সেলিম হায়দার, তালা : পানি নিস্কাশনের পথ বন্ধ করে সাতক্ষীরার তালা উপজেলার চল্লিশা বিলের সরকারি খাস খালে বাঁধ ও নেট-পাটা দিয়ে মৎস্য চাষ করা হচ্ছে। ফলে বর্ষা মৌসুমে পানি নিস্কাশনে চরম ভাবে বাঁধাগ্রস্ত হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় এলাকাবাসী সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিলেও তা কোন কাজে আসেনি। পরে ক্ষুদ্ধ এলাকাবাসি খালের বাধ কেটে ও নেটপাটা তুলে দেয়।
স্থানীয় এলাকাবাসির অভিযোগ, পানি নিস্কাশনের পথ বন্ধ করে বাঁধ ও নেট-পাটা দেওয়ায় সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) সকালে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী উচ্ছেদ করে দেয়। পরে ঘের মালিক ভাড়াটিয়া লোকজন এনে তাদের জিম্মি করে আবারও নেট-পাটা দিয়ে মৎস্য চাষ শুরু করেছে। এনিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে।
তালা উপজেলার পার্শ্ববর্তী কেশবপুর এলাকার মধু ও মোস্তাক নামে দুই ঘের ব্যবসায়ী এ খালটি গত ছয় মাস ধরে দখল করে নেট-পাটা দিয়েছে। এতে এলাকার পানি নিস্কাশন বাঁধাগ্রস্ত হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে,তালা উপজেলার ইসলামকাটি গ্রামে উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া প্রায় তিন কিলোমিটার এ খালটি। খালটি চল্লিশা বিল থেকে সরাসরি কপোতাক্ষ নদে গিয়ে মিশেছে। বর্ষা মৌসুমে ইসলামকাটি, তালা সদর, কুমিরা ও তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন বিলের পানি এ খাল দিয়ে নিস্কাশন হয়।
মৎস্য ঘের ব্যবসায়ী মধু জানান, পানি নিস্কাশনের খাল বন্ধ করা হয়েছে। পানি যে পানি সরানোর সে পানি সরিয়ে বাঁধ ও নেট-পাটা দেওয়া হয়েছে। তবে এলাকার পানি নিস্কাশনে কোনো ক্ষতি হবে না।
ইসলামকাটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অধ্যাপক সুভাষ চন্দ্র সেন জানান, কেশবপুর এলাকার মধু ও মোস্তাক নামে দুই মৎস্য ব্যবসায়ী মানুষের কাছে থেকে জমি লীজ নিয়ে ঘের করছে। তবে পানি নিস্কাশনের পথে বাঁধ ও নেট-পাটা দেওয়া আমি দেখেছি। এলাকাবাসি ওই বাঁধ ও নেট-পাটা উচ্ছেদ করে দেয় । পরে তারা আবার ওই বাঁধ ও নেট-পাটা দিয়েছে কিনা তার তার জানা নেই। তবে পানি নিস্কাশনের পথে কোনো বাঁধা থাকতে দিবো না।
তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ফরিদ হোসেন জানান, তার দপ্তরে কেউ অভিযোগ দেয়নি। তবে পানি নিস্কাশনের পথে কোনো বাঁধা থাকতে দেওয়া হবে না। চলতি বছর বর্ষা মৌসুমে কোনো স্থানে জলাবদ্ধতা নেই। শেষের দিকে এসে পানি নিস্কাশনের পথ বন্ধ করে ব্যক্তি স্বার্থে কোনো মৎস্য ঘের করতে দেওয়া হবে না।
সাতক্ষীরা-১ (তালা-কলারোয়া) আসনের সংসদ সদস্য এ্যাডভোকেট মুস্তফা লূৎফুল্লাহ বলেন, ব্যক্তি স্বার্থে কেউ পানি নিস্কাশনের পথ বন্ধ করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোন প্রকার জলাবদ্ধতার সৃষ্টি করতে তাদের আইনের আওতায় আনার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।