সেলিম হায়দার, তালা : গত কয়েক বছরে দখল হয়ে গেছে সাতক্ষীরা তালার খলিলনগরের জনগুরুত্বপূর্ণ বাওনের কুড়ের খালটি। সেখানকার গঙ্গারামপুরের কদমতলা-ঘোষনগরের উপর দিয়ে কপোতাক্ষে প্রবাহিত খালটি বিস্তীর্ণ জনপদের পানি নিষ্কাশনের এক মাত্র মাধ্যম।
উপজেলার সব্জিসহ ফসল উৎপাদনের অন্যতম ক্ষেত্র খলিলনগরের কাপালিপাড়ার ফসলের প্রাণ পানির যোগান পেতে খালটি ব্যবহার হয়ে আসছে সেই শ্মরণাতীত কাল থেকে। ক্যাচমেন্ট এরিয়ার গঙ্গারামপুর,ঘোষনগর,খলিলনগর,নলতা,পাইকগাছার কাশিমনগরসহ বিস্তীর্ণ অঞ্চলের পানি নিষ্কাশনের একমাত্র মাধ্যম বাওনের কুড়ের খাল। তবে খালটির দু’পাশের রেকর্ডীয় জমির মালিকদের অব্যাহত দখল প্রক্রিয়ায় তা পরিণত হয়েছে সরু ড্রেনে। স্থানীয়দের দাবি,বহিরাগতদের বসতি স্থাপনে অকাল মুত্যু হয়েছে খালটির। এছাড়া আশপাশের জমি ও বাড়ির ময়লা আবর্জনা ফেলে খালটিকে ভরাট করে তা দখলে নিচ্ছে।
অন্যদিকে দখল প্রক্রিয়ায় শেষ পেরেক ঠুকেছে স্থানীয় ক’মৎস্য চাষী। খালটিকে ঘেরের মধ্যে নিয়ে বাঁধ দিয়ে শুরু হয়েছে মাছ চাষ। আসন্ন বর্ষা মৌসুমকে ঘিরে তাই পানি নিষ্কাশনের পুরনো চিত্রকে মনে করে এলাকাবাসীর দিন কাটছে অজানা আশংকায়। তাদের দাবি,খালটির দখলমুক্ত করে পুন:খনন।
অভিযোগের প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার সকালে সরেজমিনে প্রতিবেদনকালে কথা হয়,স্থানীয় ইউপি সদস্য প্রকাশ চন্দ্র দালালসহ ভূক্তভোগী অনেকের সাথে। তারা জানান,তালা ও পাইকগাছা সীমান্তবর্তী খলিলনগর ইউনিয়নের গঙ্গারামপুর,ঘোষনগর,নলতা ও খলিলনগরসহ পাশ্ববর্তী পাইকগাছার কাশিমনগর এলাকার একাংশের পানি নিষ্কাষণের একমাত্র মাধ্যম বাওন কুড়ের খাল।
তাছাড়া সব্জি উৎপাদন থেকে বিভিন্ন ফসল উৎপাদন মৌসুমে পানির যোগান মেটাতে স্থানীয় কাপালি পরিবার থেকে শুরু করে সর্ব স্তরের কৃষকের একমাত্র মাধ্যম ছিল খালটি।
গুরুত্বের কথা বিবেচনায় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান প্রনব ঘোষ বাবলুর তত্ত্বাবধানে কয়েক দফায় সংষ্কার হলেও সর্বশেষ কয়েক বছরে কোন খনন হয়নি খালে। আর এই সুযোগে খালের দু’পাশের রেকর্ডীয় জমির মালিক বিশেষ করে বহিরাগতরা বসতিস্থাপনে ক্রমান্বয়ে খালটি চলে গেছে অবৈধ দখলদারদের হাতে। এছাড়া কয়েক মাছ চাষী খালের বড় একটি অংশের দখল নিয়ে তাদের মাছের ঘেরে সম্পৃক্ত করে যার যার মত বাঁধ দিয়ে শুরু করেছে মাছ চাষ।
এলাকাবাসী জানায়,গঙ্গারামপুরের মৃত অনন্ত সরদারের ছেলে সরজিৎ সরদার,রনজিৎ সরদার,মৃত সোবহান সরদারের ছেলে আলম সরদার,মোসলেম শেখ’র ছেলে জিয়া শেখ ও মৃত জালাল শেখ’র ছেলে সাজ্জাত শেখ তাদের নিজ নিজ সীমানার মাথায় খালের অংশ দখলে নিয়ে মূলত খালের অস্তিত্ব সংকটে ফেলেছে।
এলাকাবাসীর দাবি,অচিরেই খালটির দখলমুক্ত করে পুন:খনন না হলে দখল আর দূষণে অস্থিত্ব হারাবে বাওন কুড়ের খাল।