চট্টগ্রামের বোয়ালখালী সদরের গোমদণ্ডী পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে জাতীয় শোক দিবস পালন

প্রকাশঃ ২০২০-০৮-১৫ - ১৪:২৭

রিটন দে লিটন, চট্টগ্রাম: ১৫ আগস্ট বাঙ্গালীর মুক্তির দূত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৫তম শাহাদাৎ বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল চট্টগ্রামের বোয়ালখালীর গোমদণ্ডী পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক জনাব মোহাম্মদ মইনুল আবেদীন নাজিম এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়।

অদ্য ১৫ আগষ্ট শনিবার সকালে জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে উক্ত সভা ও দোয়া মাহফিল  শিক্ষক-সংগঠক ও চট্টগ্রাম সংবাদ প্রতিদিন এর উপদেষ্টা সম্পাদক “প্রলয় চৌধুরী মুক্তির” সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত হয়।

আলোচনা সভা প্রারম্ভে কোরআন তেলয়াত করেন সহকারী লাইব্রেরিয়ান মাহবুবুর রশীদ, গীতা পাঠ-সুবর্ণ চৌধুরী, ত্রিপিটক পাঠ-বিপুল বড়ুয়া।

জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন প্রধান শিক্ষক জনাব মোহাম্মদ মইনুল আবেদীন নাজিম, সহকারি প্রধান শিক্ষক জনাব এস.এম খসরু পারভেজ, সহকারি শিক্ষক বিষু কুমার বড়ুয়া, প্রজীব বড়ুয়া, শিক্ষার্থী নিলা আকতার ও শিক্ষার্থী সুবর্ণ চৌধুরী প্রমুখ।

সভায় বক্তারা বলেন আজ শোকাবহ ১৫ আগস্ট। জাতীয় শোক দিবস। বাঙালি জাতির জীবনের সবচেয়ে কলঙ্কময়, বেদনার দিন। স্বাধীনতার স্থপতি, মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৫তম শাহাদত বার্ষিকী। ১৯৭৫ সালের এ দিনে কাকডাকা ভোরে বিপথগামী কিছু সেনা সদস্য ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে। বাঙালির জাতির ললাটে এঁটে দেয় কলঙ্কের তিলক। যে কলঙ্ক থেকে দেশ-জাতি আজো পুরোপুরি মুক্তি হতে পারিনি। কারণ বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের রায় আংশিক কার্যকর হয়েছে। এখনো দন্ডপ্রাপ্ত কয়েকজন খুনি বিদেশে পালিয়ে রয়েছে। দিনটি সরকারি ছুটির দিন।

এদিন ঘাতকরা শুধু বঙ্গবন্ধুকেই হত্যা করেনি, তাদের হাতে একে একে প্রাণ হারিয়েছেন বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিনী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব, বঙ্গবন্ধুর সন্তান শেখ কামাল, শেখ জামাল ও শিশুপুত্র শেখ রাসেলসহ পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজি জামাল।

পৃথিবীর এই জঘন্যতম হত্যাকাণ্ড থেকে বাঁচতে পারেননি বঙ্গবন্ধুর অনুজ শেখ নাসের, ভগ্নিপতি আবদুর রব সেরনিয়াবাত, তার ছেলে আরিফ, মেয়ে বেবি ও সুকান্ত, বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে যুবনেতা ও সাংবাদিক, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক শেখ ফজলুল হক মণি, তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আরজু মনি এবং আবদুল নাঈম খান রিন্টু ও কর্নেল জামিলসহ পরিবারের ১৬ জন সদস্য ও ঘনিষ্ঠজন। এ সময় বঙ্গবন্ধুর দু’কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা বিদেশে থাকায় প্রাণে রক্ষা পান।

যে কাজটি বর্বর হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীও করার সাহস করেনি, সেটিই করল এ দেশের কিছু কুলাঙ্গার। স্বাধীনতাবিরোধী দেশি-বিদেশি চক্রের ষড়যন্ত্রের শিকার হলেন স্বাধীনতা আন্দোলনের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি যখন যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে গঠন করতে দিনরাত নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছিলেন তখনই ঘটানো হয় এ নৃশংস ঘটনা। পরিসমাপ্তি ঘটে একটি ইতিহাসের। সে থেকে বঙ্গবন্ধুর নাম বাংলার আকাশ-বাতাস ও মানুষের মন থেকে মুছে ফেলতে চেয়েছে ষড়যন্ত্রকারী ঘাতকরা, যা কোনোদিন হয়নি, হবেও না। পৃথিবীতে বাঙালি জাতি যতদিন থাকবে ততদিনই থাকবে বঙ্গবন্ধুর নাম, তার কর্ম।

সভা শেষে বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া মাহফিল পরিচালনা করেন জনাব মাওলানা খোরশিদ আলম।