বিজ্ঞপ্তি : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও খুলনা অঞ্চল সহকারী পরিচালক মাওলানা আবুল কালাম আজাদ বলেছেন, আওয়ামীলীগ এদেশে রাজনীতি করতে পারবে কি না সেটি সিদ্ধান্ত নেবে এদেশের জনগন। তবে খুনি হাসিনাকে দেশে আসতে হলে ইন্টারপোলের মাধ্যমে বিচারের মুখোমুখি হয়ে আসতে হবে। গণহত্যার দায়ে তাকে ফাঁসি দিতে হবে। তিনি বলেন, ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর আওয়ামীলীগ লগি-বৈঠা দিয়ে শাপের মতো পিটিয়ে যেভাবে মানুষ হত্যা করেছিল তার নির্দেশদাতা দলটির প্রধান শেখ হাসিনা। তাদের অপরাধের কারনেই ৫ আগষ্ট শেখ হাসিনাকে পালিয়ে যেতে হয়। একজন রাষ্ট্রপ্রধানকে এভাবে পালিয়ে যাওয়ার নজির বিশে^ দ্বিতীয়টি নেই। মাওলানা আবুল কালাম আজাদ জামায়াতের প্রতিটি নেতাকর্মীকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়ার আহবান জানিয়ে বলেন, জামায়াত আগামীতে তিনশ’ আসনেই প্রার্থী দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। সুতরাং সকলকে সেভাবেই প্রস্তুতি নিতে হবে।
তিনি সোমবার বিকেলে খুলনা মহানগর জামায়াত আয়োজিত রক্তাক্ত ২৮ অক্টোবর পল্টন দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও খুলনা মহানগরী আমীর অধ্যাপক মাহফুজুর রহমানের সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারি এডভোকেট শেখ জাহাঙ্গীর হুসাইন হেলালের পরিচালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও খুলনা অঞ্চল টিম সদস্য, সাবেক কাউন্সিলর মাষ্টার শফিকুল আলম এবং কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও খুলনা জেলা আমীর মাওলানা মুহা. এমরান হুসাইন।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, খুলনা মহানগরী নায়েবে আমীর অধ্যাপক নজিবুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি এডভোকেট মুহাম্মদ শাহ আলম, প্রিন্সিপাল শেখ জাহাঙ্গীর আলম, ইসলামী ছাত্রশিবির খুলনা মহানগরী সভাপতি মোঃ আরাফাত হোসেন মিলন, বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন খুলনা মহানগরী সভাপতি মোঃ আজিজুল ইসলাম ফারাজী। পবিত্র কুরআন তেলাওয়াত করেন মাওলানা আব্দুল করিম। এসময় টাইফুন শিল্পীগোষ্ঠীর শিল্পীরা শহীদী গান পরিবেশন করেন। দোয়া পরিচালনা করেন, মহানগরী কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক মাওলানা আ. ন. ম. আব্দুল কুদ্দুস।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মাওলানা আবুল কালাম আজাদ আরও বলেন, ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর ঢাকার পল্টনে ১২ঘন্টার যুদ্ধ হয়েছিল। আওয়ামীলীগের হায়েনাদের বিরুদ্ধে সেদিন জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা মানব প্রাচীর তৈরি করেছিলেন। সেদিন চার দলীয় জোটের ৫৪জনকে শহীদ করা হয় এবং সহ¯্রাধিক আহত হন।
জামায়াতের নেতারা পালান না এমনটি উল্লেখ করে মাওলানা আজাদ বলেন, আওয়ামীলীগ সভানেত্রী ৫ আগষ্ট পালিয়ে গেলেও পল্টন হত্যাকান্ডের সময় জামায়াতের তৎকালীন আমীর মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী ও সেক্রেটারী জেনারেল আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদ মঞ্চ ছাড়েননি।
জামায়াতের বিরুদ্ধে অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আওয়ামী ফ্যাসিবাদের ১৫ বছরের শাসনামলে জামায়াতকে নিয়ে অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছে। শীর্ষ পাঁচজনকে ফাঁসির নামে হত্যা করা হয়েছে। শেষ পর্যন্ত জামায়াতকে নিষিদ্ধ করতে গিয়ে তারাই নিষিদ্ধ হয়েছে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মাষ্টার শফিকুল আলম বলেন, খুনি হাসিনার নির্দেশে সেদিন পল্টন হত্যাকান্ড হয়েছিল। তাদের সে খুনের বিচার এতোদিন হয়নি। কিন্তু ৫ আগষ্টের পর সে হত্যাকান্ডের বিচারের দ্বার উম্মোচন হয়েছে। তিনি বলেন, বার বার প্রমানিত হয়েছে যে, আওয়ামীলীগ একটি সন্ত্রাসী দল, চাঁদাবাজের দল, দখলদার দল, গণতন্ত্র হত্যাকারী দল। সুতরাং বাংলাদেশের জনগন আর এদেশে আওয়ামীলীগকে স্থান দেবে না।
মাওলানা এমরান হুসাইন বলেন, জামায়াতের জাতীয় নেতাদের হত্যার জন্যই আওয়ামীলীগ ২৮ অক্টোবর লগি-বৈঠা নিয়ে পল্টনে নেমেছিল। এর আগেও ৫০এর দশকে, ষাটের দশকে, ৭০এর দশকে এমনকি স্বাধীনতার পর ও বিগত ১৫ বছরে শেখ মুজিব ও শেখ হাসিনা একাধিকবার প্রমাণ করেছে যে, তারা খুনী, সন্ত্রাসী, অস্ত্রধারী দল।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান বলেন, শুধু ছাত্রলীগকে নয়, গণহত্যাকারী দল হিসেবে আওয়ামীলীগকেও নিষিদ্ধ করতে হবে। তিনি ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর থেকে ২০২৪ এর ৫ আগষ্ট পর্যন্ত ফ্যাসিবাদের হাতে যেসব হত্যাকান্ড হয়েছে তাদের সকলের আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং আহতদের সুস্থতা কামনা করেন।