দাকোপ(খুলনা)প্রতিনিধি খুলনার দাকোপ উপজেলায় দেশি মদের দোকান মালিক দীপংকর মন্ডলকে জেল হাজতে আটক রাখা হয়েছে। সমাজের বিশৃঙ্খলা মুক্ত ও আইন শৃংখলা উন্নতি করতে বাংলা মদ বিক্রি বন্ধের দাবী জানিয়েছেন স্থানীয় সুশিল সমাজ ও অভিভাবক মহল।
সুত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ সরকার উপজেলার চালনা বাজারে ১৯৫২ সালে দেশের ২য় সমুদ্র বন্দর চালনা বন্দর স্থাপন করেন। বন্দরটি ১৯৫৮ সালে চালনা থেকে স্থান্তর করে মোংলা বন্দর করা হয়। বন্দর থাকায় উক্ত স্থানে দেশি (বাংলা) মদের আফগারীর লাইসেন্স দিয়ে থাকেন সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর। আরোও জানা যায়, চালনা বন্দরটি মোংলায় স্থান্তর করা হলেও বাংলা মদের দোকানটি আজও করা হয়নি।
খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে, আফগারীর বৈধতা পেলেই এর মালিক ছিলেন হরিপদ ঘোষ। তিনি মৃত্যু বরণের কিছুকাল পূর্বে জাল জালিয়াতি করে দীপংকর মন্ডল লাইসেন্সের মালিক হয়। দীপংকর মন্ডল ছিলেন আফগারীর কর্মচারী, রক্তের কোন সম্পর্ক ছিল না মালিকদের সাথে।তারপরও কিভাবে যেন সে মদের দোকানের মালিক সেজে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এযাবত। বর্তমান আফগারীর মালিক দীপংকর স্কুল কলেজ পড়–য়া শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে যুবসমাজকে খাওয়ার লাইসেন্স ছাড়াই দেশি মদ অবাধে বিক্রয় করে যাচ্ছেন।
স্থানীয় এলাকাবাসী জানায়, যখন বন্দর ছিল, তখন বন্দরের স্বার্থে এখানে আফগারীর প্রয়োজন ছিল। কিন্তু এখন তো আর বন্দর নাই, তাহলে এখন এ এলাকায় মদের আফগারীর কোন প্রয়োজন নাই। আফগারী থেকে আমাদের ছেলে-মেয়েরা প্রতিনিয়ত মদ পান করছে। এতে ধ্বংস হচ্ছে সমাজ।
চালনার ব্যবসায়ী সুকুমর মন্ডল,কুমারেশ রায়, দীপক বিশ্বাস বলেন,আমরা জানি চালনায় যখন বন্দর ছিল, সে সময় একটি পতিতাপলীø ও বাংলা মদের দোকান ছিল। যখন বন্দরটি চালনা থেকে অন্য জায়গায় নেওয়া হয় তখন এ স্থানের পতিত পল্লিটি বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু আফগারীটি এখন বন্ধ হয়নি। তিনি আরোও বলেন, এ আফগারী থেকে খুব সহজে মদ পায় স্থানীয় শিক্ষর্থীরা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ব্যক্তি বলেন, দীপংকর মন্ডল যুবসমাজের কাছে প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকার বাংলা মদ বিক্রয় করে যাচ্ছে।এতবেশি মদ দেশের আর কোথাও সম্ভাবত বিকরি হয় না। সরকার যাদের কাছে মদ বিক্রয়ের জন্য লাইসেন্স দিয়ে ছিল, তাদের কাছে নামমাত্রা বিক্রয় করে যাচ্ছে তিনি। সরকারের আইন প্রয়োগকারী সকল দপ্তরের প্রশাসনকে ম্যানেজ করে অবৈধভাবে এমন কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে আজও পর্যন্ত। এ মদে ট্যাবলেট মিশিয়ে ভেজাল ও বাড়তি করায় এ খেয়ে চালনাবাজারের কয়েকজন মারা যাওয়ার অভিযোগ ও রয়েছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, চালনা বাজার আফগারীর বাংলা মদ দাকোপ উপজেলার বাজুয়া,বানিশান্তা পতিতালয়, সুন্দরবন থেকে শুরু করে রামপাল , পাইকগাছা, কয়রা, বটিয়াঘাটা, ও ডুমুরিয়া উপজেলা থেকে নানা বয়সের শ্রেণী পেশার মানুষের মাঝে এই বাংলা মদ দেদারছে বেচা হয়। শুধু তাই নয় উপজেলায় সরকারী, বেসরকারি, এনজিও প্রতিষ্ঠানে যে সকল ব্যক্তিরা চাকরি করতে আসে তারাও আফগারীর বাংলা মদ পান করে।
এভাবে দেদারছে বাংলা মদ বিক্রয়ের আপরাধে আফগারীর বর্তমান মালিক চালনা বাজারের মৃত নিরেন মন্ডলেন পুত্র দীপংকর মন্ডলের নামে দাকোপ থানায় মামলা হয়েছে। মামলা নং- ০৫, তারিখঃ ১৪-১২-১৭ ইং। মামলার হাজিরা দিতে গেলে খুলনা বিজ্ঞ আদালত তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করে।
স্থানীয় অভিবাবকমহল জোর দাবী করে প্রশাসেনর উদেশ্যে বলেন, আফগারী ও লাইসেন্সের সম্পর্কে সঠিক তদন্ত করে আইণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। বন্দর না থাকায় তারা আরোও বলেন, আফগারীটি এ উপজেলায় কোন রকম প্রয়োজন নাই। মদের আড়ৎটি বন্ধ হলে এখানকার সমাজ বিশৃঙ্খলা থেকে মুক্ত পাবে এবং আইন শৃঙ্খলার উন্নতি হবে।
দাকোপ থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ সাহাবুদ্দিন চৌধুরী মুঠোফোনে বলেন, দীপংকর মন্ডলের মদের দোকান আছে। সে অবৈধভাবে মদ পানের পারমিট দেয় এবং বিক্রয় করে থাকে। এ কারণে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে এবং সে কারাগারে আছে। তার বিরুদ্ধে আইণের প্রক্রিয়া চলছে।