নড়াইলে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার হাত কুপিয়ে বিচ্ছিন্ন !

প্রকাশঃ ২০২৪-০৯-০২ - ১৬:৩৭

নড়াইল প্রতিনিধিঃ নড়াইলের কালিয়ায় এলাকায় স্থানীয় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আতাউর রহমান আফতাব (৫০) নামের এক স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাকে কুপিয়ে হাত বিচ্ছিন্ন করেছে যুবলীগ নেতার অনুসারীরা।

গত রবিবার (১ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় কালিয়া উপজেলার কাঞ্চনপুর পশ্চিম পাড়া জাহাঙ্গীর মুন্সির বাড়ির সামনে এই ঘটনা ঘটে। আহত আতাউর রহমান আফতাব একই গ্রামের মৃত আসাদ মোল্লার ছেলে ও কালিয়া উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।

এলাকাবাসী ও আহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, কালিয়া উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ও বাবরা-হাচলা ইউনিয়নের বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেন পিকুলের সাথে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আতাউর রহমান আফতাবের সঙ্গে এলাকার আধিপত্য বিস্তার নিয়ে অনেকদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দুজনই চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।

 

আতাউর রহমান পরাজিত হওয়ার পর থেকে দ্বন্দ্ব আরও চরম আকার ধারণ করে। এরই জেরে রোববার (১ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আতাউর রহমান আফতাব বাড়ি থেকে বের হয়ে কাঞ্চনপুর পশ্চিম পাড়া জাহাঙ্গীর মুন্সির বাড়ির সামনে পৌঁছালে আগে থেকে ওৎ পেতে থাকা চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেন পিকুল সমর্থিত লোকজন এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর আহত করেন বলে অভিযোগ আহতের স্বজনদের। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে নড়াইল সদর হাসপাতালে নিয়ে যান।

নড়াইল সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মেহেদী হাসান বলেন, আহত আতাউর রহমানকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পঙ্গু হাসপাতলে নেয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। কোপে তার বাম হাত ঝুলে আছে, ডান হাত, পেটসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে উপর্যুপরি কোপের আঘাত রয়েছে।

স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আফতাবের সঙ্গে থাকা রিকাঈল মোল্লা জানান, আফতাবের ডান হাতের হাড় আঘাতে ক্ষতবিক্ষত হওয়ায় মোট চারটি অপারেশন করা হয়েছে। আফতাব এই মুহূর্তে চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছে।

ডাক্তাররা বলেছেন এখনো সে সংকামুক্ত না।

তিনি আরো জানান, গত মাসের ৫ তারিখ শেখ হাসিনা দেশ থেকে পালিয়ে গেলে চেয়ারম্যানের লোকজন আফতাবের ভাই ফারুক মোল্লা ও জাহিদ মোল্লাকে কুপিয়ে মারাত্মক আহত করে। ঐ হামলায় ফারুক মোল্লা পঙ্গুত্ববরণ করে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

এছাড়াও গত ছয় মাস আগে ছয় বছরের একটি মেয়েকে চেয়ারম্যানের লোকজন মেরে পানিতে ফেলে হত্যা করে।

এ ঘটনায় আমরা প্রতিবাদ জানানোর কারণে চেয়ারম্যান ও তার লোকজন আমাদের উপরে ক্ষিপ্ত হয়ে তে হামলা করতে পরে বলে আমার ধারণা।

 

এ বিষয়ে অভিযুক্ত যুবলীগ নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেন পিকুলকের মুঠোফোনে জানান, এলাকার হাতিম তথ্য প্রস্তরকে কেন্দ্র করে কাঞ্চনপুর গ্রামের সিরাজ শেখের ছেলে শামীম শেখ ও তৌহিদ শেখদের সাথে আফতাবের কোন্দল চলে আসছিল। তবে গতকাল আফতাবের উপর হামলার বিষয়ে আমি কিছু জানি না। আমি অসুস্থ অবস্থায় একটি হাসপাতালে গত ১৫ দিন যাবত চিকিৎসাধীন আছি।

হামলার ঘটনায় আমাকে নিয়ে যা বলা হচ্ছে সেটি আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার।

 

কালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার শামীম উদ্দিন বলেন, এলাকার আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে দ্বন্দ্ব আগে থেকেই ছিল। কিছুদিন আগে দুই গ্রুপের মারামারির ঘটনায় থানায় মামলা ও হয়েছে। আজকের হামলার ঘটনায় অভিযোগের তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।