ঝালকাঠি প্রতিনিধিঃ অবশেষে ঝালকাঠিতে সনদজালিয়াতি ও প্রতারনার মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধা তালিকাভূক্ত হওয়া নেহালপুর গ্রামের সৈয়দ আলী দুয়ারীর পুত্র ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা সুলতান আহম্মেদ দুয়ারী এবার বেকায়দায় পড়েছে। এক অভিযোগে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটির সদস্যরা সরেজমিন অনুসন্ধান ও কাগজপত্র যাচাই-বাছাই কালে সুলতান আহম্মেদ দুয়ারীর থলের বেড়াল বেরিয়ে এসেছে। এঅবস্থায় কমিটির সদস্য সচিব ইউএনও মোঃ মকবুল হোসেন স্বাক্ষরিত এক তদন্ত প্রতিবেদনে সুলতান আহম্মেদ দুয়ারীর মুক্তিযোদ্ধা সনদ-ভাতা বাতিল সহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনে অনুরোধ জানিয়েছে।
জানাগেছে, বাদী সুলতান হোসেন মাঝি, পিতা-সৈজউদ্দিন, পিপলিতা সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটির কাছে পার্শ্ববর্তি নেহালপুর গ্রামের সুলতান আহম্মেদ দুয়ারীর বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধার সনদ আত্মসাৎ করে জাল-জালিয়াতি ও প্রতারনার অভিযোগ করেন। কমিটির পক্ষ থেকে বাদী ও বিবাদীকে তাদের বক্তব্য ও বৈধ কাগজপত্র নিয়ে সভায় উপস্থিত থাকার জন্য নোটিশ করলে উভয়ে যাচাই-বাছাই কমিটির সভায় উপস্থিত হয়ে তাদের স্ব স্ব বক্তব্য ও কাগজপত্র প্রদান করেন।
বাদী অভিযোগে উল্লেখ করেন, বিবাদী তাকে ধোকা দিয়ে তার কাছ থেকে মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক এমএজি ওসমানী প্রদত্ত সনদটি হাতিয়ে নিয়ে তার পিতার নাম পরিবর্তন করে সনদপত্রে নিজের ও তার পিতার নামে লিখিয়ে গেজেটভূক্ত করে ২০০৫সাল থেকে দীর্গ ১২ বছর পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে মুক্তিযুদ্ধের দেয়া ভাতা সহ অন্যান্য ফায়দা লুটছে। জালিয়াতীর প্রমান হিসাবে বিবাদী জাতীয় পরিচয়পত্র, ওয়ারিশ সনদ, বিবাদীর দায়েরকৃত একাধিক মামলা-জিডিতে উল্লেখিত নাম, দলিল-রেকর্ডেপত্র ও তার প্রা: বি: চাকুরিরত স্ত্রীর পরিচয় পত্রে স্বামীর নাম উল্লেখকৃত কাগজপত্র জমাদেন।
সরেজমিন তদন্ত কালে দেখা যায়, বিবাদী সুলতান আহম্মেদ দুয়ারীর পিতা সৈয়দ আলী দুয়ারী নেহালপুর গ্রামের বাসিন্ধা হওয়া সত্বেও জালিয়াতীর মাধ্যমে পিতার নাম ও ঠিকানা পাল্টে জাল-জালিয়াতীর মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধাদের দেয়া সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছেন। যে কারনে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটির পক্ষ থেকে স্মারক নং০৫.১০.৪২৪০.০০২.০২.০০৩.১৭- ৫৬১ এর মাধ্যমে উক্ত তদন্ত প্রতিবেদন জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল মহাপরিচালক বরাবরে প্রেরন করেন।
তাছাড়াও ইতিপূর্বে ঝালকাঠি জেলার প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ এমএ বায়জিদের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত এক তদন্ত প্রতিবেদনেও সুলতান আহম্মেদ দুয়ারীর পিতা সৈয়দ আলী দুয়ারী গ্রাম নেহালপুর, কীর্তিপাশাকে একজন অমুক্তিযোদ্ধা হওয়ায় তার সনদ-গেজেট বাতিলের সুপারিশ সহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের অনুরোধ করেন।
এ অবস্থায় সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটির সদস্য-সচিব ইউএনও মোঃ মকবুল হোসেন সহ কমিটির সদস্য এম মোতালেব আলাউদ্দিন, সামসুল হক আক্কাস, আলতাফ আলী খান, মকবুল হোসেন ও শাহজাহান হাওলাদার সর্বসম্মতিক্রমে সুলতান আহম্মেদ দুয়ারীর বিরুদ্ধে এ তদন্ত প্রতিবেদন প্রদান করেন।