খুলনা : গাছে বেঁধে কুদ্দুস নামের এক নাবালক শিশুকে মারপিটের ঘটনায় শিশুর মা শাবানা বেগম বাদী হয়ে গতকাল শনিবার ডুমুরিয়া থানায় ৬জনকে আসামী করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেছে। পুলিশ সকালে মামলার ৩ আসামীকে আটক করে কোর্ট হাজতে প্রেরণ করেছে। এদিকে ঘটনার সাথে জড়িত আরো ৩ জন আসামীকে আড়াল করা হয়েছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সুত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাতে ডুমুরিয়া উপজেলার উলা বাজারে বাহারুল ইসলামের একটি মোবাইল ফোনের দোকানে মোবাইল ফোন চুরির অভিযোগে শিশু কুদ্দুস(১৪)কে তার বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে মামলার আসামীরা গাছে বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় বেদম মারপিট করে। উক্ত ঘটনা পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হলে টনক নড়ে পুলিশের। এদিকে বিষয়টি ধামাচাপা দিতে কতিপয় কুচক্রীরা জোর তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছিল। একপর্যায়ে থানা পুলিশ ১৮ নভেম্বর শনিবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন এবং শিশুটির মা শাবানা বেগম বাদী হয়ে ৬জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ২/৩জনকে আসামী করে ডুমুরিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নম্বর ২৩।
মামলায় বলা হয়েছে, উলা গ্রামের ভ্যান চালক আঃ মালেক সরদারের নাবালক ছেলে কুদ্দুস স্থানীয় উলা বাজারে কবিরের মোবাইলের দোকানে কর্মচারী। ঘটনার দিন পাশের বাহারুলের মোবাইল ফোনের দোকানে চুরি হয়। ওই চুরির ঘটনায় শিশু কুদ্দুসকে সন্দেহভাবে মামলার আসামী বাহারুল সানা (৩৫)’র নির্দেশে স্থানীয় শাহাবাজ মোল্যার ছেলে রুহুল মোল্যা (৩৫) ও শফিকুল গাজী ছেলে সোহেল গাজী (২২) রাত ১১টার দিকে ঘুমান্ত কুদ্দুসকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে মামলার অন্য আসামী উলা গ্রামের ফটিক সরদারের ছেলে বাবর সরদার (৩৪), কাকমারী গ্রামের রাধাকান্ত মন্ডলের ছেলে নবমুসলিম কবির সরদার (২৮) ও মইখালী গ্রামের সুরত মোল্যার ছেলে সোহেল মোল্যা (২৩) মিলে মইখালী বাজারের পাশে একটি ফাকা জায়গায় গাছের সাথে শিশুকে বেঁধে বেদম মারপিট করে ভোর রাতে তার বাড়ির সামনে রেখে আসে। সকালে অজ্ঞান অবস্থায় স্থানীয়দের সহাতায় শিশুকে উদ্ধার করে ডুমুরিয়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এদিকে ঘটনার সাথে জড়িত উলা গ্রামের মোসলেম সরদার (৪৫), সালাম সরদার (৩২) ও শাহিন সরদার (৩০) কে আড়াল করা হয়েছে বলে আহত শিশু কুদ্দুস জানায়। এনিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। পুলিশ এজাহারভুক্ত আসামী রুহুল মোল্যা, কবির সরদার ও বাহারুল ইসলামকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরন করেছে।
এ বিষয়ে ডুমুরিয়া থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ হাবিল হোসেন বলেন, মামলার ৩ আসামীকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত চলছে, অভিযান অব্যাহত, ঘটনার সাথে জড়িত কাউকেও ছাড় দেয়া হবে না।