জমিও নেই ঘরও নেই প্রকল্পে বঞ্চিতরা চাইছে ঘর ভিক্ষা

প্রকাশঃ ২০২১-০৪-২১ - ১৮:৫১

সুজিত মল্লিক, ডুমুরিয়া : ডুমুরিয়া বাজারের অপদার পাশেই প্রায় ৫০ পরিবারের বসবাস। ঝুপড়ি ঘরেই রাত কাটে তাদের। পাকা ঘরে মাথা গোজার কোন সাধ্যই নেই ওই মানুষগুলোর। তারপরও তারা দেখছে স্বপ্ন। আর স্বপ্নটা জেগেছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর জমিও নেই ঘরও নেই প্রকল্পের সরকারি বাড়ি দেওয়ার খবরে। ভাগ্যে হয়তঃ জুটতেও পারে পাকা-ঘর। যার আশায় বুধবার সকালে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ের সামনে দীর্ঘ সময় ধরে অবস্থান নিয়ে করেন ঘর ভিক্ষা।
অবস্থানরত মানুষদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রায় পাঁচ যুগ আগে খুলনার কয়রা পাইকগাছা-সহ বিভিন্ন এলাকা থেকে ঘর-বাড়িহারা অভাবী মানুষরা পরিবার পরিজন নিয়ে আসে ডুমুরিয়ায়। উপজেলা সদরে ভদ্রানদীর উত্তর পাশে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জায়গায় হয় তাদের স্থান। রাস্তার স্লোপে ঝুপড়ি ঘরেই হয় মাথা গোজার ঠাঁই। আয় রোজগারের পথ হিসেবে মহাজনদের বাড়িতে বাড়িতে করেন কামলার কাজ। কেউ কেউ ভ্যান, ঠেলাগাড়ি ও নৌকার মাঝি হয়ে কাজের পথ খুঁজে নেন। তাতে দিনে আনা-দিনে খেয়েই চলে যেত সংসার। এমনি ভাবেই বয়ে আসছে তাদের জীবন-জীবিকা। সংসারের অভাব সামলাতে গিয়ে পরিবর্তন ঘটেনি ভাগ্যের। আজও রয়েছে সেই একই অবস্থা। মাথা গোজার জন্য কোন পাকা ঘরের সাধ্য নেই তাদের। কিন্তু মুজিব শতবর্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উপহার জমিও নেই ঘরও নেই প্রকল্পের ঘর দেওয়ার খবরে প্রাণ ফিরে পায় তারা। আশায় আছে হয়তঃ তারাও পেতে পারে ওই ঘর।
জানা গেছে, ঘরের আশায় ওই পল্লীর ৪৩টি পরিবারের পক্ষ থেকে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু আজাবধি তারা কোন সু-খবর জানতে পারিনি। কি আছে তাদের ভাগ্যে তাও রয়েছে অজানা। যার জন্য গতকাল বুধবার সকালে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের দ্বারস্থ হন।
এ প্রসঙ্গে অবস্থানকারী রুমা বেগম (৪০) ও আইয়ুব আলী শেখসহ (৫৫) অনেকেই বলেন, আমরা অত্যন্ত অসহায়। সারাজীবন খেটে একটু জমি কিনতে পারিনি। ঘর বাধারও সাধ্য নেই। তাই আমরা এই ঘর ভিক্ষা চাইছি। যার জন্য আমরা আগে ধরে আবেদন করেছি। কিন্তু এখন শুনতেছি তালিকায় আমাদের নাম নেই। আমাদের পরে অনেকে দরখাস্ত করেছে। সরকারি লোকজন তাদের বাড়ি গিয়ে খোজ করছে। শুনছি তারা ঘর পাচ্ছে। কিন্তু আমাদের খোজ খবর কেউ নিচ্ছে না।
ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আবদুল ওয়াদুদ বলেন, ঘরের জন্য হাজার হাজার আবেদন জমা হচ্ছে। এখন সরকারি নীতিমালা অনুসরণ করে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে তাদের বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।