ডুমুরিয়া : খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার হাট বাজারে পেঁপে ছড়া বাজারে প্রচলিত সব ধরনের সবজির দামই অস্বাভাবিক বেড়েছে। ১০০ টাকার নিচে মিলছে না কোনো সবজি। কেজিতে ২০ থেকে ২৫ টাকা বেশি। এভাবেই প্রতিদিন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে সবজিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দম। ডুমুরিয়া সবজির বাজার ঘুরে দেখা গেছে, শিম বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ২০৫ টাকায়। টমেটো ২৭০ ও বেগুন ১২০-১৩০ টাকা চাইছেন বিক্রেতার। এমন অবস্থায় চরম বিপাকে পড়েছেন সাধারণ ক্রেতারা। বাধ্য হয়ে অনেকেই সবজি ১ কেজির পরিবর্তে কিনছেন আধা কেজি।
এছাড়া অধিকাংশ নেয়াই ২৫০ বা ৫০ গ্রাম ওজনে সবজি কিনছেন। কাচা মরিচ ধরা-ছোঁয়ার বাইরে কেজি ৩৮০ থেকে ৪০০ টাকা।
সালেহা নামে এক গৃহিণী বলেন, ২৫০ গ্রাম কাঁমমরিচ কিনলাম ১০০ টাকায়। হিসেবে দেখছি ১টি মরিচের দাম ও টাকা পড়লো। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে খুলনার ডুমুরিয়া একাধিক বাজার ঘুরে একই তথ্য পাওয়া গেছে। সরেজমিনে দেখা যায়, দোকানগুলোকে করলা, বেগুন, পটল, কাঁচা পেঁপে, শসা, বরবটি, মিষ্টিকুমড়া, মান কচুর , ঢেঁড়স, পালং শাক, লাল শাক, কলমি শাক, কচু শাক দাড়িয়ে রাখা হয়েছে। এছাড়া শীতের আগাম সবজির মধ্যে
ফুলকপি, বাঁধাকপি, মূলা, শিম, টমেটো, লাউ, গাজর, বেগুন এবং ধনেপাতাও বিক্রির জন্য রাখা হয়েছে। এসব সবজির মধ্যে শতকরা ৮০ শতাংশের সমই ১০০ টাকা
কেজি চাওয়া হচ্ছে। কয়েকদিন আগেও কাঁচা পেঁপের দাম কেজি ছিলো ২০ টাকা। সেই পেঁপে এখন ৪০-৪৫ টাকা কেজি। এই সবজিটির দাম এখন সর্বনিতে। আর সর্বোচ্চ দাম হাঁকা হচ্ছে শিম, গাজর, বেগুন, ফুলকপি ও বাঁধা কপি। আকার ও মানভেদে প্রতি কেজি শিম ১৫০-২০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া নতুন ফুলকপি আকারভেদে প্রতি কেজি ১০০-১১০ টাকা, বেগুন জাতভেদে ১০০-১৯৫ টাকা দামে বিক্রি করা হচ্ছে। এছাড়াও চিচিঙ্গা ১০০ টাকা, কচুর লতি ১০০ টাকা, পটল ১০০ টাকা, টমেটো ৩০০ টাকা, করে বিক্রি হচ্ছে। খুচরা বাজারের বিক্রেতারা বলছেন, অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণেই সবজির দাম হঠাৎ বেড়েছে। তবে বৃষ্টি কমলে বাজারে সবজির সরবরাহ বাড়বে, তখন আবার হাতের নাগালে চলে আসবে। আবার অনেকেই বলছেন, অতিরিক্ত বৃষ্টি ওবন্যার কারণে ডুমুরিয়া , চুকনগর, আঠারো মাইল বাজারে বাড়তি চাপ পড়েছে।
টিপনা নতুন রাস্তা বাজারে সবজি ক্রয় করতে আসা সলেমান নামের এক ক্রেতা বলেন, এভাবে চললে কিছুদিন পর সবজি ছাড়াই খেতে হবে।
তবে বিক্রিতারা বলছেন, খুলনার দক্ষিণ অঞ্চলে বৃষ্টি ও বন্যাত কারণে এমন পরিস্থিতি হয়েছে। অধিকাংশ সবজি তো পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
জলিল শেখ নামের আরেক বিক্রেতা বলেন, সব সবজির দামই চড়া। তাই ক্রেতারা বেশি সবজি নেয় না। অনেক ক্রেতাই এখন আধা কেজি (৫০০ গ্রাম) সবজি বেশি নিচ্ছেন।
ক্রেতারা বলছেন, সবজির উর্ধ্বমুখী বাজারে নাভিশ্বাস অবস্থা। শিখখিরাই বাজার তদারকি বাড়িয়ে সবজির সরবরায় বাড়াতে সরকারের সরাসরি হস্তক্ষেপ প্রয়োজন বলেও মনে করছেন অনেকে।
মহিদুল ইসলাম নামে এক ক্রেতা বলেন, দুই-তিনটা সবজি কিনলেই টাকা শেষ হয়ে যাচ্ছে। তাহলে অন্যান্য বাজার কিভাবে করবো? এ বিষয়গু সরকারের পক্ষ থেকে সরাসরি তদারকি করা প্রয়োজন। বন্যা-বৃষ্টি হলে যেন সবজি বা নিত্যপ্রয়োজনীয় বাজার ক্রেতার নাগালের বাইরে চলে না যায় এ বিষয়ে আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে হবে।
মনিরুজ্জামান সরদার নামের আরেক ক্রেতা বলেন, কাঁচামরিচ কিনতেই পকেট ফাঁকা। আর অন্যান্য সবজি কেনার মতো উপায় নেই। ১০০ টাকার নিচে কোনো সবজি নেই। বাজারে এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে সাধারণ মানুষের কি করে সবজি খাবে। এছাড়া আগে থেকেই বাজারে উত্তপ ছড়াচ্ছে নিত্যপণ্য।
বর্তমানে দেশি পেঁয়াজ ১২০-১৯৫ টাকা, আমদানি করা পেঁয়াজ ১৫- ১০৫ টাকা, দেশি রসুন ১১০-১২০ টাক আমদানি করা রসুন দেশি আদা ৪৫০ ৫০০ টাকা, আমদানি করা আদা ১৫০-৫০০ টাকা, দেশি লাল মরিচ ৩৫০ টাকা, আমদানি কার শুকনো মরিচ ৫০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।