ডুমুরিয়ায় কৃষকের বাজারে প্রতিমাসে অর্ধকোটি টাকার সবজি বিক্রি

প্রকাশঃ ২০২৩-০২-০২ - ১৩:১১

ইউনিক ডেস্ক : কৃষি ভিত্তিক ক্ষুদ্র ও মাঝারী প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে আবদান রেখেছে। কৃষি বিপণন অধিদপ্তর কর্তৃক ফ্রেসকাট শাক-সবজি ও ফলমূল প্রক্রিয়াজাতকরণ ও বিপণন কার্যক্রম সম্প্রসারণ কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এই কর্মসূচির আওতায় খুলনার ডুমুরিয়ায় চেচুড়িয়া এলাকায় ২০২২ সালে চালু করা হযেছে কৃষকের বাজার। এই বাজারে প্রান্তিক চাষিরা তাদের উৎপাদত সবজি নিয়ে এসে ন্যায্য মূলে বিক্রি করেন। ফলে কৃষকরা ফড়িয়াদের হাতে আর জিম্মি হচ্ছেনা। এই বাজার থেকে প্রতিদিন ৪০০ মেট্রিকটন সবজি নিয়ে ৭০টি ছোট বড় ট্রাক পদ্মা সেতু পার হয়ে ঢাকা যাচ্ছে। এই বাজারে প্রতিদিন দেড়লাখ টাকার সবজি বিক্রি হচ্ছে। সে মতে মাসে অর্ধকোটি টাকার পণ্য বিক্রি হচ্ছে।

সূত্র জানিয়েছেন, খুলনায় বিপুল পরিমান সবজি উৎপাদন হচ্ছে। এর একটি বড় অংশ উৎপাদন হচ্ছে ডুমুরিয়ায়। কৃষকেরা বাজারের তুলনায় অপেক্ষাকৃত কম ও খুচরা বাজারের তুলনায় বেশী পণ্য ব্যবসায়ীরা বিক্রি করতে পারবে। ক্রেতার সাথে দরকষাকষি করে তাদের উৎপাদিত ফসল বিক্রি করতে পারছেন। কৃষকের বাজার প্রতিদিন বিকেল থেকে রাত ১টা পর্যন্ত চলে। বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা এখান থেকে দরকষাকষি করে সবজি কিনে ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে পাঠিয়ে  থাকেন। এখানে মধ্যসত্বভোগী বা দালালের প্রবনতা নেই। প্রান্তিক চাষিরা ন্যায্যমূলে সহজে তাদের পন্য বিক্রি করছেন। বিষ মুক্ত ২৫প্রকার সবজি কেনা বেচা হয়ে থাকে। ব্যবসায়ীরা এখন ৪ঘন্টায় ঢাকায় পণ্য নিয়ে যাচ্ছে। আগে লাগতো ১২ঘন্টা। এতে ফেরী ঘাটে জানজটে ট্রাক আটকা পড়ে পণ্য পচে যেত এবং খরচও বেশী হতো। এর প্রভাব পড়তো পন্যের ওপর। এতে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হতো। সবজি বিক্রি করার পর অবশিষ্ট  সবজি ৩-৪ঘন্টা সংরক্ষণ করার জন্য খুলনায় ৫টি কুল চেম্বার স্থাপন করা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর খুলনা কার্যালয় ১টি, তেলিগাতী এলাকায় ১টি, রায়েরমহল এলাকায় একটি ১টি ও ডুমুরিয়ায় রয়েছে ২টি। খুলনা মেট্রোপলিটন বাজারসহ জেলার ৯উপজেলায় ২৫১টি বাজার রয়েছে। এই বাজারও মনিটরিং করছে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর খুলনা কার্যালয়। জেলায় ৫০জনের কৃষক দল রয়েছে। এই দল বাজার লিংকেজ স্থাপনের লক্ষ্যে সুপার সপ প্রতিনিধি ও ব্যবসায়ীদের সমন্বয় ফ্রেস কাট শাক-সবজী প্রক্রিয়াকরণ ও প্যাকেটজাত করণ কলাকৌশল, বিপণন ব্যবস্থা মূল্য সংযোজন কার্যক্রম ও কৃষি ব্যবসা উন্নয়ন বিষয় প্রশিক প্রদান করছে। কৃষক পণ্য সুষ্ঠুভাবে বিক্রির জন্য ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করণে বাজার সংযোগ করা হচ্ছে। কালেকশন পয়েন্ট থেকে কৃষি পণ্য প্রান্তিক পর্যায়ে সমবায় ভিত্তিতে বিপণন করা হচ্ছে। কৃষকের বাজার চালু হবার পর তারা লাভবান হচ্ছেন। কারণ দরকষাকষির মাধ্যমে সঠিক মূল্য পাচ্ছেন কৃষক। এখান আর ফড়িয়া বা মধ্যসত্যভোগীদের হাতে জিম্মি হতে হয়না। নারী উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। এরা নানা প্রকার আঁচার তৈরী করে বিভিন্ন সুপার সপে সরবরাহ করছেন।

কৃষি বিপণন অধিদপ্তর খুলনার সিনিয়র কৃষি বিপণন কর্মকর্তা শাহরিয়ার আকুঞ্জী বলেন, আধুনিক বিশে^র সাথে তাল মিলিয়ে এই এলাকার মানুষ আধুনিক বিপণন ব্যবস্থার প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে। প্রক্রিয়াজাতকৃত ও প্যাকেজিং ফ্রেশকাট শাকসবজি সঠিকভাবে বাজারজাত করণ করা হলে কৃষকের আয় বাড়বে। নিয়মিত বাজার মনিটরিং করা হচ্ছে। তিনি ব্যবসায়ীদের মূল্য তালিকা প্রদর্শনের দাবি জানান।