দাকোপে বিএনপিতে গন পদত্যাগের হিড়িক

প্রকাশঃ ২০১৯-০৩-১২ - ১৮:১৮

আজগর হোসেন ছাব্বির, দাকোপ : দাকোপে বিএনপিতে গন পদত্যাগের হিড়িক পড়েছে। মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে অভ্যান্তরীণদ্বন্দসহ নানা ইস্যুতে এক সময়ের ত্যাগী নেতারা দল ছাড়তে শুরু করে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলা বিএনপি এবং সহযোগী সংগঠনের সুত্র গুলো জানায়, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি সাংগঠনিক দিক থেকে দাকোপে বরাবরই খুব একটা শক্তিশালী অবস্থানে ছিলনা। বর্তমান খুলনা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাবেক ছাত্রনেতা আলহাজ্ব আমির এজাজ খান দাকোপ বটিয়াঘাটা আসনে সংসদ সদস্য প্রার্থী হওয়ার পর থেকে ধীরে ধীরে দাকোপে বিএনপির সাংগঠনিক শক্তি বাড়তে থাকে। একই সাথে বাড়তে থাকে দলটির ভোট ব্যাংক। উপজেলার ৯ টি ইউনিয়নের মধ্যে মুসলিম অধ্যুষিত সুতারখালী ও পানখালী ইউনিয়ন ক্রমেই বিএনপির ঘাটিতে পরিনত হয়। উপজেলার বাজুয়া এবং পানখালী ইউনিয়নে দলীয় চেয়ারম্যান, বিভিন্ন ইউনিয়নে ইউপি সদস্য চালনা পৌরসভায় একাধীক কাউন্সিলরসহ বিএনপি সমর্থিত বশ কিছু জনপ্রতিনিধি নির্বাচীত হয়। মুল দলের পাশাপাশি অঙ্গ সহযোগী সংগঠন যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবকদল, শ্রমিকদল, মহিলাদলের সাংগঠনিক শক্তি বাড়তে থাকতে। এরই মাঝে দেখা দেয় অভ্যান্তরীণদ্বন্দ। দলীয় প্রার্থী আমির এজাজ খান এবং জেলা বিএনপির আর্শিবাদপুষ্ট উপজেলা পর্যায়ের সিনিয়র কয়েকজন নেতা একক কর্ত্তৃত্ব প্রতিষ্ঠায় মনোযোগী হলে দলটিতে অভ্যান্তরীণদ্বন্দ চরম থাকার ধারন করে। এ ঘটনায় রাজনীতিতে কোনঠাসা হয়ে তৎকালীন উপজেলা বিএনপির সভাপতি অপূর্ব কুমার রায়ের নেতৃত্বে একটি গ্রুপ ধীরে ধীরে নিষ্কিৃয় হয়ে পড়ে। পরবর্তীতে যাদের অনেকেই দলত্যাগ করে আবার কেউ কেউ একেবারেই রাজনীতির মাঠ থেকে হারিয়ে যায়। এরপর মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর দলের উপজেলা পর্যায়ের দায়িত্বশীলদের গাঁ বাচানো রাজনীতিতে হামলা মামলার শিকার হয়ে দলের ত্যাগীনেতাদের অনেকেই বিএনপির রাজনীতি থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়। বর্তমান সরকারের আমলে বছরের পর বছর দলটির উপজেলা কার্যত তালাবদ্ধ অবস্থায় থাকে। উপজেলা বিএনপির বর্তমান নেতৃত্বের সাথে মত বিরোধের কারনে ধীরে ধীরে দলের বাইরে চলে যাওয়াদের মধ্যে অন্যতম উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি অপূর্ব কুমার রায়, সাবেক সহসভাপতি জনপ্রিয় সাবেক চেয়ারম্যান দেব প্রসাদ গাইন, উপজেলানেতা ও পানখালী ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান শিকদার সোহরাব হোসেন, উপজেলার সাবেক প্রচার সম্পাদক বর্ষিয়ান নেতা সাইদুর রহমান সউদ, উপজেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক এস এম রমজান আলী, লাউডোপ ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি শ্যামল সরকার, সাধারণ সম্পাদক কানু শেখ, উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শামিম হাসানসহ অনেকেই দলের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন। এ ছাড়া সম্প্রতি ঘোষনা দিয়ে দলের সাথে সকল সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন চালনা পৌরসভা বিএনপির সভাপতি গত পৌরসভা নির্বাচনে ধানের শীষের মেয়র প্রার্থী শেখ আব্দুল মান্নান, পৌরসভার সিনিয়র সহসভাপতি বর্তমান কাউন্সিলর রুস্তুম আলী খান, পৌরসভার সাংগঠনিক সম্পাদক কাউন্সিলর আইয়ুব আলী কাজী, দাকোপ উপজেলা বিএনপির প্রচার সম্পাদক স ম তৌহিদ হাসান, পৌরসভা স্বেচ্ছাসেবক দলেল সভাপতি আবু তাহের শেখ, ৪ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আলেক শেখ, ওয়ার্ড সাধারণ সম্পাদক আরিফ বিশ্বাস, সাংগঠনিক সম্পাদক জাকির শেখ আনুষ্ঠানিকভাবে দল ত্যাগ করেছেন। একযোগে এই গন পদত্যাগের ঘটনায় গোটা দাকোপে বিএনপির রাজনীতিতে বড় ধরনের প্রভাব পড়েছে। তাদের সকলেই ব্যক্তিগত সমস্যা এবং শাররীক অসুস্থতার কথা উল্লেখ করলেও সর্ব সাধারনের কাছে সেটি আসলেই বিশ্বাসযোগ্য হয়নি। এর মাঝে ভিন্ন কিছু আছে এমনটাই মনে করছেন বিএনপি ঘরানার মানুষ।