আজগর হোসেন ছাব্বির ,দাকোপ : দাকোপের পল্লীতে গভীর রাতে একদল সন্ত্রাসী পরিকল্পিতভাবে বাড়ীতে বর্বরোচীত হামলা চালিয়ে নারী শিশুকে বেধড়ক মারপিট করেছে। হামলা কারিরা ঘরবাড়ী ভাংচুর ও লুটপাটসহ বাড়ীটি নিচিহ্ন করে দিয়েছে। দাকোপ থানা পুলিশ তদন্তে ঘটনাস্থলে অবস্থান করছিল।
ভুক্তভোগী পরিবার ও এলাকাবাসী জানায় গত সোমবার গভীর রাতে মুখোশ পরিহিত শতাধীক সন্ত্রাসী বাহিনী লাটিসোটা নিয়ে উপজেলার কালীনগর গ্রামের হাফিজুর সরদারের বাড়ীতে হামলা চালায়। জানা যায় জমিজমা সংক্রান্ত পূর্ব বিরোধের জের হিসেবে পরিকল্পিতভাবে এই হামলা চালানো হয়। এ সময় হামলাকারীরা হাফিজুরের স্ত্রী নাজমা বেগমের হাত পা বেধে পিটিয়ে আহত করে। ৬ষ্ট শ্রেনীর ছাত্র নাজমুল মাকে বাঁচাতে গেলে সন্ত্রাসীরা তাকে ধরে মাটিতে আছাড় মারে। সন্ত্রাসীরা ঘরের আসবাবপত্র মালামাল গবাদিপশু হাসমুরগি ধানসহ লক্ষাধীক টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। তারা গাছপালা কেটে সাবাড় করে এবং ঘর ভেঙে বসতভিটের চিহ্ন মুছে ফেলার চেষ্টা করে। ঘটনার সময় হাফিজুর খুলনা শহরে অবস্থান করছিল বলে জানা গেছে। সন্ত্রাসীরা ২ শিশু সন্তানসহ নাজমা বেগমকে তুলে নেওয়ার চেষ্টা করলে প্রতিবেশী তফসার সানা সন্ত্রাসীদেরকে মিনতি করে তাদেরকে নিজের বাড়ীতে নিয়ে হেফাজাতে রাখে। সরেজমিন ঘটনাস্থলে গিয়ে বাড়ীটিতে সন্ত্রাসীদের তান্ডবলীলার চিহ্ন দেখা যায়। জানা যায় বইপত্র ছিড়ে ফেলায় আহত শিশু নাজমুল মঙ্গলবারের বাৎসরিক পরীক্ষায় অংশ নিতে পারিনি। সংগঠিত সন্ত্রাসী বাহিনীর এমন জঘন্য হামলার ঘটনায় এলাকাবাসী ভয়ে মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেনা, এমনকি ঘটনার শিকার পরিবারের লোকজন ও আতংকের মধ্যে আছে। বর্তমানে বিরোধীয় জমির একটি অংশে অপর পক্ষের লোকজনকে ঘর নির্মান করতে দেখা গেছে। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান পঞ্চানন মন্ডল গভীর রাতে হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেন, ঘটনার সময় আমি এলাকার বাইরে ছিলাম, ভোররাতে হাফিজুরের ভাই ফোন করে তার ভাবী ও ২ শিশুকে পাওয়া যাচ্ছেনা বলে আমাকে জানায়। পরবর্তীতে আমি ইউপি সদস্য স্বপন বাছাড় ও গ্রাম পুলিশ পাঠিয়ে তাদেরকে উর্দ্ধার করে ইউপি কার্যালয়ে আনার ব্যবস্থা করি। তবে হাফিজুরকে আইন অমান্যকারী আখ্যাদিয়ে তিনি বলেন, যে জমিতে সে বসত করে তার বৈধ কাগজ না দেখিয়ে সে সব সময় ইউনিয়ন পরিষদকে অবজ্ঞা করেছে। কামারখোলা ইউনিয় পরিষদ কার্যালয়ে চৌকির উপর শুয়ে থাকা আহত গৃহবধু নাজমা বেগম জানায়, ওরা আমাদেরকে হয়ত মেরে ফেলতো। আমি তাদের পায়ে ধরে মিনতি করি, কিন্তু তারা বিশ্রী ভাষায় গালি দিয়ে আমাকে ইচ্ছেমত পিটায়। এক প্রশ্নের উত্তরে সে জানায় মুখোশ পরা থাকায় সকলকে চিনতে পারেনি, তবে একই এলাকার প্রনব, স্বপন ঢালী, আনিচ, সমারেশ, নলিতকে আমি দেখেছি। জানা যায় হাফিজুর সকালে খবর পেয়ে দাকোপ থানায় আসে, কিন্তু ফের হামলার আশংকায় এলাকায় যেতে সাহস পাচ্ছেনা। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত হাফিজুরের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে দাকোপ থানার এস আই সাকিব তদন্তের জন্য ঘটনাস্থলে অবস্থান করছিল।