‘ঢাকায় ফিটনেস ও লাইসেন্সবিহীন গাড়ি চলবে না’ : আন্দোলন স্থগিত

প্রকাশঃ ২০১৯-০৩-২০ - ১৮:১৫

ঢাকা অফিস : ঢাকায় সব ধরনের ফিটনেস ও লাইসেন্সবিহীন গাড়ি চলাচল বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মেয়র আতিকুল ইসলামের বৈঠক শেষে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। একইসঙ্গে ২৮শে মার্চ পর্যন্ত আন্দোলন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের দাবিতে আজ বুধবার বিকেল ৩টায় গুলশানের নগর ভবনে এ বৈঠক শুরু হয়। প্রায় পোনে দুই ঘন্টার বৈঠকে শিক্ষার্থীদের সব দাবির বিষয়ে আলোচনা শেষে এসব সিদ্ধান্ত আসে।

বৈঠকের পর মেয়র আতিকুল ইসলাম জানান, ‘দাবির মধ্যে ফুটওভার ব্রিজের কাজ শুরু হয়েছে। শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সুপ্রভাত পরিবহণের সকল বাস চলাচল স্থগিত করা হয়েছে। এছাড়া, জাবালে নুর বন্ধের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ঢাকায় প্রযোজনীয় জেব্রা ক্রসিং, স্পিডব্রেকার, যাত্রী ছাউনি বসাতে সাত দিনের মধ্যে কাজ শুরু করা হবে।’

বৈঠকে বিইউপি’র শিক্ষার্থী মৃত্যুর ঘটনায়  চালকের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে এক মাসের মধ্যে অভিযোগপত্র দাখিল করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ২৮শে মার্চ মেয়রের সঙ্গে কাজের অগ্রগতি নিয়ে বৈঠক করে পরবর্তী কর্মসূচি জানাবেন শিক্ষার্থীরা।

এর আগে, বাসচাপায় বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস-বিইউপি’র ছাত্র আবরার আহমেদ চৌধুরীর মৃত্যুর প্রতিবাদে ও নিরাপদ সড়কের দাবিতে, গতকাল থেকে আন্দোলন করে আসছেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বুধবার রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাগুলো অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। তারা নিরাপদ সড়কের জন্য পরিবহণ খাতকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করা, সড়ক থেকে ফিটনেসবিহীন গাড়ি অপসারণসহ আট দফা দাবি জানান। এছাড়াও চালকের ছবিসহ বায়োডাটা সংরক্ষণ, নির্দিষ্টস্থানে বাস থামানো, বসুন্ধরার আশপাশে ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ, জেব্রা ক্রসিং ও স্পিড ব্রেকার স্থাপন এবং চালকদের ডোপ টেস্ট করানোর দাবি জানান তারা। ঘাতক চালকের সর্বোচ্চ শাস্তি, সুপ্রভাত বাসের রুট পারমিট বাতিলের দাবিও জানান শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার রাজধানীর নর্দ্দা এলাকায় প্রগতি সরণিতে যমুনা ফিউচার পার্কের সামনে বিইউপি’র বাসে ওঠার সময় আবরার নামে এক ছাত্রকে চাপা দেয় সুপ্রভাত পরিবহণের একটি বাস। এরপর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের নেয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এদিকে, নিহত আবরারের পরিবারকে কেন ৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে না- জানতে চেয়ে রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে এক সপ্তাহের মধ্যে নিহতের পরিবারকে ১০ লাখ টাকা দিতে সুপ্রভাত পরিবহণের মালিককে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

বুধবার দুপুরে, বিচারপতি নজরুল আসলাম তালুকদার ও কে এম হাফিজুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই নির্দেশ দেন।

এছাড়া, ঘটনা তদন্তে বিআরটিএ, পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ, বুয়েটের এক্সিডেন্ট রিসার্চ সেন্টারকে ১৫ দিনের মধ্যে একটি প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। সড়ক দুর্ঘটনার শিক্ষার্থী নিহত হবার পর, পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন সংযুক্ত করে আজই এই রিটটি করেন ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল।

গতকাল মঙ্গলবার সকালে, সুপ্রভাত বাসের চাপায় নিহত হন ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনাল- বিইউপি’র আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী আবরার আহমেদ চৌধুরী।