ডুমুরিয়া (খুলনা) প্রতিনিধি : ডুমুরিয়া উপজেলার মাগুরখালী ইউনিয়নে মহানামযজ্ঞ অনুষ্টানকে ঘিরে ব্যাপক তোড়জোড় শুরু হয়েছে। ৮ দিন ব্যাপি ধর্মীয় উৎসবে রয়েছে হরিনাম সংকীর্ত্তন, শাস্ত্রীয় আলোচনাসহ ধর্মীয় যাত্রাপালা। এছাড়া ভারতীয় উপমহাদেশের ৫১ তীর্থক্ষেত্র প্রদর্শনী হিসেবে যজ্ঞভুমির চারপাশ জুড়ে নির্মিত হচ্ছে শতাধিক মাটির মুর্ত্তি-প্রতিমা। আবার বিনোদনের জন্য প্রায় ১০ বিঘা জমি ওপর বসছে আনন্দ মেলা ও সার্কাস। আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারী সন্ধ্যায় মঙ্গলদ্বীপ প্রজ্জ্বলন ও ভাগবত আলোচনার মধ্যে দিয়ে অনুষ্ঠানের শুভ সুচনা করা হবে।
আয়োজক কমিটি সুত্রে জানা গেছে, ডুমুরিয়া উপজেলার মাগুরখালী ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন, কে, এম ইউনিয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠিত হবে ৭ম বর্ষীয় মহানামযজ্ঞ অনুষ্টান। আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারী সন্ধ্যায় সার্বিক ব্যবস্থাপক, ইউপি চেয়ারম্যান বিমল কৃষ্ণ সানা’র সভাপতিত্বে মৎস্য ও প্রানীসম্পদ মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ এমপি অনুষ্টানের শুভ সুচনা ও উদ্বোধন করবেন। এরপর তিনব্যাপি চলবে ২৪ প্রহর মহানাম ও হরি সংকীর্ত্তন। নামসুধা পরিবেশনায় রয়েছে মাদারীপুরের রঘুনাথ জিউ সম্প্রদায়, রাজবাড়ীর যোগমায়া সম্প্রদায়, মাগুরার রাই কিশোরী সম্প্রদায়, খুলনার নিত্যানন্দ সম্প্রদায়, শিশু কৃষ্ণ সম্প্রদায় ও প্রভু গৌরভক্ত সম্প্রদায়। ২৬ ফেব্রুয়ারী অনুষ্ঠিত হবে কুঞ্জভঙ্গ, নগর কীর্ত্তন, ভোগ আরতী ও মহাপ্রসাদ বিতরণ। ২৭ ও ২৮ ফেব্রুয়ারী দুইদিন ব্যাপি চলবে ধর্মীয় যাত্রাপালা মা-মাটি-মানুষ ও ফাঁসির মঞ্চে বাদশাহ। এরপরেই ১লা ও ২রা মার্চ দুইদিন ব্যাপি অনুষ্ঠিত হবে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্টান। এছাড়াও রয়েছে বিনোবনমুলক অনুষ্টান সার্কাস ও আনন্দ মেলা। প্রায় ১০ বিঘা জমির ওপর বসছে এ বাজার মেলা। বৃহৎ এ ধর্মীয় অনুষ্টান’কে ঘিরে আয়োজক কমিটি প্রায় তিন মাস পূর্বে থেকেই মাঠে নেমেছে। বিশেষ করে যজ্ঞভুমির চারপাশ জুড়ে নির্মিত হচ্ছে মাটির মুর্ত্তি প্রতিমা। ভারতীয় উপমহাদেশের ৫১ তীর্থক্ষেত্র প্রদর্শনী হিসেবে দেব-দেবতার মুর্ত্তি নির্মাণ কাজ চলছে সেখানে। অনুষ্টানে দায়িত্বে নিয়োজিত প্রধান শিক্ষক বিধান চন্দ্র মন্ডল, প্রভাষক সরোজ কুমার মন্ডল, অধ্যক্ষ দেব প্রসাদ মন্ডল, ইউপি সদস্য প্রসাদ মন্ডল, উদয় মল্লিক ও সুকৃতি মন্ডল জানান, বিগত বছরের ন্যায় এবারও মাগুরখালী ইউনিয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে আয়োজন করা হয়েছে ৮ দিন ব্যাপি ৭ম বর্ষীয় মহানামযজ্ঞ অনুষ্টান। আলাদিপুর ও মাগুরখালীসহ আশপাশ গ্রামবাসীর সহযোগিতায় উৎসবটির আয়োজন করা হচ্ছে। তাই প্রতি বছরের ন্যায় এবারও রয়েছে বৃহৎ আয়োজন। বিশেষ করে যজ্ঞভুমিসহ আশপাশ এলাকা জুড়ে থাকবে অত্যাধুনিক আলোক সর্জ্জা ও তোরণ। মুল পর্ব হরিনাম সংকীর্ত্তনের তিন দিনেই রয়েছে অন্ন প্রসাদের ব্যবস্থা। বৃহৎ এ অনুষ্টানে হাজার হাজার লোকের সমাগম ঘটে। ১০ বিঘা জমির ওপর বসবে আনন্দ মেলা ও বাজার। বাজারে শ’ শ দোকান বসে। মহানামযজ্ঞ পরিচালনা পরিষদ’র সার্বিক ব্যবস্থাপক ও ইউপি চেয়ারম্যান বিমল কৃষ্ণ সানা বলেন, বিশ্ব শান্তি ও মঙ্গল কামনায় এবারও অনুষ্ঠিত হচ্ছে মহানামযজ্ঞ। মুলতঃ অনুষ্টানটি হিন্দু ধর্মলম্বীদের হলেও এখানে জাতি, বর্ণ ও দলমত নির্বিশেষে সকলেই অংশ গ্রহন করেন। প্রতি বছর হাজার হাজার মানুষের মিলন মেলায় পরিনত হয় এখানে। এ বছরও ব্যাপক লোক সমাগম হবে বলে আমার বিশ্বাস। তবে সার্বিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে তিনি জানান, অনুষ্টানটি সুষ্ট ভাবে সম্পন্ন করতে পর্যপ্ত সেচ্ছাসেবক কমিটি গঠন করা হয় এবং পুলিশ প্রশাসনও সর্ব সময় নিযোজিত থাকে।