সেলিম হায়দার: সাতক্ষীরার তালা উপজেলা পরিষদের মৎস্য অফিসটি স্থানান্তর করে প্রায় ১ কিঃমিঃ দূরে খামার বাড়িতে নেয়ার ৮ মাস পরেও অফিসটি ফিরে আসেনি তার পূর্বের জায়গায়। এতে করে উপজেলার মৎস্য সংশ্লিষ্টরা চরম ভোগান্তিতে রয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অভিযোগে জানাগেছে,গত বছর বর্ষা মওসুমে বৃষ্টির পানি নিষ্কাষিত হতে না পেরে উপজেলা সদরে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। ঐসময় এলাকাবাসীর ভোগান্তির কথা চিন্তা করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মৌখিক অনুমতি নিয়ে সেসময় মৎস্য অফিসটি সাময়ীকভাবে মৎস্য অধিদপ্তরের তালা খামার বাড়িতে নেয়া হয়। তবে মওসুমের প্রায় ৮ মাস অতিবাহিত হলেও অফিসটি এখনো তার পূর্বের জায়গায় ফিরিয়ে আনা হয়নি। এলাকাবাসীর অভিযোগ, সদর থেকে খানিকটা পথ দূরে মৎস্য অফিস হওয়ায় উপজেলার অন্যান্য অফিস থেকে এক প্রকার বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এতে করে মৎস্য কর্মকর্তারাও অফিস চালাচ্ছেন তাদের ইচ্ছা মত। এলাকাবাসী জানায়,মৎস্য চাষীরা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পরামর্শ নিতে অফিসে গিয়েও প্রায়ই তাদের দেখা পাচ্ছেননা। মৎস্য প্রধান জনপদের মূল পরামর্শক কতৃপক্ষের এমন বেহাল দশায় রীতিমত ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন চাষীরা।
এব্যাপারে তালা উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ হাদিউজ্জামান জানান,নতুন করে পরনো জায়গায় ফেরার কোন ইচ্ছা তাদের নেই। এলক্ষে গত সপ্তাহে তারা মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রনালয়ে একটি আবেদন পাঠিয়েছেন। যাতে নতুন স্থানে তাদের অফিসটি বহাল রাখা হয়।
এদিকে এলাকাবাসী বলছেন ভিন্ন কথা। তাদের দাবি,মূল ঠিকানায় ফিরে যাক মৎস্য অফিসটি। তাহলে পূর্বের ন্যায় প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে আসবে গুরুত্বপূর্ণ এ দফতরে। প্রসঙ্গত,তালা উপজেলার ১২ টি ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকার মূল আয়ের উৎস্য কৃষির পাশাপাশি মৎস্য। মাছ চাষ করেই এখানকার বৃহৎ সংখ্যক মানুষ জীবিকা নির্বাহ করেন। তবে গত প্রায় ৭/৮ মাস হল অফিসটি প্রায় ১ কিঃমিঃ দূরে স্থানান্তরিত হওয়ায় তৃণমূলের চাষীরা মূল সেবা নিতে অফিসে গিয়ে তালাবদ্ধ পেয়ে ফিরে যায়। অন্যদিকে ভীঁড় কম থাকায় এক প্রকার অফিস না করেই আয়েসেই দিনাতিপাত করছেন সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা সহ সেখানকার ৬ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী। বিশেষ করে উপজেলা সদর থেকে খামার বাড়িতে অফিস হওয়ায় এক প্রকার বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে অফিসটি। সেকারণে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাও তদারকি করতে পারেননা। আর এই সুযোগে সেখানকার কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরও ঠিকমত অফিস করতে হয়না। এতে করে সরকারের মূল লক্ষ মৎস্য সম্পদ উন্নয়ন বহুল অংশে ভেস্তে যাচ্ছে।
এব্যাপারে তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ ফরিদ হোসেন বলেন,বিষয়টি সম্পর্কে তিনি কিছুই জানেননা।
সর্বশেষ সবমিলিয়ে ভাল নেই জনপদের মৎস্য চাষীরা। তারা গত কয়েক বছর যাবৎ উৎপাদন মৌসুমে ভাইরাসসহ নানা সংকটে মাছের মড়কে ন্যুনতম সেবা বা পরামর্শ পর্যন্ত নিতে পারছেননা অধিদপ্তরটি থেকে। এমন অবস্থায় বিষয়টি তদন্তপূর্বক জরুরী পদক্ষেপ গ্রহনের জন্য তারা সরকারের সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কতৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।