দেশে প্রতি বছর কুষ্ঠরোগের কারণে ৪শ’ মানুষ প্রতিবন্ধী বা বিকলঙ্গ হচ্ছে

প্রকাশঃ ২০১৯-০১-২৭ - ২০:৫৩

কামরুল হোসেন মনি : অনেকেই জানেন না কুষ্ঠরোগ কি? অনেক মানুষ নিজের অজান্তেই এই জীবানু বহন করে বয়ে বেড়াচ্ছেন। চিকিৎসায় বিলম্ব হওয়ার কারণে বাংলাদেশে শতকরা ১০ ভাগ কুষ্ঠরোগের কারণে প্রতি বছর ৪শ’ মানুষ প্রতিবন্ধী বা বিকলঙ্গ হচ্ছে। রোববার খুলনায় বিশ্ব কুষ্ঠ দিবস উদযাপনে আলোচনা সভায় বিশেষজ্ঞরা এই সব তথ্য তুলে ধরেন। দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য ‘বৈষম্য, অপবাদ ও কুসংস্কার, কুষ্ঠ রোগের প্রতি না থাকুক আর’।
এর আগে  সকাল সাড়ে ৮টায় দিবসটি উপলক্ষে ডেপুটি সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ আতিয়ার রহমান নেতৃত্বে খুলনা জেনারেল হাসপাতাল থেকে একটি বর্ণাঢ্য র‌্যালী নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিন করে স্কুল হেলথ ক্লিনিকে এসে শেষ হয়। র‌্যালীতে নার্স, বিভিন্ন এনজিও প্রতিনিধি ও বিভিন্ন পেশাজীবিরা অংশ গ্রহন করেন। র‌্যালী শেষে স্কুল হেলথ ক্লিনিকে দিবসটি উপলক্ষে সচেতনতামুলক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সিএসএস রেভারেন্ড আব্দুল ওয়াদুদ মেমোরিয়াল হাসপাতালের ব্যবস্থাপক মোঃ মহসিন উদ্দিনের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন ডেপুটি সিভিল সার্জন ডাঃ আতিয়ার রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন সাবেক টিবি লেপ্রোসি কন্ট্রোল বিভাগীয় প্রধান ডাঃ আনোয়ারুল আজাদ, খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেডিকেল অফিসার ডাঃ স্বপন কুমার হালদার, লেপ্রোসি মিশনের প্রতিনিধি মোঃ খালেকুজ্জামান। এছাড়া খুলনা কুষ্ঠ ও যক্ষা নিয়ন্ত্রণ প্রকল্প খুলনা শাখা পিমে সিস্টারস প্রতিষ্ঠানের কো- অর্ডিনেটর মেঃ আক্তার আলী ও সিনিয়র টিবি ল্যাপ্রসি কন্ট্রোল অফিসার এস কে ফারুক সভায় বক্তব্য রাখেন।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, আজকের দিবসটি নিয়ে ৬৬তম কুষ্ঠ দিবস উদযাপিত হলো । কুষ্ঠরোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা চিকিৎসার বিলম্ব হওয়ার কারণে প্রতিবন্ধি বা বিকলঙ্গ হওয়ার সম্ভবনা বেশি থাকে। শরীরের চামড়ার উপর যে কোন জায়গায় অনুভুতিহীন হালকা বাদামী রং এর ফ্যাকাশে দঠস কুষ্ঠ রোগের প্রাথমিক লক্ষণ, কুষ্ঠরোগের দাগে কখোনো চুলকায় না, এছাড়াও কানের লতি মোটা হওয়া, শরীরের প্রান্তিক স্নায়ুগুলো মোটা হয়ে যাওয়া ইত্যাদি কুষ্ঠ রোগেল লক্ষণ।
সিএসএস রেভারেন্ড আব্দুল ওয়াদুদ মেমোরিয়াল হাসপাতালের ব্যবস্থাপক মোঃ মহসিন উদ্দিন বলেন, সিএসএস এর প্রতিনিধিদের মাধ্যমে ২০১৮ সালে বাগেরহাট ও সাতক্ষীরায় মাঠ পর্যায়ে কুষ্ঠ এর উপর কার্যক্রম পরিচালনা করেন। এ সময় বাগেরহাটে ও সাতক্ষীরায় ১৫ জনকে কষ্টরোগী হিসেবে সনাক্ত করেন। এর মধ্যে সাতক্ষীরায় রয়েছেন ৯ জন।
সভায় বক্তারা লেপ্রোসি বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি এবং রোগীদের চিকিৎসার প্রতি যত্নবান হওয়ার পরামর্শ প্রদান করেন। সভায় দুইশতাধিকসরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি অংশ গ্রহন করেন। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন সিএসএস প্রতিনিধি মোঃ সেলিম শেখ।
উল্লেখ্য, জাতীয় কুষ্ঠ নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের আওতায় খুলনা সিটি কর্পোরেশনের স্বাস্থ্য বিভাগ ও খুলনা সিভিল সার্জন অফিসের সার্বিক সহযোগিতায় পিমে সিস্টার্স ১৯৮৬ সাল হতে খুলনা মহানগরীর কয়েকটি নির্ধারিত ক্লিনিকে কুষ্ঠরোগের চিকিৎসা সেবা বিনামুল্য প্রদান করে আসছে এবং বড় বয়রা দাসপাড়ায় ৩৩ শয্য বিশিষ্ট হাসপাতালে কুষ্ঠ ও যক্ষা রোগীদের বিনামুল্য ভর্তি রেখে চিকিৎসা সেবা প্রদান করে আসছে।