ঝিনাইদহ সংবাদদাতাঃ ঝিনাইদহ-যশোর সড়কের কালীগঞ্জ উপজেলার খয়েরতলা বাকুলিয়া স্থানে রাস্তা নির্মানের ২০ দিনের মধ্যে নষ্ট হয়ে গেছে। ব্যস্ততম এই সড়কের কোল্ডস্টোর এলাকায় রাস্তার দুই পাশ ডেবে গেছে। ঝুকি নিয়ে দুরপাল্লার যানবাহন চলাচল করছে। প্রিয়োডিক মেইনটেনেন্স প্রজেক্টের (পিএমপি মেজর) আতওতায় ঝিনাইদহ সড়ক ও জনপথ বিভাগ কাজটি বাস্তবায়ন করছে। এ নিয়ে পথচারী ও এলাকাবাসির মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়েছে। ঝিনাইদহ সড়ক বিভাগ সুত্রে জানা গেছে, প্রিয়োডিক মেইনটেনেন্স প্রজেক্টের (পিএমপি মেজর) আতওতায় ঝিনাইদহ যশোর সড়কের চারটি স্থানে টেন্ডার পেয়ে কাজ করেন ঠিকাদার মিজানুর রহমান মাসুম। কিন্তু সিডিউল মোতাবেক সঠিক ও যথাযথ ভাবে কাজ না করায় মাত্র ২০ দিনেই কালীগঞ্জ উপজেলার খয়েরতলা বাকুলিয়া অংশটি ডেবে গেছে। এ নিয়ে হৈচৈ পড়ে গেছে। ৫ কোটিরও বেশি টাকার এ সব কাজ নি¤œমানের হওয়ায় সমালেচনার মুখে পড়েছে সড়ক বিভাগ।
ঝিনাইদহ শহরের সরকারী বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের কাছে সওজের আরেকটি রাস্তা অল্প দিনেই পিচ ও পাথর উঠে গেছে। এই রাস্তায় ১২ মিলি খোয়া দেওয়ার কথা থাকলেও তা দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। হরিণাকুন্ডুর আমতলা তেলটুপি রাস্তায় যেনতেন ভাবে কাজ করে দুই কোটি ৩২ লাখ টাকা জুনের আগেই তুলে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। এই সড়কের বিভিন্ন অংশে লেনথ ও খোয়ার থিকনেস কম দেওয়া হয়। কাজটি করেন বাগেরহাটের ঠিকাদার মোজাফফর। রাস্তাগুলো তদন্ত ও ল্যাব টেষ্ট করলেই সরকারের কোটি কোটি টাকা লোপাটের তথ্য পাওয়া যাবে। এদিকে যেনতেন ভাবে কাজ করে সড়ক বিভাগের টাকা এ ভাবে লুটপাটের ফলে ঝিনাইদহের নির্বাহী প্রকৌশলীকে হেড অফিস থেকে শোকজ করা হয়েছে। তিনি তার জবাবও দাখিল করেছেন।
অভিযোগ উঠেছে সওজের এসও মনিরুল ও ওয়ার্ক এ্যসিসটেন্ট আতিয়ার রহমানের কালীগঞ্জের কাজটি দেখভাল করেছেন। কিন্তু তারা ঠিকাদারের সাথে যোগসাজস করে সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পের টাকা হরিলুট করেছেন এমন কথা সাধারণ মানুরে মুখে উচ্চারিত হচ্ছে। কালীগঞ্জ পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বাকুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা চুন্নু মিয়া নি¤œমানের কাজে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি গুরুত্বপুর্ন সড়কটি পুনরায় যথাযথ ভাবে করার দাবী জানিয়ে বলেন এ ভাবে সরকারী টাকা শ্রাদ্ধ করার কোন যৌক্তিকতা নেই। তিনি দাবী করেন মাত্র ১৫/২০ দিন আগে রাস্তাটি করা হয়। এখনো রোলারসহ সরঞ্জাম সাইটে পড়ে আছে। একই ভাবে ক্ষোভের কথা জানান, কালীগঞ্জের বাকুলিয়া গ্রামের মার্জেদ আলী, আবু জাফর, খয়েরতলা গ্রামের আবুল কাশেম, আজিজুল ইসলাম ও মহিউদ্দীন।
তাদের ভাষ্য কাজটি সঠিক ভাবে করা হলে মাত্র ১৫/২০ দিনে নষ্ট হওয়ার কথা নয়। কাজের ঠিকাদার মিজানুর রহমান মাসুম বলেন, আমি চারটি পয়েন্টে কাজ করেছি। কোন স্থানে কাজ খারাপ হয়নি। কিন্তু কালীগঞ্জের খয়েরতলা বাকুলিয়া অংশে রাস্তার মুল বেইজ খারাপ হওয়ার কারণে বর্ষার পানি পেয়ে নষ্ট হয়েছে। আমার পাথর দিয়ে ম্যাগাডামের পর কার্পেটিং করার কথা সেটি আমি করেছি। কাজে কোন ত্রুটি ছিল না। তিনি নষ্ট হওয়া অংশটি নিজ উদ্যোগে মেরামত করবেন বলেও জানান। বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সেলিম আজাদ খান বলেন, কাজটি এখনো শেষ হয়নি, চলমান রয়েছে। কিন্তু শেষ করা রাস্তা কেন এমন হলো আমি তদন্ত করে দেখছি। তিনি বলেন অতিবৃষ্টির কারনে এমন হতে পারে। তিনি অনিয়ম দুর্নীতির কথা অস্বীকার করেন। সড়ক বিভাগের যশোর অফিসের তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (এএসই) সুরুজ মিয়া জানান, রাস্তা যে ভাবে করার কথা সে ভাবেই তো হয়েছে। কেন এমন হলো তা তদন্ত করে দেখা হবে। তিনি বলেন এই রাস্তা পিএমপি মাইনর প্রজেক্টের কাজ। আমি যতদুর জানি এটা রিপিয়ার সিলকোটের কাজ ছিল।