তালা : তালায় এবার বোরো ধানের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা নিয়ে আবাদ করেছে চাষীরা। তবে অনাবৃষ্টির কারণে কিছু এলাকায় ভুগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় সেচ পাম্পে চাহিদা মতো পানি উঠছে না। ফলে চলতি মৌসুমে বোরো ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যাঘাত ঘটতে পারে বলে অনেকের ধারণা। এছাড়া ডাঙা শ্রেনির জমিতে ধান আবাদকারী প্রান্তিক চাষীরা বেশি হতাশ হয়ে পড়েছেন। তালা উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে এ বছর ১৯ হাজার ৫৫৫ হেক্টর জমিতে ইরি বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
উপজেলার শিয়ালডাঙ্গা গ্রামের মাছ ও ধান চাষী রোস্তম আলী মোড়ল জানান, এ বছর বৃষ্টির পরিমান কম হওয়ায় মাছ চাষ তেমন হয়নি। ঘেরে লোকসান হয়েছে। তারপরও অনেক আশা নিয়ে কয়েক বিঘা জমিতে ইরি ধানের চাষাবাদ করেছি। কিন্তু পানির স্তর অনেক নিচে নেমে যাওয়ায় পাম্পে ঠিকমত পানি উঠছে না। এ বছর ধানের অবস্থা কি হবে বলা যাচ্ছে না।
একই গ্রামের ধান চাষী আজিবার সরদার জানান, অন্যের জমি ভাগড়া নিয়ে চাষ করেছি বৃষ্টি না হলে হয়তো শেষ পর্যন্ত পাম্পে পানি উঠবে না। সার ওষুধ জনমজুরির যা দাম দিয়ে ধান রোপন করেছি। খরচ তো অর্ধেকের বেশি করে ফেলেছি। এ বছর পানির যা অবস্থা, কোন কারনে যদি ধান না হয় তাহলে ঋণ তো দিতে পারব না, সংসার চালানো ও মুশকিল হয়ে যাবে। এমন অভিযোগ উপজেলার অনেক কৃষকের বলে জানা যায় ।
তবে বেশি সমস্যায় পড়েছেন এই এলাকায় অপেক্ষাকৃত উচু জমিতে ধান আবাদকারী প্রান্তিক চাষিরা। কারণ শেচ পাম্পে পানি কম উঠাই ডিজেল খরচ বেড়ে গেছে। ফলে বছরের একমাত্র ধান ফসল উৎপাদন শেষে খোরাকি ঘরে তুলতে তারা রীতিমতো হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন ।
তালা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাজিরা বেগম জানান, লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ধান উৎপাদনের জন্য সরকারি প্রণোদনার আওতায় ৬ হাজার ৬শ’ কৃষককে উন্নত জাতের বীজ ও সার দেওয়া হয়েছে। তবে আবহওয়া অনুকূলে থাকলে এবং অন্য কোন রোগ বালাইয়ের প্রাদূর্ভাব দেখা না দিলে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হবে। একই সাথে কৃষকদের পরামর্শ প্রদানের জন্য উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা প্রতিটি ইউনিয়নে মাঠ পর্যায়ে গিয়ে দেখা শোনাসহ কৃষকদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখার বিষয়ে বলা হয়েছে।