জামিনে মুক্ত হলেন চট্টগ্রামের তরুণ আইনজীবী পল্টন দাশ

প্রকাশঃ ২০২১-০৬-২৪ - ০৩:৪৪

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম জজ আদালতের তরুণ আইনজীবী এডভোকেট পল্টন দাশের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় ধর্ষণের অভিযোগে দায়েরকৃত মামলায় বুধবার মহানগর আদালত বাদী ও আসামি উভয় পক্ষের শুনানী শেষে বিচারক শেখ আশফাকুর রহমান জামিন দেন।

মামলার শুনানিতে বাদী পক্ষের আইনজীবী ছিলেন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ও যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর এডভোকেট রানা দাশ গুপ্তের নেতৃত্বে একটি আইনজীবী প্যানেল।

আসামি পক্ষে ছিলেন চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এডভোকেট এনামুল হক ও সাধারণ সম্পাদক এ এইচ এম জিয়া উদ্দীনের নেতৃত্বে একটি আইনজীবী প্যানেল।

জানা গেছে, চট্টগ্রাম জজ কোর্টের আইনজীবী এডভোকেট পল্টন দাশের সাথে ফেইসবুকে  যোগাযোগ হওয়ার পর তরুনী চট্টগ্রাম আদালতে মামলার তদবীরের জন্য আসা-যাওয়ার সুবাধে দেখা হয়। আইনজীবী পল্টন দাশের মাধ্যমে আইনী সংগঠন ও  পেশাজীবী, সামাজিক সংগঠনে যুক্ত হওয়ার আগ্রহ দেখিয়ে নিজেই যোগাযোগ রেখে চলেন।

আইনজীবী পল্টন দাশ রাঙ্গুনিয়া আদালত আইনজীবী সমিতির সভাপতি এডভোকেট বঙ্কিম দাশের পুত্র।

গত ৬ জুন তরুনী ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা দাবি করে বিয়ের জন্য জোর করেন। আইনজীবী পল্টন দাশ উক্ত মহিলার সাথে শারীরিক সর্ম্পকের বিয়ষটি অস্বীকার করে পেটের বাচ্চার ডিএনএ টেস্ট করার দাবি করলে তরুনী কোন অবস্থাতে ডিএনএ টেস্ট করার জন্য রাজি হয়নি।

ডিএনএ টেস্ট প্রমানিত হওয়ার পর তরুণীকে বিয়ে করার প্রস্তাব করা হলে এতে তরুনী ক্ষিপ্ত হয়ে আইনজীবী পল্টন দাশের বিরুদ্ধে গত ৬ জুন চট্টগ্রাম নগরীর কোতোয়ালী থানায় ধর্ষনের অভিযোগে মামলা করেন।
গত ১১ জুন এডভোকেট পল্টন দাশকে কৌশলে থানায় ডেকে নিয়ে গ্রেফতার দেখিয়ে জেল হাজতে প্রেরণ করে।

আদালত মামলার বাদী সঞ্জয়িতা দত্ত পিংকির পেটের বাচ্চার ডিএনএ পরীক্ষার রিপোর্ট ৭দিনের মধ্যে প্রদান করার জন্য তদন্তকারী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন।

গত ১৭ জুন আদালতের নির্দেশ মতে তদন্তকারী কর্মকর্তা আরাফাত হোসেনের পাঠানো প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন বাদী ৮ মাসের অন্তঃসত্বা হওয়ায় ডিএনএ পরীক্ষা করাতে অনিহা প্রকাশ করেন। সন্তান ডেলিভারী হওয়ার পর সিআইডির মাধ্যমে ডিএনএ পরীক্ষা করবেন বলে বাদী জানিয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন।

উল্লেখ্য আইনজীবী পল্টন দাশ গ্রেফতার হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন সামাজিক ও আইনী সংগঠনের পক্ষ থেকে পরিকল্পিতাবে ফাঁসানো হয়েছে বলে দাবি করে আসছে। পল্টন দাশের মামলাটি নিরপেক্ষ তদন্ত করে প্রকৃত ঘটনা বের করার দাবি জানিয়ে চট্টগ্রাম লইয়ার এন্ড স্টুডেন্ট সোসাইটির পক্ষ থেকে গত ১৭ জুন প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর কাছে লিখিত অভিযোগ দেন এবং মামলার বাদী আমেরিকায় পলাতক দেশদ্রোহী প্রিয়া সাহার অন্যতম সহযোগী হিসেবে উল্লেখ  করেন।

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এডাভোকেট এ এইচ এম জিয়া উদ্দীন বলেন একজন আইনজীবী যদি হয়রানির শিকার হয় তাহলে সাধারণ মানুষের অবস্থা কি হবে, যার কারণে চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতির অধিকাংশ আইনজীবী পল্টন দাশের পক্ষে আদালতে দাড়ান। উক্ত মহিলার ডিএনএ রির্পোট না আসা পর্যন্ত আসামিকে দোষী প্রমাণিত করা সম্ভব নয় বিদায় আদালত আসামিকে জামিন দিয়েছে বলে তিনি জানান।

জামিনে মুক্ত এডভোকেট পল্টন দাশ এর এর পিতা রাঙ্গুনিয়া আইনজীবী সমিতির সভাপতি এডভোকেট বঙ্কিম চন্দ্র দাশ চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সকল সদস্যদের নিকট কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছেন।