মোঃ নজরুল ইসলাম, ঝালকাঠিঃ ঝালকাঠির কাঠালিয়ার সাংবাদিক এইচএম বাদলের ওপর নির্মম নির্যাতন ও হত্যার চেষ্টার ঘটনায় উপজেলা চেয়ারম্যান কিবরিয়া সিকদারসহ তার বাহিনীর বিরুদ্ধে ঝালকাঠি জেলাসহ সকল সাংবাদিকরা তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে। নির্যাতনকারিদের বিচার দাবি করে ইতিমধ্যে বিভিন্ন জেলায় কর্মসূচি পালনের পাশাপাশি জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। এমনকি উপজেলা চেয়ারম্যানসহ নির্যাতনকারিদের বিরুদ্ধে কাঠালিয়া থানায় মামলা না নেয়ায় আদালতে মামলা দায়ের করা হয়। গত ২১ মে আদালত মামলার প্রেক্ষিতে কাঠালিয়া ওসিকে এজাহার রেকর্ড করতে নির্দেশনা দিলেও আজ পর্যন্ত তা রেকর্ড হয়নি। এ অবস্থায় জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সরদার মো. শাহ আলম বিষয়টি আলোচনা সাপেক্ষে সমাধানের উদ্যোগ নেন। তার আহ্বানে সাড়া দিয়ে ঝালকাঠির সাংবাদিকরা গত ২২ মে জেলা পরিষদ কার্যালয়ে এক বৈঠকে বসেন। সেখানে কাঠালিয়া উপজেলা চেয়ারম্যানের পক্ষে শৌলজালিয়া ইউপি চেয়ারম্যানসহ একাধিক ইউনিয়নের চেয়ারম্যানবৃন্দ ও ঝালকাঠি সাংবাদিক নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে এ ঘটনা সমাধানে একটি সিদ্ধান্তে উপনীত হয়। কিন্তু জেলা আওয়ামীলীগ সভাপতির সিদ্ধান্ত ও নির্দেশনা সাংবাদিকরা মেনে নিলেও আজ পর্যন্ত তার সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে টালবাহানা করে যাচ্ছে উপজেলা চেয়ারম্যান কিবরিয়া সিকদার। এ অবস্থায় বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম (বিএমএসএফ) বাধ্য হয়ে চিকিৎসাধিন সাংবাদিক বাদলের নিরাপত্তা এবং ন্যায় বিচার পেতে আইনি লড়াই চালিয়ে যাবার সিদ্ধান্ত নেয়। পাশাপশি এ বিষয়ে জেলা আওয়ামীলীগ সভাপতির সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করে উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগ আহ্বায়ক টালবাহানা করায় সাংগঠনিক ভাবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ারও দাবি জানায়। একই সাথে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের উদ্যোগ বাস্তবায়ন না হওয়ায় বিএমএসএফ এক সভা আহ্বান করে। সভায় সর্ব সম্মতিক্রমে কাঠালিয়া থানায় মামলা রেকর্ড করতে এবং উপজেলা চেয়ারম্যানের অপকর্ম ও দূর্নীতির তথ্য সংগ্রহ করে প্রধানমন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। একই সাথে এর সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত কাঠালিয়া উপজেলা চেয়ারম্যানের সকল সংবাদ বর্জন এবং অপকর্ম দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বিএমএসএফ’র এই সিদ্ধান্তের সাথে ঝালকাঠি প্রেস ক্লাব, জাতীয় সাংবাদিক সংস্থা, টেলিভিশন সাংবাদিক সমিতিসহ সাংবাদিকদের সকল সংগঠন একাত্মতা প্রকাশ করেছে। উল্লেখ্য ফেইসবুকের একটি সংবাদে লাইক দেয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে গত ১৬ মে কাঠালিয়ার সাংবাদিক এইচএম বাদলকে ধরে নিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান ও তার দলবল হত্যার উদ্দেশ্যে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। এ সময় বাদলের ক্যামেরা ২টি মোবাইল, নগদ টাকা ও ৩শ টাকার ষ্ট্যাম্পে জোড়পূর্বক স্বাক্ষর নেয়া হয়। ঘটনার পর থেকেই বাদল ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধিন থাকায় তার নাম কেটে দেয়ার জন্য পায়তারা চালিয়ে মামলা তুলে নেয়ার হুমকী দেয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে বাদল ঝালকাঠি থানায় পৃথক একটি জিডি করেছে। এদিকে বাদলের শারীরিক অবস্থার উন্নতি না হলেও কিবরিয়ার লোকজন হাসপাতালের চিকিৎসকদের ওপর প্রভাব বিস্তার করে নাম কাটানোর অপচেষ্টা চালায়। বাদলের চিকিৎসকরা জানায়, পুরোপুরি সুস্থ্য হয়ে ওঠতে আরো দেড় থেকে দু মাস
সময় লাগবে।