দাকোপ প্রতিনিধিঃ দাকোপের পল্লীতে নেশাগ্রস্থ অবাধ্য পুত্রের মারপিটে পিতা আহত। জনরোষ থেকে পালিয়ে ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে স্ত্রীকে দিয়ে নারী নির্যাতনের মামলা দায়ের। এ ঘটনায় এলাকাব্যাপী নিন্দারঝড়, পুত্রকে কঠোর শাস্থিদানে অসহায় পিতা প্রশাসনের সহায়তা কামনা করেছেন।
এলাকাকার জনপ্রতিনিধি ও ভুক্তভোগীদের সুত্রে জানা যায়, দাকোপ উপজেলাধীন কালাবগী গ্রামের স্বরুপ সরদারের নেশাগ্রস্থ পুত্র মোজাফ্ফার সরদার নানা অসামাজিক কাজের সাথে জড়িত। তাঁর একাধীক বিবাহিত স্ত্রী রোজিনা বেগমকে দিয়ে নিজ বাড়ীতে নানা রকম অসামাজিক কাজ করিয়ে আসছে। অনৈতিক কাজে অভ্যাস্থ ১ সন্তানের জননী রোজিনা বেগম ২ মাসের ব্যবধানে ২ স্বামীকে তালাক দিয়ে ফের মোজাফ্ফারের সংসার করছে। গত ১৭ ফেব্রুয়ারী রোজিনা বেগম স্বামীর সংসার ছেড়ে পালিয়ে গেলে ১৮ ফেব্রুয়ারী মোজাফ্ফার স্ত্রীর নামে দাকোপ থানায় সাধারন ডায়েরী করে যার নং ৭৪৭। এ ঘটনার পর ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০১৭ স্বামী মোজাফ্ফারকে তালাক দিয়ে প্রতিবেশী মৃঃ মুনছুর গাজীর পুত্র সাইদুল গাজীকে বিয়ে করে। এরপর ১৩ এপ্রিল সাইদুলকে তালাক দিয়ে ফের মোজাফ্ফারের সংসারে ফিরে আসে। গত ২৪ এপ্রিল মোজাফ্ফার ২০ হাজার টাকার দাবীতে বৃদ্ধ পিতাকে মারপিট করে ঘরে থাকা নগত ৩০ হাজার টাকা এবং আনুমানিক ৫২ হাজার স্বর্ণালংকর নিয়ে বাড়ী ছেড়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় পিতা বাদী হয়ে খুলনা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে মোজাফ্ফারকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করে। এভাবে স্বামীর স্ত্রীর অনৈতিক কর্মকান্ডে অতিষ্ঠ হয়ে বৃদ্ধ ধর্মভিরু স্বরুপ সরদার মোজাফ্ফারকে তাঁর বাড়ীতে ফিরে আসতে বাধা দেয়। ঘটনার দিন গত ২০ মে শনিবার সন্ধ্যায় মোজাফ্ফার স্ব স্ত্রীক পিতার বাড়ীতে ফিরে আসলে স্বরুপ সরদার তাঁদেরকে বাড়ী ছেড়ে যাওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকে। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে মোজাফ্ফার এবং তার স্ত্রী রোজিনা বেগম বৃদ্ধ স্বরুপ সরদারকে লাটিপেটা করে আহত করে। বৃদ্ধের ডাক চিৎকারে তাঁর অন্যান্য সন্তান এবং সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্য আইয়ুব ঢালী, মহিলা সদস্য নারগিছ বেগম ঘটনাস্থলে এসে মোজাফ্ফারকে আটক করে দাকোপ থানা পুলিশে খবর দেয়। এরপর প্রশাসনের পরামর্শে ইউপি চেয়ারম্যান মাসুম আলী ফকির ও অন্যান্য ইউপি সদস্যরা মিলে লঞ্চযোগে আহত স্বরুপ সরদারকে উপজেলা হাসপাতালে এবং মোজাফ্ফারকে দাকোপ থানায় হস্তান্তরের উদ্দেশ্যে পাঠায়। পথিমধ্যে মোজাফ্ফার চলন্ত লঞ্চ থেকে লাফিয়ে পড়ে পালিয়ে গিয়ে ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে পরেরদিন স্ত্রীকে বাদী করে তাঁর ছোটভাই আফজাল সরদার এবং প্রতিবেশী ইমরান মোড়লের নামে আদালতে নারী নির্যাতনের মামলা দায়ের করে। এ ঘটনায় এলাকায় নিন্দার ঝড় উঠেছে। ভুক্তভোগী পিতা স্বরুপ সরদার এই প্রতিবেদকের নিকট চোখের পানি ছেড়ে ছেলের লাটিপেটার খতস্থান দেখিয়ে বলেন, ওই কুলাঙ্গর সন্তানের উপযুক্ত বিচার দাবী করছি। সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্য আইয়ুব ঢালী ও চেয়ারম্যান মাসুম আলী ফকির মোজাফ্ফার এবং স্ত্রীর নানা অনৈতিক কর্মকান্ডের বর্ণনা দিয়ে বলেন, স্বরুপ সরদার ছেলের বিরুদ্ধে ইউনিয়ন পরিষদে অসংখ্যবার বিচার দিয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে এলাকাবাসী ওই দম্পতির বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে দাবী করে তাঁরা বলেন, এলাকায় আসলে তারা গনধোলাইয়ের শিকার হওয়ার আশংকা আছে।