানুষের জন্য আলোর দিশা এবং সৎপথের স্পষ্ট নিদর্শন ও সত্যাসত্যের পার্থক্যকারীরূপে কোরআন অবতীর্ণ হয়েছে। সুতরাং তোমাদের মধ্যে যারা এ মাস পাবে তারা যেন এ মাসে সিয়াম পালন করে এবং কেউ অসুস্থ থাকলে কিংবা সফরে থাকলে অন্য সময় এ সংখ্যা পূরণ করবে। আল্লাহ তোমাদের জন্যে যা সহজ তাই চান এবং যা তোমাদের জন্যে কষ্টকর তা চান না, এজন্যে যে তোমাদের সংখ্যা পূর্ণ করবে এবং তোমাদের সৎপথে পরিচালিত করার কারণে তোমরা আল্লাহর মাহিমা ঘোষণা করবে এবং যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পারো।

পবিত্র এই মাসটি সম্পর্কে অসংখ্য হাদিসও রয়েছে। রমজান মাসের তাৎপর্য বোঝাতে বোখারী শরীফে একাধিক হাদিস রয়েছে। তারমধ্যে হযরত সাহল বিন সা’দ (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সো:) ইরশাদ করেছেন, জান্নাতের একটি দরজা আছে, একে রাইয়ান বলা হয়,। এই দরজা দিয়ে কিয়ামতের দিন একমাত্র সিয়াম পালনকারী ব্যক্তিই জান্নাতে প্রবেশ করবে। তাদের ছাড়া অন্য কেউ এই পথে প্রবেশ করবে না। সেদিন এই বলে আহ্বান করা হবে- সিয়াম পালনকারীগণ কোথায়? তারা যেন এই পথে প্রবেশ করে। এভাবে সকল সিয়াম পালনকারী ভেতরে প্রবেশ করার পর দরজাটি বন্ধ করে দেওয়া হবে। অত:পর এ পথে আর কেউ প্রবেশ করবে না। (সহীহ বুখারী: ১৮৯৬, সহীহ মুসলিম: ১১৫২)

রমজান তাই মুমিন বান্দাদের তাকওয়া অর্জনের শ্রেষ্ঠ সময়। এ মাসে সুস্থ ও সামর্থ্যবান ব্যক্তিদের রোজা রাখার নির্দেশ দিয়েছেন আল্লাহ। ব্যাপক অর্থে বলতে গেলে মুসলমান, জ্ঞানসম্পন্ন ব্যক্তি, সাবালক, মুকিম এবং হায়েজ ও নেফাছ থেকে পবিত্র অবস্থায় থাকা নারীদের রমজান মাসে রোজা রাখতে হবে। মহান আল্লাহ পাক ঘোষণা করেছেন যে, তিনি তোমাদের জন্য সবকিছু সহজ করতে চান। তোমাদের জন্য কোনো জটিলতা কামনা করেন না। যাতে তোমরা (রমজান মাসের) গণনা পূরণ করো (সুরায়ে বাক্বারা, ১৮৬)। তবে কেউ যদি অসুস্থ হয়ে থাকেন এবং অসুস্থতার জন্য তার প্রাণনাশের সম্ভাবনা থাকে তাহলে তারজন্য রমজান মাসে সিয়াম সাধনা অবশ্যকর্তব্য নয়।

সিয়ামসাধনার ক্ষেত্রে বর্তমান সময়টিকে গুরুত্ব দিতে হবে। চলমান বৈশ্বিক সংকটে পাপাচার ও অপচয় থেকে বিরত থেকে সিয়াম সাধনা করতে হবে। এটিও মুমিন বান্দাদের জন্য পরীক্ষা।