তালা প্রতিনিধি : কয়েকদিনের ব্যবধানে তালা উপজেলার খেশরা ইউনিয়নে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে চুরি সংঘঠিত হয়েছে। সোমবার রাতে মুড়াগাছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ১২টি ফ্যান ও শৌচাগারের যাবতীয় জিনিসপত্র চুরি করে নিয়ে যাবার চেষ্টা করে চোরচক্র। এ সময় এলাকাবাসী টের পেলে চোরচক্র ১টি সাইকেল, ১টি পরিধেয় হলুদ রঙের হুডি, ১টি টর্চলাইট, গামছা, জুতা, ব্যাগ, দড়ি প্রভৃতি ফেলে পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ এসে উদ্ধারকৃত মালামাল আলামত হিসেবে জব্দ করে নিয়ে যায়। এদিকে অব্যাহত চুরির ঘটনায় জনমনে দারুণ ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে।
সরেজমিনে জানা যায়, ২৬ জানুয়ারি (বৃহস্পতিবার) দিবাগত রাতে তালা উপজেলার খেশরা ইউনিয়নের শালিখা কলেজের সাইক্লোন সেল্টারের ঢালু সিড়ির দোতলা প্রান্তের গ্রিল কেটে প্রায় তিন লক্ষ টাকা মূল্যের ব্যাটারি, ফ্যান ও চারতলা ভবনের শৌচাগারের মূল্যবান জিনিসপত্র চুরি করে নিয়ে যায়। এর দু’দিন পর অতর্থাৎ ২৮ জানুয়ারি (শনিবার) দিবাগত রাতে ১৩৩ নম্বর পশ্চিম খেশরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষের হ্যাসবোল্ট কেটে চোরেরা ১০টি ফ্যান চুরি করে নিয়ে যায়। এ নিয়ে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক পরিমল পাঠক গত ২৯ জানুয়ারি তালা থানায় একটি অভিযোগপত্র দায়ের করেন। খবরটি বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় ফলাও করে প্রচার করা হয়। এরপর সর্বশেষ ৩১ জানুয়ারি (সোমবার) দিবাগত রাতে ৫২নং মুড়াগাছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শ্রেণিকক্ষের হ্যাসবোল্ট কেটে ১২টি ফ্যান এবং শৌচাগারের যাবতীয় জিনিসপত্র চুরি করে নিয়ে যায় চোরচক্র। ভোররাতে যখন চোরেরা পাশর্^বর্তী অশোক অধিকারীর বাগানে চুরিকৃত মালামাল ভাগাভাগি করার সময় স্থানীয় বাসিন্দা আলমগীর হোসেন সেচপাম্প চালু করার জন্য পাশের রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন। বাগানের ভিতর শব্দ পেয়ে কারা সেখানে জানতে চাইলে চোরের দল মুখোশপরা অবস্থায় তার দিকে লোহার রড নিয়ে তেড়ে আসে। আলমগীর হোসেন তখন ‘চোর চোর’ চিৎকার দিলে চোরেরা ১টি সাইকেল, ১টি পরিধেয় হলুদ রঙের হুডি, ১টি টর্চলাইট, গামছা, জুতা, ব্যাগ, দড়ি প্রভৃতি ফেলে পালিয়ে যায় যেগুলো পুলিশ আলামত হিসেবে জব্দ করে নিয়ে যায়।
উল্লেখ্য, গত বছর এই সময়ে এইচ.এম.এস মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে অনেকগুলো ফ্যান এবং শালিখা বাজারের ১৪ টি দোকান থেকে প্রায় ২০ লক্ষ টাকার মালামাল চুরি করে নিয়ে যায় চোরেরা।
এদিকে সোমবার সকালে মুড়াগাছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চুরির ঘটনায় ছবি তোলার সময় সাংবাদিক দেখে ২৫/৩০জন মহিলা জড়ো হন। তাদের অভিযোগ, খেশরা স্কুলে চুরির ঘটনায় অভিযোগ পেয়ে প্রশাসন যদি কোন কার্যকরী পদক্ষেপ নিতো তাহলে আজকে এ চুরির ঘটনা ঘটত না। এত চুরি হচ্ছে অথচ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা কি চোখে দেখেনা। খেশরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ-আল-মামুন তাজ ক্ষোভের সাথে বলেন, অত্র এলাকায় বারবার চুরির ঘটনা ঘটছে সেটা প্রশাসনকে জানানোর পরেও তাদের পক্ষ থেকে কোন কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।
খেশরা পুলিশ ক্যাম্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এস আই দেলোয়ার হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তিনি জানান, বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ থানায় অভিযোগ করেছে। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।