খুলনা : ‘মাননীয় নেত্রী শেখ হাসিনা ও আলহাজ্ব তালুকদার আব্দুল খালেক ভাই এর কাছে খোলা চিঠি’ শিরোনামে এক ব্যক্তি লিখেছেন, ‘যার পথচলায় খুলনার রাস্তা হয় ধুলামুক্ত, যার ছোয়ায় মারপ্যাচ এর কবল থেকে উন্নয়ন এর তালা খুলে যায়, যার হাতের পরশে জটিল হিসাব সহজ হয়, যার কন্ঠে ভেজাল কাজ সঠিক হয়, যার শ্রমে আধার থেকে আলো দেখেছিল খুলনার উন্নয়ন, যার হাত ধরে অবহেলিত খুলনা পেয়েছে প্রাণ, আমরা খুলনাবাসী দেখেছি আশার আলো, সেই প্রাণ পুরুষ, খুলনাবাসীর আশার আলো, নয়নের মণি, শেষ আশ্রয়স্থল আলহাজ্ব তালুকদার আব্দুল খালেক ভাইকে পুনরায় মেয়র হিসাবে দেখতে চাই।’ প্রিয় নেত্রী অভাগা এই খুলনাবাসীর চাওয়াটুকু পূরণ করবেন। প্রিয় নেতা অবহেলিত অভাগা এই খুলনার কথা ভেবে, আমাদের কথা ভেবে অভিমান ভুলে ফিরে আসুন।
আসন্ন খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে আর প্রার্থী হতে চান না মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক মেয়র আলহাজ্ব তালুকদার আব্দুল খালেক এমপি। এমন সংবাদে দলীয় নেতাকর্মীর পাশাপাশি সাধারণ মানুষও হতাশ হচ্ছেন। সব অভিমান ভুলে প্রিয় নেতাকে মেয়র পদে লড়তে অনুরোধ করছেন তারা। ফেসবুকে স্ট্যাটাস, ফ্রেম তৈরি, ইভেন্ট খুলে সাবেক এ মেয়রের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন তারা। প্রত্যেকের দাবি, যাতে সব মান-অভিমান ভুলে নিজের জন্য না হোক, খুলনার উন্নয়নের জন্য, খুলনাবাসীর ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য আর একটিবার তিনি নির্বাচন করতে আগ্রহী হন।
নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মল্লিক আবিদ হোসেন কবির ফেসবুকে লিখেছেন, ‘খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের যোগ্য ও সঠিক প্রার্থী মনোনয়নে ব্যর্থ হলে খুলনাবাসীকে বিপদে পড়তে হবে এবং চরম মূল্য দিতে হবে।’
ওই পোস্টে কমেন্ট করেছেন মাহমুদুল ইসলাম। তিনি লিখেন, ‘খুলনার মানুষের পাশে যে মানুষটাকে সব সময় পাওয়া যায়, তাকে ভোট না দিয়ে কাকে ভোট দিবেন? সুতরাং সফল মন্ত্রী, সফল মেয়র ও সফল নেতা তালুকদার আব্দুল খালেক ভাইকেই আমরা খুলনাবাসি খুলনার মেয়র হিসেবে দেখতে চাই।’
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও মহানগর শাখার সাবেক সহ-সভাপতি মশিউর রহমান সুমন লিখেছেন, ‘খুলনাবাসী নগরপিতা হিসেবে আপনাকে চায় আরেকটি বার৷ ফেসবুক বন্ধুদের বলছি একটি ঝড় তুলুন ‘খালেক ভাইকে চাই নগর পিতা’ সবার পোষ্ট আসা করছি খালেক ভাইয়ের জন্য।’
কেএম শাহিন হাসান নামের এক ব্যক্তি লিখেছেন, ‘সামনে একাদশ জাতীয় নির্বাচন আর জাতীয় নির্বাচনে ভালো ফলাফল পাওয়ার জন্য সিটি নির্বাচন হলো এসিড টেষ্ট আর এই এসিড টেষ্টে পাশ না করলে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে জাতীয় নির্বাচনে। আওয়ামী লীগের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারক যারা আছেন তাদের সার্বিক দিয়ে বিবেচনা করে আলহাজ্ব তালুকদার আঃ খালেক ভাইকে মেয়র প্রার্থী করা উচিত আর দলের স্বার্থে এই বিষয়টা খালেক ভাইয়েরও বিবেচনা করা উচিত।’
নগর ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি রনবীর বাড়ই সজল লিখেছেন, ‘আমাদের কোন চমক বা আকর্ষণের দরকার নাই। আমরা আমাদের যোগ্য উত্তরসূরীকে তার যোগ্য স্থান কেসিসি’র নগর পিতা হিসেবে দেখতে চাই। খুলনায় নৌকার মাঝি হিসেবে খালেক ভাইকে চাই।’
মো. রহিম নামের একজন লিখেছেন, ‘খুলনা উন্নয়নের মহানায়ক, সাবেক ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী, সাবেক মেয়র, জননেতা আলহাজ্ব তালুকদার আ: খালেক সাহেবকে খুলনাবাসী মেয়র হিসাবে দেখতে চাই। ডিজিটাল নগর পেতে চাই, খালেক সাহেবের জুড়ি নেই।’
শেখ টিপু সুলতান নামের এক ছাত্রলীগ নেতা লিখেছেন, ‘জননেতা তালুকদার আব্দুল খালেক চাচা যদি প্রার্থী না হন তবে পুনরায় আমরা একজন দলীয় মেয়র হারাবো।’
প্রসঙ্গত, খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি তালুকদার আব্দুল খালেক ২০০৮ সালের নির্বাচনে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হন। তার মেয়াদকালে (২০০৮-২০১৩) খুলনার অভুতপূর্ব উন্নয়ন দৃষ্টি কেড়েছে নগরবাসীর। সিটি কর্পোরেশনের জন্ম থেকে এখন পর্যন্ত ওই সময়টুকুর সাথে বাকি সময়ের তুলনা করলেও এক হবে না। এরপরও ২০১৩ সালের নির্বাচনে হেফাজত ইস্যু, দলীয় কোন্দল ইত্যাদির কারণে বিএনপি প্রার্থীর কাছে প্রায় ৫৮ হাজার ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন। তখন থেকেই তিনি আর নির্বাচন করবেন না বলে গুঞ্জন উঠছিল।