ঠাকুরগাঁওয়ে হত্যা মামলায় ব্যক্তিকে মৃত্যুদন্ড

প্রকাশঃ ২০২২-০৭-২৭ - ১৮:৩৮

ঠাকুরগাঁও : ঠাকুরগাঁওয়ে হত্যা মামলার একমাত্র আসামী মাফিজুল ইসলাম (২৩) নামে একজনকে মৃত্যুদন্ড দিয়েছেন আদালত।

বুধবার (২৭ জুলাই) দুপুরে ঠাকুরগাঁও জেলা দায়রা জজ মামুনুর রশিদ এ রায় ঘোষণা করেন।

মৃত্যুদণ্ডাদেশ প্রাপ্ত আসামী মো. মাফিজুল ইসলাম জেলার রাণীশংকৈল উপজেলার বলিদ্বারা গ্রামের মৃত রিয়াজ আলীর ছেলে।

৮৩/২০১৫ নং মামলার একমাত্র আসামী মাফিজুল ইসলাম এর বিরুদ্ধে রাস্ট্রপক্ষে দন্ডবিধি’র ৩০২ ধারায় আনীত অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় পেনাল কোডের ৩০২ ধারায় বর্ণিত সর্বোচ্চ শাস্তি মুত্যুদন্ডে দন্ডিত করা হয় এবং আসামীকে একই সাথে ১ লক্ষ টাকা জরিমানা দন্ডে দন্ডিত করেন জেলা দায়রা জজ।

এছাড়াও সুপ্রীম কোর্টের হাইকোট বিভাগের অনুমোদন সাপেক্ষে দন্ডিত আসামী মাফিজুল ইসলামকে যতক্ষণ পর্যন্ত তার মৃত্যু না হয় ততক্ষণ পর্যন্ত ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যু দন্ডাদেশ কার্যকর করার জন্য নির্দেশ এবং জরিমানার অর্থ ভিকটিমের সন্তান দ্বয়কে প্রদান করার জন্য ও আসামী বরাবরে সাজা পরোয়ানা সহ গ্রেফতারী পরোয়ানা ইস্যু করার নির্দেশ প্রদান করেন।

মামলার বিবরণে জানা যায়, গত ৯ সেপ্টেম্বর ২০১২ রাত অনুমান ৭ টা ৪৫ মিনিটে রাণীশংকৈল উপজেলার বলিদ্বারা গ্রামে মো.দুলাল হোসেনের বাড়ির ভিতর আঙ্গিনায় তার স্ত্রী জোৎন্সা বেগম (২৩) সহ তার দুই সন্তানকে লেখাপড়া করাচ্ছিল।

এসময় হঠাৎ করে আসামী মাফিজুল ইসলাম বাড়িতে প্রবেশ করে ছুড়ি দিয়ে এলোপাথারীভাবে আঘাত করে জোৎন্সাকে গুরুত্বর রক্তাক্ত জখম করে। এতে জোৎন্সা বেগম চিৎকার দিয়ে মাটিতে লুটেপড়লে কিছুক্ষণের মধ্যে মারা যান তিনি।

এসময় দুলালের ছেলে মেয়ে ও তার চাচা চাচির চিৎকারে আসামী ঘটনাস্থল থেকে দৌড়ে পালিয়ে যায়।

এছাড়াও দুই বছর আগে মাফিজুল ইসলাম জোৎন্সা বেগমের সাথে জোর পূর্বক প্রেম ভালবাসার সম্পর্ক করার চেষ্টা করলে এলাকায় এই বিষয়ে ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও গুনিজন ব্যক্তি দ্বারা শালিশ বৈঠক হয়।

ওই বৈঠকে মাফিজুল ইসলাম ১৫ হাজার টাকা আর্থিক জরিমানাও প্রদান করেন। পরে আবার মাফিজুল ইসলাম দুলাল হোসেনের স্ত্রী জোৎন্সা বেগমের সাথে গোপনে গোপনে পুনরায় প্রেম ভালবাসার চেষ্টা করলে তা প্রত্যাখান করায় ক্ষিপ্ত হয়ে ও পরিকল্পিতভাবে জোৎন্সাকে র্মমান্তিকভাবে হত্যা করে।

এ ঘটনায় বাদি হয়ে রাণীশংকৈল থানায় দুলাল হোসেন মাফিজুল ইসলামকে একমাত্র আসামী করে একটি মামলা করেন ৯ সেপ্টেম্বর ২০১২ ইং তারিখে। পরে তৎকালীন রাণীশংকৈল থানার সাব ইন্সপেক্টর মো. রেজাউল আলম মামলাটি তদন্ত করে তদন্ত প্রতিবেদন ৩১ মে ২০১৩ সালে আদালতে জমা দেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এ্যাড. শেখর কুমার রায় এ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা ও নারীর প্রতি যে কোন ধরনের সহিংসতা বন্ধে এটি একটি যুগান্তকারী রায়।

আদালত ৮৩/২০১৫ নং মামলায় একমাত্র আসামী মাফিজুল ইসলামের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষে দন্ডবিধি ৩০২ ধারায় আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীত ও সন্তোষজনকরুপে প্রমাণিত হওয়ায় পেনাল কোডের ৩০২ ধারার বর্ণিত সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত এবং একই সাথে ১ লাখ টাকা জরিমানার আদেশ প্রদান করেছেন।