চিকিৎসা ব্যবস্থায় ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় ডাক্তারের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা

প্রকাশঃ ২০২১-০২-১০ - ২০:০৮

স্টাফ রিপোর্টার : চিকিৎসা ব্যবস্থায় ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় ডাক্তার খুলনা মেডিকেল কলেজ অব: অধ্যাপক (গ্যাসট্রোএন্টারোলজী) ডা: বিষ্ণুপদ পাইক আসামী করে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ভুক্তভোগী সোনালী ব্যাংক লিমিটেড খুলনার সিনিয়ার পিন্সিপাল অফিসার গাজী কামাল হোসেনের স্ত্রী আফরোজা খাতুন বাদী হয়ে বিজ্ঞ মহানগরী হাকিম এর আমলী আদালত (ক) অঞ্চলে মামলাটি দায়ের করেন। যার নং ১৫ (১)/২১। সদর থানার মামলা নং -১৫ (১৮-১-২০২১)। মামলাটি পিবিআই তদন্ত করছেন। মামলায় ডা: বিষ্ণুপদ পাইক জামিনে রয়েছেন।
আদালতে মামলার বিবরণে জানা যায়, আফরোজা খাতুনের স্বামী গাজী কামাল হোসেন বিগত ৩ মাস পূর্বে হতে পরিপাকতন্ত্রের সমস্যা নিয়ে অসুস্থকায় ভুগছিলেন। আসামী ডা: বিষ্ণুপদ পাইক খুলনা মেডিকেল কলেজের অবসর প্রাপ্ত অধ্যাপক এবং পরিপাকতন্ত্র ও লিভার রোগ বিশেষজ্ঞ। বাদীর স্বামী কামাল হোসেন গত ৩ জানুয়ারি দুপুর ১২ টার দিকে ডা: বিষ্ণপদ পাইক এর বাংলাদেশ ডায়াগণস্টিক এণ্ড কনসালটেশন সেন্টারে রোগী হিসেবে সাক্ষাত করেন। সাক্ষাতের পর আসামীর পরামর্শে বাদীর স্বামী গত ৪ জানুয়ারি দুপুর ২টায় ডা: বিষ্ণুপদ পাইক এর চেম্বারে আসেন। এরপর কামাল হোসেনকে ওই ডাক্তারের চেম্বারে এনডোসকপি করার জন্য গলার মধ্যে নল প্রবেশ করে। এ সময় সে ব্যাথা ও কষ্টে চিৎকার চেচামেচি শুরু করে। তখন ডাক্তার তার স্বামীকে ধমকাতে থাকে এবং জোর পুর্বক গলার মধ্যে নল প্রবেশ করাতে থাকে। ওই ডাক্তার সম্পুর্ণ ইচ্ছাকৃতভাবে দায়িত্বে অবহেলা পূর্বক ভিকটিমের গলা দিয়ে নল প্রবেশ করানোর ফলে কামাল হোসেন এর গলা ডান শ্বাসনালী, খাদ্যনালী ও ডান ফুসফুস মারাত্মকভাবে আঘাত প্রাপ্ত হয়ে ডান ফুসফুসে বাতাস প্রবেশ করে। এতে কামাল হোসেন মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়ে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়। ওই দিন গুরুত্বর অসুস্থ অবস্থায় কামাল হোসেনকে রাত ১০টা খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। হাসপাতালের চিকিৎসকগণ প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা পূর্বক কামালের শরীরের উপরোক্ত জখমগুলি পায় এবং তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। পরের দিন ৫ জানুয়ারি কামালা হোসেনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় গ্রীন লাইফ হসপিটালে ভর্তি করান। সেখানে প্রফেসর ডা: একেএম রাজ্জাকের চিকিৎসাধীন থেকে কিছুটা সুস্থ হয়ে গত ১৩ জানুয়ারি খুলনায় ফিরে আাসেন। আসামী ডা: বিষ্ণুপদ পাইক ইচ্ছাকৃতভাবে দায়িত্ব অবহেলা করে গাজী কামাল হোসেনের শ্বাসনালী, খাদ্যনালী ডান পার্শ্বে এবং ডান ফুসফুস নলের সাহায্য আঘাত করে মারাত্মক জখম পূর্বক দন্ডবিধির ৩৩৮ ধারার অপরাধ করেছে বলে মামলার বাদি আফরোজা খাতুন উল্লেখ করেন।
বাদীর অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান সরদার গতকাল বুধবার এ প্রতিবেদককে বলেন, বাদীর স্বামী গাজী কামাল চিকিৎসা ব্যবস্থায় ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার ডাক্তার বিষ্ণুপদ পাইকের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ মহানগরী হাকিম এর আমলী আদালত (ক) অঞ্চলে বিজ্ঞ বিচারক শহিদুল ইসলাম এর আদালতে ৩৩৮ ধারায় মামলাটি করছেন। মামলাটি বর্তমানে বিচারধীন রয়েছে।
মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা পিবিআই ইনস্টেপেক্টর মো: ইকবাল হোসেন গতকাল বুধবার এ প্রতিবেদককে বলেন, মামলার আসাািম ডা: বিষ্ণুপদ পাইক বর্তমানে জামিনে রয়েছেন। ভুক্তভোগী সোনালী ব্যাংক লিামিটেড সিনিয়ার পিন্সিপাল অফিসার গাজী কামাল হোসেন এর ইনজুরির রিপোর্ট পাওয়ার জন্য খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ ও ঢাকাস্থ গ্রীন লাইফ হসপিটালের কর্তৃপক্ষের কাছে পত্র প্রেরণ করেছি। তাদের কাছ থেকে ইনজুরির রিপোর্ট পেলেই বাকী তদন্তের কাজ সম্পন্ন হবে। বর্তমানে মামলাটি তদন্তাধিন রয়েছে।
নগরীর সামসুর রহমান রোডস্থ বাংলাদেশ ডায়াগণস্টিক সেন্টার এণ্ড কনসালটেশন সেন্টারের এমডি মো: জামাল বুধবার এ প্রতিবেদককে বলেন, বর্তমানে ডা: বিষ্ণুপদ পাইক ওই মামলায় জামিনে রয়েছেন। তিনি দাবি করেন তার ডাক্তার নির্দোষ তিনি কোন ভুল চিকিৎসা করেননি।
ভুক্তভোগী সোনালী ব্যাংক লিমিটেড খুলনার সিনিয়ার পিন্সিপাল অফিসার গাজী কামাল হোসেন বলেন, আমি ওই ডাক্তারের কাছে এনডোসকপি করতে গিয়ে যে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি তাতে আমার বাচার কথা না। আর কোন রোগীরা যেনো আমার মতো এমন ভুক্তভোগী না হয় সে জন্য তার শাস্তির দাবি জানাই।