সাতক্ষীরা প্রতিনিধিঃ দুই দেশে করোনা আতঙ্কের মুখে সাতক্ষীরা সীমান্তের চোরাইপথে বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশী নাগরিক ভারত থেকে বাংলাদেশে ফিরে আসছে। তাদেরকে ভারতীয় বিএসএফ পুশব্যাক করে দিচ্ছে কিনা তা নিশ্চিত করা না গেলেও গ্রামবাসী বলছেন সাতক্ষীরার একদল চোরাঘাট মালিক এসব মানুষকে বাংলাদেশে ফেরত আনতে মাথাপ্রতি ৩ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা আদায় করে নিচ্ছে। ফিরে আসা এসব নাগরিক করোনা ভাইরাস বহন করছে কিনা তা অজানা থেকে যাচ্ছে।
আজ মঙ্গলবার সকালে ভারত ফেরত ৬ জন বাংলাদেশী নাগরিককে সাতক্ষীরা তলুইগাছা সীমান্তের একটি ঝোপজঙ্গলের মধ্যে অবস্থান করতে দেখা গেছে। স্থানীয় চোরাঘাট মালিক লিয়াকত আলী তাদেরকে বাংলাদেশে আসতে সহায়তা করেছেন। এ খবর জানতে পেরে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার কুশখালি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম শ্যামল তার লোকজন নিয়ে ফেরত আসা ওই বাংলাদেশীদের আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার লক্ষ্যে সেখানে দ্রুত পৌছে যান। তার আগেই চোরাঘাট মালিক লিয়াকত আলী তাদেরকে সরিয়ে চোখের আড়ালে নিয়ে যায়। ধারনা করা হচ্ছে তাদেরকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে নিজ নিজ গন্তব্যে পৌছে দেওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে সাতক্ষীরা সীমান্তের ১৩-১৪ জন চোরাঘাট মালিককে কুশখালি সীমান্তের নটিজঙ্গল এলাকায় অবস্থান করতে দেখা গেছে। তারা ভারত থেকে লোকজন আসাকে উৎসাহিত করছেন। এজন্য এই সিন্ডিকেট মাথাপ্রতি ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা প্রতিনিয়ত তাদের কাছ থেকে আদায় করে আসছে। আজ সকালে আরও বেশকিছু নারীপুরুষ যারা ভারতে ছিলেন তারাও একই পথে ফিরে এসেছেন বলে জানিয়েছেন গ্রামবাসী।
এদিকে করোনা আতঙ্কের কারনে সাতক্ষীরার ভোমরা ইমিগ্রেশন দিয়ে নতুন করে কোন বাংলাদেশী অথবা কোন ভারতীয় যাতায়াত করতে পারবে না বলে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে কর্তৃপক্ষ। তবে ভারতে থাকা বাংলাদেশী নাগরিক এবং বাংলাদেশে থাকা ভারতীয় নাগরিক যথাযথভাবে তাদের পাসপোর্ট ও ভিসা দেখাতে পারলে তারা নিজ দেশে ফিরে যেতে পারবেন। এমন অবস্থায় সাতক্ষীরা সীমান্ত দিয়ে চোরাপথে লোক পারাপার বৃদ্ধি পেয়েছে।
তলুইগাছা সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে অবৈধ পন্থায় প্রবেশের বিষয়টি জানতে চাইলে সাতক্ষীরা ৩৩ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়ন (বিজিবি) অধিনায়ক লেঃ কর্নেল গোলাম মহিউদ্দিন খন্দকার বলেন, তিনি খবর পেয়েছেন সাতক্ষীরা সীমান্তের কাছাকাছি রুদ্রপুর সীমান্ত দিয়ে বেশ কিছু বাংলাদেশি নাগরিক ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। সাতক্ষীরার তলুইগাছা বা অন্য কোন সীমান্ত দিয়ে এমন অবৈধ পারাপার হয়নি দাবি করে তিনি বলেন, বিষয়টি জানতে পারার পর আমি খোঁজখবর নিচ্ছি। তলুইগাছা সীমান্তে প্রকৃতপক্ষে কি ঘটেছে তা তিনি তদন্ত করতে ঘটনাস্থলে যাচ্ছেন বলেও জানান। তিনি বলেন ঘটনা যাই ঘটুক চোরাপথে কোনো দেশের নাগরিককে সীমান্ত পার হতে দেওয়া হবেনা । এবিষয়ে বিজিবি সদস্যরা সতর্ক রয়েছেন।