আজগর হোসেন ছাব্বির, দাকোপ : খুলনার দাকোপের লাউডোপ সরকারী এলবিকে কলেজ ছাত্রী জয়ী মন্ডল আত্নহত্যার ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতে বন্যা রায় নামে আরেক ছাত্রীর আত্নহত্যার ঘটনায় এবার উপজেলা ছাত্রলীগ সাধারন সম্পাদকসহ ২ জনকে আসামী করে মামলা হয়েছে। এই মামলার প্রধান আসামী অভিজিত অভিকে পুলিশ গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠিয়েছে।
দাকোপ থানা ও এলাকাবাসী সুত্রে জানা যায়, বাজুয়া এস এন ডিগ্রী কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্রী বন্যা রায় গত ২৭ অক্টোবর নিজ বাড়ীতে সিলিং ফ্যানের সাথে ঝুলে আত্নহত্যা করে। এ ঘটনায় আত্নহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে দাকোপ উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক স্বর্ণদীপ জোয়াদ্দার ও তার বন্ধু বাজুয়া গ্রামের রবীন্দ্রনাথের পুত্র অভিজিত ওরফে অভিকে আসামী করে বন্যার বাবা বাদী হয়ে গত ৯ নভেম্বর দাকোপ থানায় মামলা দায়ের করেছে। যা দাকোপ থানার মামলা নং ৫। মামলার এজাহারে বাদী দাবী করেছেন তার বড় মেয়ে বন্যা রায় এস এন ডিগ্রী কলেজে দ্বাদশ শ্রেণীতে পড়াশোনা করতো। সেই সুবাদে কলেজ সংলগ্ন অভিদের বাড়ীতে ভাড়া থাকতো। এই সুযোগে অভি তার বন্ধু ছাত্রলীগনেতা স্বর্ণদ্বীপের সাথে বন্যার প্রেমের সম্পর্ক স্থাপনে সহায়তা করে। কিছুদিন পর স্বর্ণদ্বীপ বর্ন্যার সাথে সম্পর্ক না রেখে তাকে মানষিক চাপে রাখে। এ সুযোগে অভি তার বোন প্রিয়াংকা ও বন্ধু উজ্বলের সহায়তায় বন্যার সাথে নিজেই প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। কিছুদিন পর বন্যা অভিদের বাড়ী ছেড়ে ভিন্নস্থানে বাসা ভাড়া নেয়। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে অভি বন্যার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে স্বর্ণদ্বীপের মাধ্যমে তার উপর মানষিক চাপ দিতে থাকে। ঘটনার দিন গত ২৭ অক্টোবর সকালে বন্যা অভিদের বাড়ী গেলে অভি ও স্বর্ণদ্বীপ তাকে লাঞ্চিত করে। ঘটনার পর বন্যা বাড়ীতে ফিরে আসলে অভিজিত মোবাইল ফোনে তাকে চাপ অব্যহত রেখে নানা কটুক্তির মাধ্যমে আত্নহত্যায় প্ররোচিত করে। অভি ও স্বর্ণদ্বীপের এ আচারণ সহ্য করতে না পেরে ওই দিন দুপুরে বন্যা নিজ ঘরের সিলিং ফ্যানের সাথে গলায় ওড়না পেচিয়ে আত্নহত্যা করে। পরে থানা পুলিশ মৃত দেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে। ময়না তদন্ত শেষে অন্তষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়। ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে দাকোপ থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ শাহাবুদ্দিন চৌধুরী বলেন, মামলায় ১নং আসামী অভিজিত অভিকে মামলা দায়েরের পর পরই গ্রেফতার করা হয়েছে। মামলার অপর আসামীকে গ্রেফতারের জন্য অভিযান চলছে। এ ব্যাপারে জানতে দাকোপ উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মামলার ২নং আসামী স্বর্ণদ্বীপ জোয়াদ্দারের ব্যবহৃত মোবাইলে-০১৯১০-০০৯৫১০ নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করলে নম্বরটি বন্ধ পাওয়া গেছে। উল্লেখ্য বন্যার এ ঘটনার আগে দাকোপে বাজুয়া এস এন ডিগ্রী কলেজ ছাত্রলীগের বহিস্কৃত সভাপতি ইনজামামের বিরুদ্ধে মেধাবী ছাত্রী জয়ী মন্ডল আত্নহত্যার অভিযোগে মামলা হয়। ঘটনার পর থেকে সমগ্র দাকোপজুড়ে ইনজামামকে গ্রেফতারের দাবীতে ব্যাপক প্রতিবাদ কর্মসূচী পালিত হয়ে আসছে। আতœগোপনে থাকা ইনজামাম গতকাল রবিবার খুলনায় আদালতে আতœসমর্পন করেছে বলে জানা গেছে। দাকোপে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক নারী নির্যাতন ও মামলা দায়েরের ঘটনায় ক্ষমতাসীনদলটি খানিকটা ইমেজ সংকটে পড়েছে।