সেলিম হায়দার, সাতক্ষীরা : সাতক্ষীরার তালা উপজেলার তেরছি গ্রামে লক্ষী রাণী দাস (২২) নামের এক গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সে উপজেলার তেরছি গ্রামের বিপুল কুমার দাশের স্ত্রী। তবে সে আত্মহত্যা করেছে নাকি তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে আত্মহত্যা প্রমাণ করতে ঘরে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে এনিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে এলাকাবাসির মধ্যে।
এ প্রসঙ্গে তালা থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ হাসান হাফিজুর রহমান জানান, গৃহবধূর লক্ষী রাণীর মৃত্যুর খবর শুনে বৃহস্পতিবার ভোরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। লাশ ময়না তদন্তের সাতক্ষীরার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গৃহবধূর শ্বশুর শ্বাশুরিসহ দুই জনকে আটক করা হয়েছে। ময়না তদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পরে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে ।
জানা গেছে, বুধবার সন্ধ্যা ৭টায় উপজেলার তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের তেরছি গ্রামে স্বামী বিপুল কুমার দাশের বসত ঘরের আড়ার সঙ্গে লক্ষী রাণীর ঝুলন্ত লাশ দেখতে পায় পরিবারের লোকজন। পরে স্থানীয়রা এসে লাশকে ঝুলন্ত অবস্থা থেকে নামিয়ে আনে। এরপর পুলিশকে খবর দেয়া হয়।
পুলিশ ঘটনাস্থল গিয়ে ওই গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করে। এ ব্যপারে বৃহস্পতিবার সকালে ওই গৃহবধূর ভাই কেশবপুর উপজেলার মাদারডাঙ্গী গ্রামের সঞ্জয় কুমার দাস বাদী হয়ে তালা থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নং-৩ তারিখ ০৭/১২/১৭ ইং।
গৃহবধূর বাবা অসিম কুমার দাস বলেন, তার মেয়েকে পরিকল্পিত হত্যা করা হয়েছে । বিয়ের পর থেকে তার মেয়েকে যৌতুকের লোভে বিভিন্ন ভাবে শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন করে আসছিল তার স্বামী বিপুল কুমার দাস। এসময় তিনি প্রশাসনের কাছে তার মেয়েকে হত্যার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন।
প্রসঙ্গত, ২০০৮ সালে উপজেলার তেরছি গ্রামের বিপুল কুমার দাশের সাথে যশোরের কেশবপুর উপজেলা মাদারডাঙ্গী গ্রামের অশোক কুমার দাশের মেয়ে লক্ষী রাণীর সঙ্গে পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয়। পরে যৌতুকলোভী পাষন্ড স্বামী যৌতুকের ভাবে টাকা দাবি করে বিভিন্নভাবে নির্যাতন করে আসছিল। বুধবার বিকালেও তাদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। ঐদিন সন্ধ্যায় দরজা খোলা অবস্থায় গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ দেখা যায়।