তাপস কুমার বিশ্বাস, নওয়াপাড়া থেকে ফিরে: যশোরের শিল্প শহর নওয়াপাড়া জুট মিলস লিমিটেড এর ১টি পাট গুদামে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে ২শ’ মেট্রিক টন পাট ভষ্মিভূত হয়। “ওভারহিট” জনিত কারণে সৃষ্ট এ অগ্নিকান্ডের ক্ষতির পরিমান দেড় কোটি টাকা বলে কর্তৃপক্ষের ধারনা। ফায়ার সার্ভিসের ৫টি ইউনিট ১২ ঘন্টার প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। বুধবার সন্ধ্যায় এ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে।
মিলের ভারপ্রাপ্ত প্রকল্প প্রধান মোঃ বায়োজিদ হোসেন ইউনিক নিউজকে বলেন, বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৫টায় নওয়াপাড়া জুট মিলস্ লিমিটেড এর ৯নম্বর গুদামে হঠাৎ করে আগুন লাগে। মুহুর্তে সেটি ব্যাপক আকার ধারণ করে। পাটের “ওভারহিট” জনিত কারণে এ অগ্নিকান্ডের সৃষ্টি বলে ধারণা করা হচ্ছে। দুটি পাটের গুদামে রক্ষিত প্রায় এক লাখ মন পাট মজুদ করা ছিল। হঠাৎ করে ওই দুটি পাটের গুদামে আগুন লেগে যায়। মিলের সিকিউরিটি পরিদর্শক মাহাবুব হাসান বলেন, সন্ধ্যায় হঠাৎ করে মিলের ৯নং গুদামে ধোয়ার কুন্ডলী দেখে তাৎক্ষণিকভাবে মিলের অগ্নিনির্বাপক সরঞ্জামাদি ও হোজ পাইপ দিয়ে পানি মেরে আগুন নিয়ন্ত্রনের চেষ্টা করা হয়। সাথে সাথে নওয়াপাড়া ফায়ার সার্ভিসে খবর দিলে অল্প সময়ের মধ্যে তারাও আগুন নিয়ন্ত্রনের কাজে লেগে যায়। তবে অগ্নিকান্ড ব্যাপক আকার ধারণ করলে ফায়ার সার্ভিসের যশোর ও খুলনা, ঝিকরগাছার ৫টি ইউনিট এসে আগুন নিয়ন্ত্রনে আনার চেষ্টা করে। রাত ১১টা নাগাদ আগুন প্রাথমিক নিয়ন্ত্রন এবং বৃহস্পতিবার ভোর ৫টায় পুরোপুরি নিয়ন্ত্রনে আসে। ততক্ষণ গুদামে রক্ষিত ২শ’ মেট্রিক টন পাট ভষ্মিভূত হয়। মিলের জুট ইনচার্জ বিশ্বজিৎ ভৌমিক ইউনিক নিউজকে জানান, ঐ গুদামে ২শ’ মেট্রিক টন কাঁচা পাট সংরক্ষিত ছিল। গত দু’মাস ধরে সংরক্ষিত এ পাট গুদামজাত পর্যন্ত গড় মন প্রতি খরচ পড়ে ২ হাজার ২ শ’ ৫০টাকা। সেই হিসাবে ঐ পাটের মূল্য ১ কোটি সাড়ে ১২ লাখ টাকা। এ ছাড়া মিলের ওয়েষ্টেজ সুতাও পুড়ে যায়। গুদাম ভবনটিও ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়। সব কিছু মিলিয়ে ক্ষতির পরিমান দেড় কোটি টাকা বলে তার ধারনা। ফায়ার সার্ভিস যশোরের উপ-পরিচালক আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, বিভিন্ন স্থানের ৫টি ইউনিট এসে আগুন নিয়ন্ত্রনে আনা হয়। তবে আগুনের সূত্রপাত ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমান এখন নিরুপন সম্ভব হয়নি।
অপরদিকে গোডাউনের সংরক্ষিত মালামাল কর্ণফুলি ইন্সুরেন্স কোম্পানীর কর্তৃক বীমাকৃত। ঐ কোম্পানীর পক্ষ থেকে জনতা সার্ভেয়ার লিমিটেড এর মাধ্যমে গতকাল ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি নিরুপনের জন্য পাঠানো হয়। সিনিয়র সার্ভেয়ার নূর নবী ইউনিক নিউজকে বলেন, মিল কর্তৃপক্ষের দেয়া তথ্য সরেজমিনে এসে মিলিয়ে দেখা হচ্ছে। পরবর্তীতে মালামালের বাজারদর নিরুপন করা হবে। মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ রহিম এ দুর্ঘটনার খবর শুনে ঘটনাস্থলে আসেননি। তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মিলের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাবৃন্দ আলোচনার মাধ্যমে অগ্নিকান্ডে ক্ষয়ক্ষতি নিরুপন ও তদন্ত কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া চলছিল।