ডুমুরিয়ায় উপজেলা পরিষদের ১২ লক্ষ টাকা চেয়ারম্যান ও সিএ-২ মধ্যে ভাগবাটোয়ারা

প্রকাশঃ ২০২৪-১০-০৬ - ১৬:৪২

ডুমুরিয়া প্রতিনিধি : ডুমুরিয়ায় উপজেলা পরিষদের ইমারত স্থাপনা নির্মাণ অনুমোদন প্রকল্পের ১২ লাখ টাকা উপজেলা চেয়ারম্যান ও সিএ-২ প্রশাসক রাজস্ব ফান্ডে জমা না দিয়ে ভাগাভাগি করে নিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি জানাজানির পর নড়েচড়ে বসেছে উপজেলা প্রশাসন। অভিযুক্তদের হাতে ধরিয়ে দেয়া হয়েছে কারণ দর্শানোর নোটিশ। তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেছেন এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বৃহত্তর ডুমুরিয়া উপজেলায় ইমারত নির্মাণ অনুমোদনের জন্য শত শত লোক উপজেলা পরিষদের দ্বারস্থ হয়ে থাকেন। অনুরূপভাবে ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে কয়েকশ’ ইমারত নির্মাণ অনুমোদনের আবেদন পড়ে উপজেলা পরিষদে। আবেদন দাখিলের পর ওই আবেদনকারিরা প্রাথমিকভাবে দ্বারস্থ হন অফিসের সিএ-২ প্রশাসক মুস্তাফিজুর রহমানের কাছে। এরপর তিনি নথিগুলো দেখে নানান অজুহাত তুলে ভূলত্রুটি ধরে অনুমোদন অসম্ভব বলে বেঁকিয়ে বসেন। তারপর শুরু হয় দেন দরবারের পালা। এমনটি উল্লেখ করে উপজেলার সাজিয়াড়া গ্রামস্থ ফারুক শেখ বলেন, তার একটি ফাইল দাখিলের পর নানান তালবাহানা করতে থাকে মুস্তাফিজুর। মাস খানেক হাঁটাহাঁটির পর মুস্তাফিজুর রহমান আবেদন কারি ফারুকের স্ত্রী ময়না বেগম কে সাফ জানিয়ে দেন ফাইল অনুমোদন করতে হলে গোপনে তাকে ২৭ হাজার টাকা ঘুষ দিতে হবে। অসহায় ফারুক আর‌ও বলেন, একটি টাকাও হাতে না থাকায় ঘুষ দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে মুস্তাফিজ ওই নথিটি ময়না বেগমের হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলেন এটা অনুমোদন হবে না, ফাইলটি বাড়ি নিয়ে যান। অনুরুপ ভাবে যে ময়না ঘুষ দিয়ে মুস্তাফিজকে খুশি করতে পেরেছে তার ফাইলটি অনুমোদন হয়েছে। এখানেই শেষ নয়, নীতিমালা অনুযায়ী অনুমোদনকৃত ইমারত স্থাপনে প্রতি স্কয়ার ফুটে এক টাকা হারে উপজেলা পরিষদের কৃষি ব্যাংক একাউন্ট তহবিলে জমা দেয়ার নির্দেশনা রয়েছে। তার‌ই ধারাবাহিকতায় গত ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে ওই একাউন্টে ১২ লক্ষাধিক টাকা জমা হয় বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়। কিন্তু দুঃখজনক বিষয় সাবেক উপজেলা পরিষদের দুর্নীতিবাজ চেয়ারম্যান গাজী এজাজ আহমেদ জমাকৃত টাকা রাজস্ব খাতে জমা না দিয়ে তার একান্ত আস্থাভাজন সিএ-২ প্রশাসক মুস্তাফিজের সহায়তায় নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে গোপনে ব্যাংক একাউন্ট থেকে ১২ লক্ষ টাকা উত্তোলন করে ভাগাভাগি করে নিয়েছেন।যা নিয়ম বহির্ভূত।
আনীত বিভিন্ন অভিযোগ ও ১২ লক্ষ টাকা ভাগাভাগির বিষয়ে জানতে চাইলে সিএ-২ প্রশাসক মুস্তাফিজ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যানের নির্দেশে ফারুক – ময়নার নিকট ঘুষের টাকা চাওয়া হয়েছিল, এছাড়া কৃষি ব্যাংক একাউন্ট থেকে ১২ লক্ষ টাকা উত্তোলন‌ও করা হয়েছে। এ বিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যানের (০১৯২০৩৬৩৬৫৩ নম্বর) মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও ফোনটি বন্ধ থাকায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। ঘটনা প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ আল আমিন বলেন, বিষয়টি নলেজে রয়েছে, প্রাথমিকভাবে তাদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রমে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।