দাকোপে রেকর্ড ভোটের ব্যবধানে ফের বিজয়ী “মাইচ্চা”

প্রকাশঃ ২০২১-০৯-৩০ - ১৮:১৩

আজগর হোসেন ছাব্বির : সুন্দরবনের কোল ঘেষা সুতারখালী ইউনিয়নে রেকর্ড সংখ্যাক ভোটের ব্যবধানে ফের বিজয়ী হয়েছেন “মাইচ্চা” খ্যাত একটানা ১৮ বছরের জনপ্রতিনিধি মাসুম আলী ফকির। ধানের শীষের ঘাটিতে নৌকার জয়যাত্রা ধরে রেখে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন সরলমনা ইউনিয়ন বাসীর মাইচ্চা মাসুম আলী ফকির।
দাকোপের সর্ববৃহৎ আয়তন ও জনসংখ্যার সুতারখালী ইউনিয়ন। আইলার মত ভয়াবহ দূর্যোগ চারপাশে নদী বেষ্টিত ইউনিয়নবাসীর নিত্যুদিনের সঙ্গি। গত ২০ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে উপজেলার মধ্যে রেকর্ড সংখ্যাক ভোটের ব্যবধানে নৌকা প্রতিক নিয়ে দ্বিতীয় বারের মত বিজয়ী হয়েছেন মাসুম আলী ফকির। নলিয়ানের ঐতিহ্যবাহী সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান মাসুম আলী ফকির ব্যক্তি জীবনে ৫ ভাই ২ বোনের মধ্যে দ্বিতীয়। নিজে ৪ পুত্র এবং ২ কন্যা সন্তানের জনক। ভাইদের মধ্যে তিনি মেঝ হওয়ায় সকলে সোহাগ করে তাকে “মাইচ্চা” বলে ডাকে। সেই মাইচ্চা ডাকটি এখন গোটা ইউনিয়নের ছোট বড় সকলের মুখে মুখে। তার ৩ ভাই এবং ২ পুত্র স্বপরিবারে ফিনল্যান্ড প্রবাসী। অপর ১ পুত্র পরিবারসহ ইটালী প্রবাসী। তিনি ১৯৮৪ সাল থেকে একটানা ১০ বছর জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে গড়া সংগঠন কৃষকলীগের ইউনিয়ন সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৪ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত তিনি ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। এরপর থেকে অদ্যবধী সুতারখালী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি হিসাবে সফলতার সাথে দায়িত্ব পালন করে চলেছেন। ২০০৩ সালে সর্ব প্রথম তিনি নলিয়ান ৫ নং ওয়ার্ড থেকে মাছ মার্কা প্রতিক নিয়ে ইউপি সদস্য নির্বাচীত হন। ২০১৫ সালে নৌকা প্রতিক নিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচীত হওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি অত্যান্ত সুনামের সাথে ইউপি সদস্য হিসাবে একটানা দায়িত্ব পালন করেছেন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দিকে ৩০৫৪ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে তিনি তখন চেয়ারম্যান নির্বাচীত হন। দাকোপ উপজেলার মধ্যে বিএনপির ঘাটি হিসাবে পরিচিত সুতারখালী ইউনিয়নে নৌকার কান্ডারী হিসাবে পাওয়া ওই জয়যাত্রাকে পুঁজি করে তিনি দল মতের উর্দ্ধে থেকে জনতার আস্থা অর্জনে সচেষ্ট হন। তারই প্রতিদান হিসাবে এবারের নির্বাচনী চ্যালেঞ্জকে তিনি টপকে গেছেন অনায়াসে। এবার নিজ দলের বিদ্রোহীসহ তার প্রতিদ্বন্দি ছিলেন অপর ৫ প্রার্থী। যেখানে তিনি নৌকা প্রতিকে পেয়েছেন ৮১৯০ ভোট। আর নিকটতম প্রতিদ্বন্দি অটোরিক্সা প্রতিকে পেয়েছেন ২৪৪৯ ভোট। অর্থাৎ এবার তিনি উপজেলার মধ্যে রেকর্ড ৫৭৪১ ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হওয়ার গৌরব অর্জন করেছেন। সরেজমিন ভোটারদের অভিমত, ব্যক্তি হিসাবে তিনি সরলমনা অসাধারন। নিরহংকার এই মানুষটি ভিন্নমতের প্রতি শ্রদ্ধা দেখানোর পাশাপাশি কখন প্রতিহিংসা পরায়নতা দেখাননি। জনসমর্থনের ব্যারোমিটার বেড়ে যাওয়ার কারন হিসাবে তারা মনে করেন সকলের প্রিয় “মাইচ্চাকে” মানুষ যখন যে অবস্থায় ফোন করেছেন তিনি সর্বদা সাড়া দিয়েছেন। যে কোন বিষয় নিয়ে তার কাছে স্বাক্ষর চাইলে তিনি ভোটারদের প্রতি অন্ধ বিশ্বাসে নিঃসংকোচে সেটি করে দিয়েছেন। নেই কোন অবৈধ অর্থের মোহ, বরং দু’হাতে পকেটের টাকা দিয়ে সাধ্যমত মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করেছেন। এ ছাড়াও আছে তার অসংখ্য গুন। প্রিয় “মাইচ্চার” হাত ধরে অবহেলিত সুতারখালী ইউনিয়নটি আগামীতে আধুনিক মডেল ইউনিয়নে পরিনত হবে এমন প্রত্যাশা ইউনিয়নবাসীর।