সেলিম হায়দার, সাতক্ষীরা : সাতক্ষীরার তালায় পাখিমারা বিলে চলমান টিআরএম (জোয়ারাধার) কার্যক্রমে অতিসত্বর নদীতে ক্রস ড্যাম ও বিল ব্যবস্থাপনার দাবী করেছেন এলাকাবাসী। তাদের ধারণা, এই মুহুর্তে নদী রক্ষায় ক্রস ড্যাম ও টিআরএম বিলে সুষ্ঠু পলি ব্যবস্থাপনা না করলে প্রকল্প কার্যক্রম অনেকটা ব্যাহত হবে এবং এলাকা পুনরায় জলাবদ্ধতায় কবলিত হবার আশংকা করছে।
টিআরএম কার্যক্রম এলাকার বাসিন্দারা জানান, কপোতাক্ষ নদের নাব্যতা বৃদ্ধি ও জলাবদ্ধতা সমস্যার সমাধানকল্পে সরকার কর্র্তৃক গৃহীত ২৬১ কোটি ৫৪ লক্ষ ৮৩ হাজার টাকা প্রাক্কলন ব্যয়ে ‘কপোতাক্ষ নদের জলাবদ্ধতা দূরীকরণ প্রকল্পের (১ম পর্যায়)’ শেষ করেছে। কিন্তু নদী রক্ষায় চলমান প্রকল্পকে টিকিয়ে রাখতে ডিজাইন অনুযায়ী প্রতি বছর পলি মৌসুমে ক্রস ড্যাম দেওয়ার নিয়ম থাকলেও অদ্যাবধি তা দেয়া হয়নি। এছাড়া আগত পলি বন্টণ ব্যবস্থার ক্ষেত্রে পাখিমারা টিআরএম বিল অভ্যন্তরে স্থাপিত নেট-পাটা, ঘের-ভেড়ি অপসারণ করার মাধ্যমে সুষ্ঠুভাবে বিল ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা জরুরী। টিআরএম বিল অধিবাসীদের কাছে সরকার কিংবা বাস্তবায়নকারী কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে জমি অধিগ্রহণের বিষয়টি পরিস্কার করারও দাবী তাদের। পাশাপাশি পাখিমারা টিআরএম বিলের কৃষকদের নামপত্তন কার্যক্রমের গতি বৃদ্ধি করে ফসলের ক্ষতিপূরণ প্রদান ত্বরান্বিত করাসহ খননকৃত খাল ও নদীর দু’পাশের ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধসমূহ মেরামত করা এবং অভ্যন্তরীণ পানি নিষ্কাশনের জন্য বাঁধে প্রয়োজনীয় আউটলেট পাইপ স্থাপন করার দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসী। তারা আরও জানান, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা আজিজ-সুশীল পল্লী সংলগ্ন নদীর ধার দিয়ে বাঁধ না দেয়ায় ভরা জোয়ারে পল্লীর বসতি ঘর প্লাবিত হওয়ার আশংকা রয়েছে। যে কারণে উক্ত স্থানে বাঁধ নির্মাণের দাবী করেছেন তারা।
এদিকে পাখিমারা টিআরএম বিলে এলাকার কিছু স্বার্থান্বেষী মহল ঘের জুড়ে মাছ চাষ করায় পলি বন্টনে চরমভাবে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। যার ফলে প্রকল্প বাস্তবায়ন বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। এছাড়া বাস্তবায়নকারী পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে সুষ্ঠুভাবে পলি বন্টন ব্যবস্থা দৃশ্যমান করা যাচ্ছে না এবং অধিগ্রহণের বিষয়টি কৃষকদের কাছে পরিস্কার করা হ্েচ্ছ না। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, প্রকল্পের মেয়াদ আরও বৃদ্ধি করতে হবে এবং প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায় শুরু করতে হবে। নতুন বিলের চেয়ে চলমান এই বিলে আরও কয়েক বছর টিআরএম কার্যক্রম চালানো সম্ভব, তাতে আর্থিক সাশ্রয়সহ নানাবিধ জটিলতা হ্রাস পাবে।
এদিকে আগত বর্ষাকালে পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার আশংকা রয়েছে। এলাকা যাতে আর প্লাবিত না হয়, বসতি এলাকার পানি নিস্কাশনে যাতে বাঁধা না থাকে এবং বোরো মৌসুমে মানুষ যাতে ফসল চাষাবাদ করতে পারে ও পাখিমারা বিলে যাতে টিআরএম অব্যাহত থাকে তার জন্য দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বাস্তবায়নকারী সংস্থা পানি উন্নযন বোর্ড ও সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী।