ডুমুরিয়া (খুলনা) প্রতিনিধি : ডুমুরিয়া উপজেলার শোভনা ইউনিয়নের কদমতলা গ্রামের নিরঞ্জন মন্ডল বয়সের ভারে নুয়ে পড়লেও তার ভাগ্যে বয়স্ক ভাতা কার্ড মিলছে না। অসহায় এই লোকটির পক্ষ্যে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সচেতন মহলের লোকজন জনপ্রতিনিধিদের বার বার সুপারিশ করেও কোন কাজ হয়নি। অবশেষে সুপারিশকারী ওই লোকজন তাদের নিজস্ব অর্থায়নে তার মাসিক ভাতা’র ব্যবস্থা করেছে।
জানা গেছে, ডুমুরিয়া উপজেলার শোভনা ইউনিয়নের কদমতলা গ্রামের বাসিন্দা নিরঞ্জন মন্ডল (নিরেন গোসাই)। বয়সের তার ৮০ ছুই ছুই। পারিবারিক ভাবে স্ত্রী ৩পুত্র ও ১কন্যা সন্তানের জনক তিনি। কৃষিকাজ করেই চালাতেন তার সংসার। এখন বয়সের ভারে আর পেরে উঠছেন না। ছেলেদেরও পৃথক সংসার। তাই শেষ বয়সে তিনি হয়ে পড়েছেন একবারেই অসহায়। চোখেও ঠিকমত দেখতে পান না। ওদিকে স্ত্রী সুভদ্রা রানীও তিন তিন বার স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে শয্যাশায়ী হয়ে পড়েছেন। তার পক্ষ্যে প্রতিদিন সংসারিক খরচ ও ঔষধের টাকা জোগাড় করা সম্ভব হচ্ছে না। চরম দৈন্যতা আর অনাটনে চলছে তার দিনকাল। তার এই অভাবী জীবনে কিছুটা স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে গ্রামবসীরা হয়ে ওঠে তৎপর। ব্যাক্তিগত ভাবে আর্থিক সাহায্য’র পাশাপাশি সরকারী একটি বয়স্ক ভাতার কার্ডের জন্য তারা জনপ্রতিনিধিদের নিকটে সুপারিশ করেন বার বার। কিন্তু অদৃশ্য কারণে তার ভাগ্যে সেই ভাতা’র কাডটি মিলছে না। অবশেষে তাদের অর্থায়নে প্রতি মাসে ৫’শ টাকা করে ভাতা প্রদানের ব্যবস্থা করেছেন। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কদমতলা বাজারে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ’র সাধারন সম্পাদক অনিমেষ মন্ডলের উদ্যোগে এ টাকা প্রদান করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় নিরঞ্জন ঢালী, আ’লীগ নেতা অশোক সরদার, ইউনিয়ন মৎস্যজীবি লীগের সাধারন সম্পাদক দিপংকর মন্ডল, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা পবিত্র কুমার মন্ডল, ঠাকুর দাস মিস্ত্রী, ইনছান গাজী, হাকিম সানা, ডাঃ হরেন মন্ডল, সুভাষ সরকার, গৌতম মন্ডল প্রমুখ। এ সময় উপস্থিত নেতৃবৃন্দরা জানান, নিরেন গোসাই’ অত্যন্ত ভাল মানুষ। সে জন্ম থেকেই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। এমন কোন মিটিং মিছিল নেই সেখানে সে অংশ গ্রহন করেনি। বর্তমান আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকার পরও তার কার্ডটি হল না। আমরা জনপ্রতিনিধিদের বার বার বলেছি কিন্তু অদৃশ্য কারণে তালিকা থেকে তাকে বাদ দেওয়া হচ্ছে। তাই উদ্যোগ নিয়েছি উনি যতদিন বাঁচবেন ততদিন প্রতি মাসের পাঁচ তারিখের মধ্যে আমরাই তাকে ভাতা হিসেবে ৫’শ টাকা করে প্রদান করবো। আর আমরা তার নামে একটি তহবিল গঠন করিেছ। ইউপি সদস্য অশোক কুমার মন্ডল বলেন, ওয়ার্ডের মধ্যে নিরঞ্জন মন্ডল অবশ্যই ভাতা পাওয়ার যোগ্য। এবারও তালিকা করার সময় আমি তার নামটি এক নম্বরে লিখে পরিষদে জমা দেই। কিন্তু দেখি অদৃশ্য কারণে তার নাম নেই। তাই ক্ষোভে দুঃখে ভাতা প্রদানের ওই সীটে আমি সহিও করিনি।