খানজাহান আলী থানা : বারাকপুর ইউনিয়ন পরিষদের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. আনছার শেখ হত্যাকাণ্ডের ঘটনার দুইদিন পর নিহতের ছেলে তানভীর শেখ বাদী হয়ে খানজাহান আলী থানায় মামলা দায়ের করেছে। মামলায় বারাকপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গাজী সগীর হোসেন(পাভেল)সহ ২৩ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় ৭/৮জনকে অজ্ঞাতনামা করে ২৬ মার্চ মামলা দায়ের করা হয়েছে(মামলা নং ১৭)। মামলায় পুলিশ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে এজাহারভুক্ত ৪নং আসামি মৃত তোকাম গাজীর পুত্র ফরহাদ গাজী(৫০), ঘোষগাতি গ্রামের ডা. ইব্রাহিমের পুত্র এজাহার নামীয় ১৮নং আসামি মাহাবুর শেখ (৩২)কে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। এছাড়াও লাখোয়াটির বদিয়ার রহমান মোড়লের পুত্র ইবাদুল ইসলাম মোড়লকে সন্দেহজনকভাবে আটক করেছে।
মামলার বাদী নিহত মো. আনছার শেখের পুত্র তানভীর শেখ বলেন, বারাকপুর বাজার কমিটির নির্বাচন, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনসহ গাজী বংশের সাথে চলে আসা দ্বন্দের কারণে বারাকপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান গাজী জাকির হোসেনের ভাতিজা বর্তমান বারাকপুর ইউপি চেয়ারম্যান গাজী সগীর হোসেন পাভেল হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত আছে। তানভীর শেখ বলেন গত ১৭ মার্চ আমার পিতা বারাকপুর গেলে আমার বাবাকে তারা হুমকি-ধামকি এবং দলবল নিয়ে ধাওয়া করে। বারাকপুর বাজারে আমাদের কাপুড়ের দোকানে গাজীরা হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে। নির্বাচনের সময় আমাদের লোকজনের উপর হামলা চালায় তারা। জাকির গাজী হত্যা মামলায় উদ্দেশ্যমূলক ভাবে ষড়যন্ত্র করে আমার বাবাকে জড়ানো হয়। সব মিলিয়ে পুর্ব শত্রুতায় আমার বাবাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে তারা।
পুলিশ ও বাদীর সূত্রে জানা গেছে, মো. আনছার শেখ হত্যা মামলায় যাদেরকে আসামি করা হয়েছে তারা হলেন দিঘলিয়া উপজেলার মৃত জাহাঙ্গীর গাজীর পুত্র, বারাকপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গাজী সগীর হোসেন (পাভেল গাজী)(৩২), বারাকপুরের আতিয়ার মিনার পুত্র পারভেজ মিনা (৩০), পলাশ মিনা (৪৫), মৃত তোকাম গাজীর পুত্র ফরহাদ গাজী (৫০), নাসির গাজীর পুত্র প্রিন্স গাজী (৩২), মৃত মোস্তফা গাজীর পুত্র রাসেল গাজী(৩০), আফতাব গাজীর পুত্র মজ্ঞু গাজী (৫২), মৃত জাকির গাজীর পুত্র কাইফ গাজী(২২), মৃত আবু বক্কর গাজীর পুত্র নাসির গাজী (৬৫) নজিম শেখ এর পুত্র জনি শেখ(৩২), আলতাফ শেখ এর পুত্র আজিজুল শেখ, লাখোহাটি গ্রামের ২নং ওয়ার্ডের নজমাল শেখ এর পুত্র বাপ্পি শেখ (৩০), মৃত চান্দু গাজীর পুত্র মিদু গাজী (৫৫),কুদ্দুস গাজীর পুত্র শিমুল গাজী (২৬),মোহাম্মাদ মোল্লার পুত্র আসাদ মোল্লা (২৫),মৃত সামাদ গাজীর পুত্র গাজী সেলিম রেজা (৪৮), বারাকপুর ঘোষগাতি এলাকার ৪ নং ওয়ার্ডের ডাক্তার ইব্রাহিম এর পুত্র আজিবর শেখ(৩৫), মাহাবুর শেখ(৩২), মোস্তাক গাজীর পুত্র আন্দু গাজী(২৭), মল্লিকপুর ৩ নং ওয়ার্ডের নেদু চৌধুরির পুত্র বিল্লাল চৌধুরী ( ৪০), নুরু চৌধুরীর পুত্র আজিজুল চৌধুরী (৩০), লাখোহাটি ২নং ওয়ার্ডের চান্দু গাজীর পুত্র মারুফ গাজীর (৩০), লাখোহাটি ১নং ওয়ার্ডের হাফিজ মোল্লার পুত্র সাগর মোল্লা (২৩)।
হত্যা মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি বারাকপুর ইউপি চেয়ারম্যান গাজী সগীর হোসেন পাভেল বলেন, দুষ্কৃতিকারীর গুলিতে নির্মমভাবে নিহত মো. আনছার শেখ আমার চাচার হত্যা মামলার প্রধান আসামি ছিল। আমার চাচার হত্যা মামলায় আসামি থাকার কারণে এই মামলায় আমাকে বা আমাদের পরিবারকে ফাসাতে নাম অন্তরভুক্ত করা হয়েছে। দ্বন্দ্বের জেরে তৃতীয় পক্ষ বা অন্য যে কেউ এ ঘটনা ঘটিয়ে থাকলে ভুক্তভোগী পরিবার আমাদেরকে টার্গেট করবে এটাই স্বাভাবিক। তিনি বলেন আনছার শেখ হত্যাকান্ডের সাথে আমি কোনভাবেই জড়িত নয়। নিহতের পরিবার ষড়যন্ত্রমুলকভাবে আমার ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন করতে এবং সামাজিকভাবে আমাকে হেয় করতে প্রতিপক্ষকে সুবিধা দিতে মামলায় আমার নাম জড়ানো হয়েছে। আইন-শৃংখলা বাহিনীর বিভিন্ন সংস্থা অনুসন্ধান করছে আশা করি প্রকৃত সত্য ঘটনা উদঘাটন হবে। প্রকৃত হত্যাকারীদের আইন-শৃংখলা বাহিনী গ্রেফতার করে হত্যার মূল রহস্য উন্মোচন করবে।
এ বিষয়ে খানজাহান আলী থানার অফিসার্স ইনচার্জ মো. কামাল হোসেন খান বলেন, মামলার এজাহারভুক্ত আসামী গাজী ফরহাদ হোসেনকে দিঘলিয়ার বারাকপুর থেকে এবং মাহাবুব ঘোষগাতী থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়া সন্দেহভাজন ইবাদুল ইসলাম মোড়লকে লাখোয়াটি থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের রহস্য এবং বাকী আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।