আজগর হোসেন ছাব্বির, দাকোপ : দাকোপে অসংখ্য মামলার আসামী আইনশৃংখলা বাহিনীর সোর্স পরিচয়ে বেপরোয়া চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ হয়ে এলাকাবাসী প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছে। গনস্বাক্ষরে সুপারিশে ক্ষিপ্ত হয়ে সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্যকে লাঞ্চিত করেছে। সম্প্রতিএক হ্যাচারী ব্যবসায়ীর বৈধ কাকড়া কোষ্টগার্ডের সাহায্যে জব্দ করানোর ঘটনাকে কেন্দ্র করে ফুঁসে উঠেছে সংশ্লিষ্ট এলাকাবাসী।
দাকোপ উপজেলার কালাবগী গ্রামের পিতা-পুত্রসহ একই পরিবারের সকলের বিরুদ্ধে আছে অপরাধে জড়িত থাকার নানা অভিযোগ। পিতা রাজ্জাক শেখ ওরফে বাছের ডাকাত একজন চিহ্নিত হরিন শিকারী ও দাঙ্গাবাজ হিসেবে পরিচিত। অভিযোগ আছে পিতার সকল অপরাধ মুলক কাজে জড়িত থেকে পুত্র আছাদুলসহ অন্যান্য ছেলেরাও এখন বেপরোয়া। গত বেশ কিছুদিন যাবৎ আছাদুল এবং খোকন র্যাব ও কোষ্টগার্ডের সোর্স পরিচয় দিয়ে চালাচ্ছে বেপরোয়া চাঁদাবাজি এমন অভিযোগ এলাকার ভুক্তভোগীদের। খোজ নিয়ে জানা যায় আইনশৃংখলা বাহিনীর সোর্স পরিচয় দানকারী আছাদুল শেখ, খোকন শেখ, রাজ্জাক শেখ ও অপর পুত্র মোস্ত শেখের নামে বিভিন্ন থানায় অন্ততঃ ১৪ টি মামলাসহ অসংখ্য জিডি আছে। এরমধ্যে যেমন দাকোপ থানার মামলা জি আর ১৫৩/১৩, সি আর ১/১৪, জি আর ২২/১৪, জি আর ৯৭/১৬, জি আর ১৫৩/১৩, সি আর ৪৯৫/১০, সি আর ২৬৭/১০, জি আর ৫৯/১০, কৃমিনাল আপিল জেলা জজ ১৪১/১৬। এছাড়া কয়রা থানার জি আর ২৮৫/১০, সি আর ২৮৫/১০ সহ যৌতুক মামলা চলমান আছে। এর মধ্যে রাজ্জাক শেখ পুলিশের নিকট থেকে হ্যান্ডকাপসহ পলাতক মামলায় ৫ বছরের সাজাপ্রাপ্ত, সি আর ১/১৪ মামলায় সাজাপ্রাপ্ত ও কয়রা থানার জি আর ২৮৫/১০ মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে জামিন ছাড়াই প্রকাশ্যে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে বলে প্রাপ্ত অভিযোগে জানা গেছে। সম্প্রতি আছাদুল ও খোকন মিলে চাহিদা অনুযায়ী চাঁদা না পেয়ে নলিয়ান কোষ্টগার্ডকে ব্যবহার করে কালাবগী গ্রামের হ্যাচারী ব্যবসায়ী বনি আমিন শেখের ১৯ বস্তা কাকড়া জব্দ করায়। এ ঘটনায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বৈধ কাগজপত্র দেখিয়ে নানা দেনদরবার করে কাকড়া ছাড়াতে ব্যর্থ হয়। ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ী এলাকার ৪ শতাধীক ব্যক্তির গনস্বাক্ষরসহ বিষয়টি উল্লেখ করে ন্যায় বিচার চেয়ে কোষ্টগার্ডের উচ্চ পর্যায়ে লিখিত অভিযোগ দাখিল করে। অভিযোগের বিষয়টি বর্তমানে তদন্তনাধীন আছে বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে আছাদুল তার পিতা রাজ্জাক শেখসহ সহযোগীরা স্থানীয় কালাবগী ৮ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মহসিন শেখকে প্রকাশ্যে লাঞ্চিত করে। এমনকি অভিযোগে স্বাক্ষরকারী আরো অনেককেই প্রকাশ্যে হুমকি ধামকি অব্যহত রেখেছে বলে জানা গেছে। যে কারনে নিজেদের নিরাপত্তা চেয়ে ইউপি সদস্য মহসিন শেখ দাকোপ থানায় সাধারন ডায়েরী করে যার নং ১২৭৬ তাং ৩১/০১/১৮, এ ছাড়া অন্যান্যরা সাধারন ডায়েরী করে যার নং ১১১৯ তাং ২৭/০১/১৮, ১২২৭ তাং ২৭/০১/১৮, ১২৭৮ তাং ৩১/০১/১৮, ১২৭৭ তাং ৩১/০১/১৮। এ ছাড়াও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় করা অসংখ্য সাধারন ডাযেরী আছে বলে জানা যায়। এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ী বনি আমিন শেখ এলাকাবাসীর গনস্বাক্ষরসহ স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান, মেম্বর, উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের সুপারিশসহ লিখিত অভিযোগ স্বরাষ্টমন্ত্রনালয় থেকে শুরু করে প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে দাখিল করেছে। চিহ্নিত অপরাধীরা কিভাবে আইনশৃংখলা বাহিনীর সোর্স হয় এমন প্রশ্ন তুলে ঘটনার সুষ্ট তদন্ত এবং অপরাধীদের গ্রেফতারের দাবী জানিয়েছে এলাকাবাসী।