ডুমুরিয়া প্রতিনিধি : ডুমুরিয়ায় শোভনা ইউনিয়নে খাবার পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। পানির ভূ-গর্ভের স্তর নেমে যাওয়ায় এ অঞ্চলের হাজার হাজর মানুষ এখন পানির জন্য হাহাকার করছে। দীর্ঘ লাইনে দাড়িয়ে এক কলসি পানির জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে ঘন্টার পর ঘন্টা।
উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ১৪ টি ইউনিয়নের মধ্যে ১২টি ইউনিয়নে মোট ২ হাজার ৬ শত গভীর নলকূপ রয়েছে। বাকী দুটি ইউনিয়নে গভীর নলকূপ স্থাপনে সফলতা না হওয়ায় ওই ইউনিয়নের মানুষ স্যালো টিউবওয়েলের পানি ব্যবহার করে আসছে। ্রমধ্যে ধামালিয়া ইউনিয়নে ২৭৬টি, রঘুনাথপুরে ২৫১টি, রুদাঘরায় ২৯১টি, খর্ণিয়ায় ২৮১টি, আটলিয়ায় ২৬৪টি, শোভনায় ২৬৪টি, শরাফপুরে ১৬১টি, সাহসে ২১৭টি, ভান্ডারপাড়ায় ২৫৯টি ও ডুমুরিয়ায় ৩৩৫টি গভীর নলকূপ সরকারী ভাবে স্থাপন করা হয়েছে। কিন্তু এছাড়াও ব্যক্তি মালিকানায় দ্বিগুনেরও বেশী গভীর টিউবওয়েল বয়েছে। যত্রতত্রগভীর সেচ বোরিং স্থাপন করায় এলাকায় এখন কোন টিউবওয়েলে পানি পাচ্ছেনা। অধিকাংশ টিউবওয়ের গুলো এখন অকেজো হয়ে পড়েছে। হাতে গোনা গুটি কয়েক টিউবওয়েলে পানি উঠলেও সেখানে ঘন্টার পর ঘন্টা দাড়িয়ে অপেক্ষা করতে হচ্ছে মানুষের।এ প্রতিবেদকের সাথে কথা হয় শোভনা গ্রামের পল্লী পশু ডাক্তার সজল আহমেদের সাথে। তিনি বলেন, গত ২ মাস ধরে আমাদের টিউবওয়েলে পানি পাচ্ছিনা। প্রায় ৩ কিলোমিটার সাইকেল চড়ে দুই কলসি পানি আনতে হচ্ছে প্রতিদিন। শোভনা পশ্চিমপাড়ার কলেজছাত্রী সানজিরা খাতুন, গৃহবধু মনজিলা বেগম, ডলি বেগম, আয়শা বিবি, দিপালী মন্ডল, গৌরি দাসসহ অনেকেই বলেন, আমাদের দুই গ্রামের মধ্যে একমাত্র শহীদুল সরদারের টিউবওয়েলে পানি উঠছে। আর ওই টিউরওয়েলে পানি আনতে গেলে অনেক পথ হেঁটে লাইন দিতে হয়। ভোর হতে গভীর রাত পর্যন্ত এভাবে চলে। শোভনা ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য দেবব্রত সরদার বলেন, বাগআঁচড়া, বাদুরগাছ ও মনোহরপুর গ্রামের কোন টিউবওয়েলে পানি পাচ্ছেনা। বর্তমানে এ অঞ্চলে সুপেয় পানির দারুন সংকট দেখা দিয়েছে। এমনকি বিলে সেচ বোরিংএ পানি উঠছেনা। শেষ মুহুর্তে বোরো ধানে পানি দিতে না পারায় কৃষকরা রয়েছে হতাশায়। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সুরঞ্জিত কুমার বৈদ্য বলেন,এলাকায় সুপেয় পানি সংকটে আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেছি এবং আশা করি দ্রুত একটা সমাধান হবে। উপজেলা উপ-সহকারী জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী পৃথ্বীশ মন্ডল জানান, অপরিকল্পিত ভাবে যত্রতত্র গভীর নলকূপ স্থাপন করায় পানির ভূ-গর্ভস্থ’র স্তর নেমে যাচ্ছে। তাছাড়া একটা স্তরে যে পরিমান পানি থাকার কথা সেখানে অধিক নলকূপ স্থাপন করায় এ সমস্যা দেখা দিচ্ছে। এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আশেক হাসান বলেন বিষয়টি নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। তাদের প্রতিবেদনের পর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করব।