চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ সদস্য ও শিল্পপতি আলহাজ্ব সেলিম নবীর বিরুদ্ধে সাতকানিয়ার আকবর হোসাইন নামের এক ব্যক্তি পটিয়ায় থানায় মোবাইল চুরির গায়েবী মামলার ঘটনায় এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। মামলায় তারিখ ও যে সময় উল্লেখ করা হয়েছে সেদিন ঘটনায় জড়িত থাকা দুরের কথা পটিয়ায় পর্যন্ত ছিল না বলে খবর পাওয়া গেছে। যাদের আসামি করা হয়েছে তারাও কেউ কারো পরিচিত না। দলীয় নেতা কর্মীরা এই ধরণের মামলাকে গায়েবী মামলা আখ্যায়িত করে প্রতিপক্ষকে হেয় করতেদ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন। এই ধরণের মামলার ঘটনায় পুলিশও বিব্রত অবস্থায় পড়েছে। বিয়ষটি নিয়ে চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি, চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে ব্যাপক আলোচনা চলছে।
মামলার অভিযোগ সূত্রে জানায়, গত ৯ মার্চ বিকাল সাড়ে ৫টায় উপজেলার কচুয়াই আনসার ক্যাম্পের সামনে জেলা আওয়ামী লীগের নেতা, ক্রীড়া সংগঠক, শিল্পপতি মো. সেলিম নবী(৫১), মো. সরোয়ার(৩৬), জামাল হোসেন(৩৭)সহ অজ্ঞাত আরো ২/৩ জনের বিরুদ্ধে সাতকানিয়ার পৌরসভার আশকর পাড়ার মৃত আব্দুল হাকিমের পুত্র মো, আকবর হোসাইন গত বৃহস্পতিবার পটিয়া থানায় মোবাইল চুরির মামলা করেন। মামলার এজাহারে নগরীর খাতুনগঞ্জের আর.আর ট্রেডিং কর্রোরেশনের মালিক জনৈক রফিকুল ইসলামের ম্যানেজার হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। জনৈক রফিকুল ইসলামের সাথে শিল্পপতি আওয়ামী লীগ নেতা সেলিম নবীর জায়গা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে তাকে হামলা চালিয়ে মোবাইল ছিনিয়ে নেয় বলে উল্লেখ করা হয়েছে। অথচ শিল্পপতি সেলিম নবীর পটিয়ার কমলমূন্সির হাট এলাকার জায়গার জাল কাগজ তৈরী করে রফিকুল ইসলাম খাতুনগঞ্জের ন্যাশনাল ব্যাংক শাখা থেকে ৭ কোটি টাকা লোন নেয়। জাল কাগজ দিয়ে ব্যাংক লোন নেয়ার ঘটনায় দুদক ২০১৮ সালে রফিকুল ইসামের বিরুদ্ধে মামলা করেন। রফিকুল ইসলাম সাতকানিয়া-লোহাগাড়ার জামায়াতের সাবেক সংসদ সদস্য শাহজাহান চৌধুরীর কাছের মানুষ বলে স্থানীয়রা জানায়। চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও শিল্পপতি সেলিম নবী ২০০৮ সালে জাতীয় সংসদ সদস্য পদে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীও ছিলেন। এ বিষয়ে মামলার বাদী আকবর হোসেরে সাথে যোগাযোগ করা হলে সাংবাদিক পরিচয় দেয়ার পর কোন কথা বলছে না, যে প্রতিষ্ঠানে চাকুরী করে তার নির্দেশে মামলাটি করা হয়েছে বলে লাইন কেটে দেন। সাতকানিয়া পৌরসভার মেয়র ও দক্ষিণ জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোহাম্মদ জোবাইর বলেন, সাতকানিয়া থেকে গিয়ে পটিয়ায় আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে মোবাইল চুরি মামলা করবে, এটা বিশ্বাস হচ্ছে না, নাকি তাদের নাম ব্যবহার করা হয়েছে খতিয়ে দেখতে হবে। তবে মামলার বাদী যে প্রতিষ্ঠানে চাকুরী করার কথা বলা হয়েছে তারা আওয়ামী লীগ করে না, জামায়াতের রাজনীতির সাথে যুক্ত রয়েছে বলে তিনি ধারণা করছেন। এ বিষয়ে পটিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো, নাসির উদ্দীন বলেন, আলহাজ্ব সেলিম নবী, দলের র্দুসময়ে হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধা সব ধর্মের গরীব অসহায় মানুষকে কোটি টাকার অনুদান দিয়েছে, গৃহ নির্মান,সুপেয়ে পানি, চিকিৎসার ব্যবস্থা, অসহায় পরিবারের কন্যাদের বিবাহের ব্যবস্থা, কোটি কোটি টাকার জমি দান, মসজিদ, মাদ্রাসা, মন্দির, স্কুল, ইউনিয়ন পরিষদ ও হাসপাতাল নির্মানে একক সহযোগিতা করেছে। সেই ব্যাক্তির নামে মোবাইল ছিনতাইয়ের মত হাস্যকর গায়েবী মামলা দিয়ে মানহানির চেষ্টা করা হচ্ছে। স্রোতের বিপরীতে হাজার হাজার আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের নেতাদের অভিভাবকের ভুমিকা পালন করায় অদৃশ্য শক্তির ইশারায় সেলিম নবীকে হেয় এবং রাজনৈতিকভাবে দুরে রাখতে এটা করা হয়েছে বলে তিনি জানান। এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার এস. এম রশিদুল হক বলেন, মামলাটি হওয়ার সাথে সাথে যেহেতু একটা প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে, মামলাটি তদন্তে পুলিশ শতভাগ পেশাদারিত্ব বজায় রাখা হবে, মিথ্যা মামলা করে কোন ব্যক্তিকে হয়রানি করার সময় এখন নাই। যথাযথ স্বাক্ষী প্রমান পাওয়া না গেলে তদন্ত কর্মকর্তা চাইলে বাদীর বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আদালতে প্রতিবেদন দেয়ার সুযোগ রয়েছে বলে তিনি জানান।