চট্টগ্রামে কালুরঘাট সেতু সংস্কারের নামে লুটপাটের অভিযোগে নোটিশ

প্রকাশঃ ২০২০-০৭-২২ - ০১:৫৯
চট্টগ্রামে কালুরঘাট সেতু

বিপ্লব দে, চট্টগ্রাম:                   

চট্টগ্রাম নগরী হইতে কক্সবাজার যাওয়ার তৎকালীন সময়ে একমাত্র সেতুটি ১৯৩০ সালে ব্রিটিশ আমলে নির্মিত হয় ৭০০ গজ দীর্ঘ কালুরঘাট রেল সেতু। ১৯৫৮ সালে এ সেতুটি সব ধরনের যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয় তৎকালীন পাকিস্তান সরকার। সেতু মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার কারণে তৃতীয় কর্ণফূলী সেতুটি চট্টগ্রাম-কক্সবাজারে এক মাত্র যোগাযোগের মাধ্যম হলেও চট্টগ্রাম নগরীর সঙ্গে বোয়ালখালী ও পটিয়া উপজেলার একাংশের যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম কালুরঘা সেতুটি এখন ভরে আছে নানা খানাখন্দে। জোড়াতালি দিয়ে সেতুর উপর দিয়ে প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে চলছে কয়েক হাজার যানবাহন ও কয়েক জোড়া ট্রেন। আর এই সেতু সংস্কারের নামে প্রতিবারে চলে লুট-পাট।

কালুরঘাট সেতু নিয়ে একের পর সমালোচনায় জড়িয়ে পড়ছে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল। এবার এই সেতু সংস্কারের নামে অনিয়ম, দুর্নীতি ও সরকারি অর্থ লুটপাট হচ্ছে বলে দাবি করে রেলপথ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও চট্টগ্রাম দুর্নীতি দমন কমিশনের পরিচালক বরাবরে একটি লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছেন সেলিম চৌধুরী নামে একজন আইনজীবী।

মঙ্গলবার (২১ জুলাই) ওই দুই দপ্তর বরাবরে পাঠানো নোটিশে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক একটি পত্রিকার বরাতে তিনি বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ এই সেতু মেরামতের জন্য ৫২ লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। যা এবি কন্ট্রাকশন নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দরপত্রের মাধ্যমে ওয়ার্ক ওর্ডার পেয়েছে। কিন্তু উল্লেখিত পত্রিকার খবরে আইনজীবী সেলিম চৌধুরী জানতে পারেন যে, মূলত ১৩ জুলাই রাতে সংস্কারের জন্য  এই সেতু বন্ধ করে দেয়া হলেও ১৯ জুলাই পর্যন্ত কোন কাজ হয়নি। ২০ জুলাই সামান্য কিছু কাজ হয়েছিল। স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, সামান্য এই কাজে ব্যয় হয়েছে বড়জোর ৫ থেকে ৭ লাখ টাকা।

আইনজীবি সেলিম চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, এই সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে তা আমার নজরে আসে। পরে জনগণের পক্ষে আমি একটি লিগ্যাল নোটিশ রেলওয়ে ও দুদক বরাবরে পাঠাই।

ওই নোটিশে বলা হয়েছে, ১৯ জুলাই থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত পত্রিকায় যাতায়াত বন্ধের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। অথচ সেখানে দৃশ্যমান কোন কাজ হয়নি। বরঞ্চ এই বিজ্ঞপ্তির কারণে জনগণ বিভ্রান্ত হয়েছে। অন্যদিকে সরকারি টাকা সেতু সংস্কারের নামে লুটপাটের জন্যই এমনটা করা হয়েছে।

এসব বিষয়ে পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ সবুক্তগীন গণমাধ্যমকে বলেন, এখনো কাজ চলমান আছে। এই ধরণের কোন প্রতারণা করা সম্ভব নয়। তাছাড়া কোন অভিযোগ থাকলে তা খতিয়ে দেখা হবে।

প্রসঙ্গত, এর আগে সংস্কার কাজের জন্য সোমবার (১৩ জুলাই) থেকে বৃহস্পতিবার (২৩ জুলাই) জরাজীর্ণ  কালুরঘাট ব্রিজে মোট ১১ দিন রাতে যানবাহন চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। তবে সংশ্লিষ্টরা জানান, দিনে ট্রেনসহ অন্যান্য যানবাহন স্বাভাবিক নিয়মে চলবে।  প্রতিদিন রাত ১০টা থেকে পরদিন সকাল ৮টা পর্যন্ত সেতুর ওপর দিয়ে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। সংস্কার কাজ শেষে সেতুটি আবার আগের নিয়মে খুলে দেওয়া হবে।